০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

শিক্ষিকা স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন বিল্ডিংয়ে স্থান হয়নি শিক্ষিকা স্ত্রীর,তালাক দিতে মরিয়া পাষন্ড শিক্ষক স্বামী

প্রতিনিধির নাম
নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ স্বামীর হাতে তুলে
দেয়াসহ কঠোর শ্রমের পর নির্মানকৃত সুরম্য বিল্ডিংয়ে অবশেষে ঠাঁই
হলোনা কঠোর পরিশ্রমী শিক্ষিকা স্ত্রীর। একমাত্র বন্ধ্যাত্বের অজুহাতে প্রথম
স্ত্রীর অনুমতি না নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেন পাষন্ড স্বামী।
বিয়ের পর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তার স্বামী অমানুষিক নির্যাতন করে ওই
বিল্ডিং থেকে টেনে হিচরে বের করে দিয়েছে শিক্ষিকা প্রথম স্ত্রীকে।
বর্তমানে তার (অসহায় শিক্ষিকা) ঠাঁই হয়েছে বসবাসে সম্পূর্ণ
অনুপযোগী বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির
সহযোগিতায় সেই পরিত্যক্ত ঘর থেকেও বিতারিত করাসহ তালাক দেওয়ার জন্য
মরিয়া হয়ে উঠেছে শিক্ষক স্বামী দীপক অধিকারী।
প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তালাকের জন্য অসহায় শিক্ষিকাকে বিভিন্ন ধরনের
প্রলোভন দিয়ে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে মামলা দায়ের না করার জন্য প্রভাবশালীরা নানাধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের (প্রভাবশালী) অব্যাহত হুমকির মুখে মামলা দায়ের করতে সাহস পাচ্ছেন
না শিক্ষিকা মনিকা হালদার। স্বামীর অধিকার এবং নিজের উপার্জিত অর্থ ও
কঠোর শ্রমে নির্মিত বাড়িতে আশ্রয় না পেলে আত্মহত্যার হুমকি
দিয়েছেন অসহায় শিক্ষিকা মনিকা হালদার। হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সরবাড়ি গ্রামের।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে জোবারপাড় গ্রামের গৌরাঙ্গ হালদারের মেয়ে ও
নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মনিকা হালদার বলেন,
সরবাড়ি গ্রামের নারায়ন অধিকারীর ছেলে ও আস্কর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড
কলেজের (বিদ্যালয় শাখার) শরীরচর্চা শিক্ষক দীপক অধিকারীর সাথে ১৩ বছর
পূর্বে হিন্দুরিতী অনুযায়ী সামাজিকভাবে তার বিয়ে হয়।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে নিজের উপার্জিত অর্থ স্বামী দীপকের
হাতে তুলে দিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে ও নিজের (মনিকা) কঠোর পরিশ্রমী
স্বামীর বাড়িতে সুরম্য ভবন (বিল্ডিং) নির্মান করা হয়। মনিকা হালদার
অভিযোগ করেন, বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে কাটলেও বিগত
তিনবছর পূর্বে তার স্বামী স্কুলের পাশ্ববর্তী মামা বাড়িতে আশ্রিত এক
ডাকাতের (ডাকাতি করতে গিয়ে খুন হওয়া) মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে
পরেন। বিষয়টি তিনি (মনিকা) জেনে স্বামীকে বাঁধা দেওয়ার পর থেকেই তার
ওপর নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে একমাত্র বন্ধ্যাত্বের অজুহাত দিয়ে
অতিগোপনে রুমা নামের ওই নারীকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে
দীপক। এরপর থেকেই বাড়ি থেকে তাকে (মনিকা) তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দীপক ও
রুমা নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। নিজের বন্ধ্যাতের অসহায়ত্ব এবং
সম্মানের ভয়ে তিনি (মনিকা) নির্যাতন সহ্য করেও দীর্ঘদিন মুখ বুঝে
ছিলেন। সম্প্রতি দীপক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষিকা
মনিকা হালদারকে অমানুষিক নির্যাতনের পর বিল্ডিং থেকে টেনে হিচরে বের
করে দেওয়া হয়।
শিক্ষিকা মনিকা হালদার বলেন, বিষয়টি তিনি স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে
জানালে দীপক ক্ষিপ্ত হয়। কয়েকদিনের মধ্যে দীপক তাদের (প্রভাবশালী) ম্যানেজ
করে নেয়। এরপর ওই প্রভাবশালীরা উল্টো দীপকের পক্ষালম্বন করে তাকে (মনিকা)
তালাকের প্রস্তাবে রাজি করানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে ব্যর্থ হয়ে তারা
বর্তমানে এ ঘটনায় যেন আইনের আশ্রয় গ্রহণ না করি সেজন্য বিভিন্ন
ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে।
অসহায় শিক্ষিকা মনিকা হালদার তার স্বামীর অধিকার ফিরে পাওয়াসহ ওইসব
কতিপয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয়ের এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মানবাধিকার
সংগঠন ও নারী নেত্রীদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক দীপক
অধিকারী বলেন, বন্ধ্যাত্বের কারণে ভারতসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মনিকার
চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
তারপরেও কোন সুফল না পেয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমি দ্বিতীয় বিয়ে
করেছি।
দীপকের দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা অধিকারী বলেন, তার কাছে (মনিকা) অপরাধ করলে
আমি করেছি, সেজন্য আমার মৃত বাবাকে নিয়ে উস্কানিমূলক কথা বলা
উচিত নয়। কারণ যতোই খারাপ হোক না কেন, সে আমার জন্মদাতা বাবা। এ
ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ার বলেন, নির্যাতনের
ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ট্যাগস :
আপডেট : ০৪:২০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
২৬২ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষিকা স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন বিল্ডিংয়ে স্থান হয়নি শিক্ষিকা স্ত্রীর,তালাক দিতে মরিয়া পাষন্ড শিক্ষক স্বামী

