১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

চট্টগ্রামে তিন ঘন্টার জন্য খুলে দেয়া হলো এলিভেটেডএক্সপ্রেসওয়ে

আবদুল মতিন চৌধুরী (রিপন) বিশেষ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম মহানগরে মাত্র তিন ঘন্টার জন্য যান চলাচল করতে খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়্রে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে সময় লেগেছে মাত্র ১৫ মিনিট। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর এটি খুলে দেয়া হলো। এদিকে পুরো কাজ শেষ হলেই শীঘ্রই পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। উদ্ধোধনের পরেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচল শুরু হয়। দ্রুততার সঙ্গে পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস আসতে পেরে খুশি সাধারণ মানুষজন। সকালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ উড়াল সড়ক খুলে দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংস্থার (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।
জানা গেছে, নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ধরা হয়। তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংস্থার (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ জানান, এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে চট্টগ্রামের মানুষ অনেক উপকার পাবে। বিমানবন্দর থেকে লালখানবাজারে মাত্র ২০ মিনিটে পৌঁছে যাবে। ওই এলাকার লোকজন যারা মেডিকেল বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেতে দুই-তিন ঘন্টা লাগত সেখানে খুব সহজেই অল্প সময়ে পৌঁছাতে পারবে। এ উড়াল সড়কের কারণে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে অনেক জেলার যোগাযোগ সহজ হবে। মাতারবাড়িতে যে গভীর সমুদ্র হচ্ছে সেটাও এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে উপকার পাবে। বাকি কাজ শেষ হলেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে।
সিডিএ কর্মকর্তারা জানান, পতেঙ্গা থেকে নগরীর লালখান বাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কিলোমিটার। ৫৪ ফুট প্রশস্ত ও চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৫টি র‌্যাম্প। এরমধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় থাকবে দুটি র‌্যাম্প। মূল ফ্লাইওভারের প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলো চলছে। উদ্বোধনের কিছু দিনের মধ্যেই টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত মূল অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামের যোগাযোগ নেটওয়ার্কিংয়ে এক্সপ্রেসওয়ে অন্য একটি মাত্রায় নিয়ে গেলো। বিগত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী গড়তে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়েছেন। এরমধ্যে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা এ প্রকল্পটি মূলত বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করে শেষ করতে চেয়েছি। যেন শহরের যানজটের ভোগান্তি এড়িয়ে শহর থেকে সহজে পতেঙ্গা প্রান্তে আসা যায় এবং পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যাওয়া যায়। আমরা এই এক্সপ্রেসওয়ের এ মাসের মধ্যেই খুলে দেবো। আর লালখান বাজার অংশের কাজ আগামী মাসে শেষ করে তারপর উন্মুক্ত করা হবে। আপাতত টাইগার পাস র‌্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :
আপডেট : ০৭:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩
১৭২ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামে তিন ঘন্টার জন্য খুলে দেয়া হলো এলিভেটেডএক্সপ্রেসওয়ে

আপডেট : ০৭:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

চট্টগ্রাম মহানগরে মাত্র তিন ঘন্টার জন্য যান চলাচল করতে খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নামে পরিচিত ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়্রে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে সময় লেগেছে মাত্র ১৫ মিনিট। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর এটি খুলে দেয়া হলো। এদিকে পুরো কাজ শেষ হলেই শীঘ্রই পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। উদ্ধোধনের পরেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচল শুরু হয়। দ্রুততার সঙ্গে পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস আসতে পেরে খুশি সাধারণ মানুষজন। সকালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ উড়াল সড়ক খুলে দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংস্থার (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।
জানা গেছে, নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ধরা হয়। তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংস্থার (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ জানান, এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে চট্টগ্রামের মানুষ অনেক উপকার পাবে। বিমানবন্দর থেকে লালখানবাজারে মাত্র ২০ মিনিটে পৌঁছে যাবে। ওই এলাকার লোকজন যারা মেডিকেল বা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেতে দুই-তিন ঘন্টা লাগত সেখানে খুব সহজেই অল্প সময়ে পৌঁছাতে পারবে। এ উড়াল সড়কের কারণে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে অনেক জেলার যোগাযোগ সহজ হবে। মাতারবাড়িতে যে গভীর সমুদ্র হচ্ছে সেটাও এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে উপকার পাবে। বাকি কাজ শেষ হলেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে।
সিডিএ কর্মকর্তারা জানান, পতেঙ্গা থেকে নগরীর লালখান বাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কিলোমিটার। ৫৪ ফুট প্রশস্ত ও চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৫টি র‌্যাম্প। এরমধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় থাকবে দুটি র‌্যাম্প। মূল ফ্লাইওভারের প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলো চলছে। উদ্বোধনের কিছু দিনের মধ্যেই টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত মূল অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামের যোগাযোগ নেটওয়ার্কিংয়ে এক্সপ্রেসওয়ে অন্য একটি মাত্রায় নিয়ে গেলো। বিগত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী গড়তে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়েছেন। এরমধ্যে মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা এ প্রকল্পটি মূলত বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের সঙ্গে সমন্বয় করে শেষ করতে চেয়েছি। যেন শহরের যানজটের ভোগান্তি এড়িয়ে শহর থেকে সহজে পতেঙ্গা প্রান্তে আসা যায় এবং পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যাওয়া যায়। আমরা এই এক্সপ্রেসওয়ের এ মাসের মধ্যেই খুলে দেবো। আর লালখান বাজার অংশের কাজ আগামী মাসে শেষ করে তারপর উন্মুক্ত করা হবে। আপাতত টাইগার পাস র‌্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।