১২:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

মজহারুল ইসলাম বাদল, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
আমনের-বাম্পার-ফলনে-কৃষকের-মুখে -হাসি ঠাকুরগাঁওয়ের জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন কৃষকেরা এরই মধ্যে জেলার শতকরা দুই ভাগ জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার পাঁচ উপজেলায় কৃষকরা রোপা আমন ধান কাটা শুরু করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষক ও কৃষানীরা। তাদের মুখে এখন চওড়া হাসি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঠাকুরগাঁও উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে জেলায় আমন ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। ফলনও হয়েছে ভালো।
সদর উপজেলার ৩ নং আকচা ইউনিয়নের দঃ বঠিনা গ্রামসহ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, জমিতে কৃষকরা ধান কাটছেন। কেউ কেউ আবার জমির মধ্যেই ধান মাড়াই করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা যায় কৃষক ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
জমির মধ্যেই ধান মাড়াই করছেন কৃষকরা
সদর উপজেলার ৩ নং আকচা ইউনিয়নের দঃ বঠিনা গ্রামের আব্দুল হালিম বলেন, তিনি তার জমিতে পাজাম ও ধানিগোল্ড ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় ধান বিক্রি করে লাভ কিছুটা কম হবে।
অন্য দিকে আব্দুল বাছেদ বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ধান বেশি হয়েছে। তিনি আরও বলেন আমার গ্রামের বাড়ি জমিগুলো থেকে একটু দূরে ছিল শুধু কৃষিতে ভালো ফলনের লক্ষ্যে আমি গত ১৪ বছর আগে আবাদি জমির পাশে বসত বাড়ী করি। তিনি বলেন এতে করে আমি আবাদি জমিতে সময় বেশি দিতে পারি এবং ফলন বহুগুন বেশি পাচ্ছি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে ধানের দামও ভালো। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯০০ শত টাকা থেকে ১ হাজার টাকা দরে।
একই কথা জানিয়েছেন একই এলাকার কৃষক রায়হান হোসেন। তিনি বলেন, এখনো ধান কাটা পুরোপুরি শুরু হয়নি। তিনি বলেন, সপ্তাহখানেক পরে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। তিনি জানান, তিনি তার ৪ বিঘা জমিতে ব্রিধান-৮৭ জাতের ধান করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ১৬/১৮ মণ ধান পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই এক বিঘা জমির ধান কেটে এক হাজা টাকা মণ দরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
আমন ধানের ভালো ফলনের বিষয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত ও কৃষিতে বিশেষ মর্যাদা পাওয়া ( এআইপি) মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিশেষ করে টাংগন, বুড়ি বাঁধ এবং ভূল্লী সেচ প্রকল্পের অবদানে সদর উপজেলায় আশানুরূপ আমনের ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় কৃষকরা, ব্রিধান-৮৭, বিনা-৭, হাইব্রিড ধান ও স্থানীয় পাজাম, কালোজিরাসহ বিভিন্ন ধরনের ধানের চাষ করেছেন। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলার শতকরা দুই ভাগ জমিতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহ পর পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, চলতি বছর সদর উপজেলায় ৫০ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ৫০ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলাশ মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫.৩মেট্টিক টন ধান। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে প্রায় মোট ৫.৪ মেক্ট্রিক টন পার হেক্টর জমিতে।
ট্যাগস :