০২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
কোলের শিশুকে ফেলে মা লাপাত্তা, সেই মায়ের খোজে লালমনিরহাটে লামিয়া

প্রতিনিধির নাম
৪ বছরের কোলের শিশুকে ফেলে অন্যের হাত ধরে লাপাত্তা হন মমতাময়ী এক পাষাণ রমণী। সেই মাকে খুজতে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে এসে হাতের লাগালের মধ্যে মাকে পেয়েও দেখা হলনা নিষ্পাপ শিশু লামিয়া আক্তারের। তাই হতাশ হয়ে দুচোখেঅশ্রুর বন্যায় ভাসিয়ে ঢাকায় ফিরে যেতে হলো তাকে। এ যেন এক করুণ দৃশ্য। যা অন্যের হৃদয়ে সহ্য করা কঠিন হলেও মন কাঁদেনী সেই মমতাহীন নিষ্ঠুর মায়ের।
মায়ের সাথে দেখা হয়না প্রায় ২২ দিন থেকে লামিয়ার। মাকে দেখতে না পেয়ে কান্না যেন থামছে না শিশুটির। ঘুমের ঘরেই আম্মু আম্মু বলে ডাকছে শিশু লামিয়া। তার কান্না থামাতে না পেরে বাবা সোহেল মিয়া কোলে নিয়ে শিশুটির মাকে খুঁজতে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায়।
কিন্তু গত দুই দিনও শিশু লামিয়া তার মা বন্যা আক্তার বিথীর (২৩) খোঁজ না পেয়ে আবারও ঢাকায় ফিরে গেলেন।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় মায়ের খোঁজ না পেয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারীর বুড়িরবাজার এলাকা থেকে বাবার কোলে ঢাকা ফিরে গেল শিশু লামিয়া।
এর আগে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আসেন শিশু লামিয়ার বাবা সোহেল মিয়া ও তার দাদী রিনা বেগম।
ঢাকা থেকে শিশু লামিয়ার মা বিথীকে নিয়ে আসা যুবক মাসুম মিয়া (২৫) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ভাদাই ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের সজিব বাজার এলাকার আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, ঢাকা উত্তর শাহজাহানপুর এলাকায় বসবাস সোহেল মিয়া ও বন্যার আক্তার বিথী দম্পতি। গত ৬ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ে পর একটি ফুটফুটে শিশু কন্যার জন্ম দেন বিথী। এরপর সুখের সংসার ছিল তাদের। গত ১৬ জানুয়ারি চার বছরের শিশু লামিয়াকে ছেড়ে মা বন্যার আক্তার বিথী লালমনিরহাটের এক যুবক মাসুম মিয়ার হাত ধরে চলে আসেন লালমনিরহাটে আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের সজিব বাজার এলাকায়। এর মধ্যে কেটে যায় ২০ দিন। এর পর মায়ের খোঁজ পেয়ে ঢাকা থেকে বাবার কোলে চড়ে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আসেন শিশু লামিয়া। কিন্তু দুইদিন ধরে তার মায়ের খোঁজ না পেয়ে বাবার কোলে ঢাকায় ফিরল শিশুটি।
শিশুটি মা বন্যা আক্তার বিথী মাত্র আট বছরের শিশু থাকা অবস্থায় বাবা আব্দুল করিম ও মা মিনোয়ারা বেগম মারা যান। সে থেকেই বিথী ফুফু মিনা বেগমের কাছে বড় হন। পরে ফুফু মিনা বেগম তার বিয়ে দেন সোহেল নামে এক যুবকের সাথে।
বিথীর ফুফু রিনা বেগম বলেন, ভাতিজির সন্ধান পেয়ে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ছুটে এসেছি। এখানে এসে ছেলেটির ঠিকানা পেয়েছি ঢাকা গিয়ে আইনের আশ্রয় নিব। চার বছরের শিশুকে ছেড়ে কোন মা অন্যের হাত ধরে আসতে পারে না। তাকে অপহরন করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
সোহেল মিয়া জানান, আমার স্ত্রী বন্যা আক্তার বিথী ভুল করে লালমনিরহাটে চলে আসছে তাই আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে নিতে মেয়ে লামিয়াকে সাথে নিয়ে আসছি। শিশুটির মুখ দেখে আমার স্ত্রীকে আমি ফেরত চাই।
এবিষয়ে আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, বন্যা আক্তার বিথীর নিখোঁজ বিষয়ে ঢাকা শাহজাহানপুর থানায় জিডি রয়েছে, তাই মেয়েকে উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ট্যাগস :