আপডেট : ০৪:২০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ স্বামীর হাতে তুলে
দেয়াসহ কঠোর শ্রমের পর নির্মানকৃত সুরম্য বিল্ডিংয়ে অবশেষে ঠাঁই
হলোনা কঠোর পরিশ্রমী শিক্ষিকা স্ত্রীর। একমাত্র বন্ধ্যাত্বের অজুহাতে প্রথম
স্ত্রীর অনুমতি না নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেন পাষন্ড স্বামী।
বিয়ের পর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তার স্বামী অমানুষিক নির্যাতন করে ওই
বিল্ডিং থেকে টেনে হিচরে বের করে দিয়েছে শিক্ষিকা প্রথম স্ত্রীকে।
বর্তমানে তার (অসহায় শিক্ষিকা) ঠাঁই হয়েছে বসবাসে সম্পূর্ণ
অনুপযোগী বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির
সহযোগিতায় সেই পরিত্যক্ত ঘর থেকেও বিতারিত করাসহ তালাক দেওয়ার জন্য
মরিয়া হয়ে উঠেছে শিক্ষক স্বামী দীপক অধিকারী।
প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তালাকের জন্য অসহায় শিক্ষিকাকে বিভিন্ন ধরনের
প্রলোভন দিয়ে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে মামলা দায়ের না করার জন্য প্রভাবশালীরা নানাধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের (প্রভাবশালী) অব্যাহত হুমকির মুখে মামলা দায়ের করতে সাহস পাচ্ছেন
না শিক্ষিকা মনিকা হালদার। স্বামীর অধিকার এবং নিজের উপার্জিত অর্থ ও
কঠোর শ্রমে নির্মিত বাড়িতে আশ্রয় না পেলে আত্মহত্যার হুমকি
দিয়েছেন অসহায় শিক্ষিকা মনিকা হালদার। হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সরবাড়ি গ্রামের।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে জোবারপাড় গ্রামের গৌরাঙ্গ হালদারের মেয়ে ও
নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মনিকা হালদার বলেন,
সরবাড়ি গ্রামের নারায়ন অধিকারীর ছেলে ও আস্কর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড
কলেজের (বিদ্যালয় শাখার) শরীরচর্চা শিক্ষক দীপক অধিকারীর সাথে ১৩ বছর
পূর্বে হিন্দুরিতী অনুযায়ী সামাজিকভাবে তার বিয়ে হয়।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে নিজের উপার্জিত অর্থ স্বামী দীপকের
হাতে তুলে দিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে ও নিজের (মনিকা) কঠোর পরিশ্রমী
স্বামীর বাড়িতে সুরম্য ভবন (বিল্ডিং) নির্মান করা হয়। মনিকা হালদার
অভিযোগ করেন, বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে কাটলেও বিগত
তিনবছর পূর্বে তার স্বামী স্কুলের পাশ্ববর্তী মামা বাড়িতে আশ্রিত এক
ডাকাতের (ডাকাতি করতে গিয়ে খুন হওয়া) মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে
পরেন। বিষয়টি তিনি (মনিকা) জেনে স্বামীকে বাঁধা দেওয়ার পর থেকেই তার
ওপর নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে একমাত্র বন্ধ্যাত্বের অজুহাত দিয়ে
অতিগোপনে রুমা নামের ওই নারীকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে
দীপক। এরপর থেকেই বাড়ি থেকে তাকে (মনিকা) তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য দীপক ও
রুমা নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। নিজের বন্ধ্যাতের অসহায়ত্ব এবং
সম্মানের ভয়ে তিনি (মনিকা) নির্যাতন সহ্য করেও দীর্ঘদিন মুখ বুঝে
ছিলেন। সম্প্রতি দীপক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষিকা
মনিকা হালদারকে অমানুষিক নির্যাতনের পর বিল্ডিং থেকে টেনে হিচরে বের
করে দেওয়া হয়।
শিক্ষিকা মনিকা হালদার বলেন, বিষয়টি তিনি স্থানীয় গণ্যমান্যদের কাছে
জানালে দীপক ক্ষিপ্ত হয়। কয়েকদিনের মধ্যে দীপক তাদের (প্রভাবশালী) ম্যানেজ
করে নেয়। এরপর ওই প্রভাবশালীরা উল্টো দীপকের পক্ষালম্বন করে তাকে (মনিকা)
তালাকের প্রস্তাবে রাজি করানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে ব্যর্থ হয়ে তারা
বর্তমানে এ ঘটনায় যেন আইনের আশ্রয় গ্রহণ না করি সেজন্য বিভিন্ন
ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে।
অসহায় শিক্ষিকা মনিকা হালদার তার স্বামীর অধিকার ফিরে পাওয়াসহ ওইসব
কতিপয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট
মন্ত্রণালয়ের এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মানবাধিকার
সংগঠন ও নারী নেত্রীদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষক দীপক
অধিকারী বলেন, বন্ধ্যাত্বের কারণে ভারতসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মনিকার
চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
তারপরেও কোন সুফল না পেয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমি দ্বিতীয় বিয়ে
করেছি।
দীপকের দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা অধিকারী বলেন, তার কাছে (মনিকা) অপরাধ করলে
আমি করেছি, সেজন্য আমার মৃত বাবাকে নিয়ে উস্কানিমূলক কথা বলা
উচিত নয়। কারণ যতোই খারাপ হোক না কেন, সে আমার জন্মদাতা বাবা। এ
ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ার বলেন, নির্যাতনের
ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।