০৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

সখীপুরে কৃষি জমি জবর দখল করে ভরাট করার প্রতিবাদে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

প্রতিনিধির নাম
টাঙ্গাইলের সখীপুরে কৃষি জমি জবরদখল করে ভরাট করার প্রতিবাদে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকা-সাগরদিঘী সড়কের উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় ভূক্তভোগী শতাধিক কৃষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। আজ রোববার  বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আধাঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে ওই সড়কের দুপাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ওই সড়কের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভূক্তভোগীরা জানান, কারখানা স্থাপনের উদ্দেশ্যে লাবীব গ্রুপ নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান উপজেলার কালিয়াপাড়া ঘোনারচালা মৌজার বিভিন্ন দাগে প্রায় ৩৫ একর কৃষি জমি ক্রয় করেছেন। ওই স্থানটিকে লাবীব গ্রুপের মালিকের নাম অনুসারে ‘আলমগীর নগর’ নামকরণ করে একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ভূক্তভোগীদের অভিযোগ লাবীব গ্রুপের আলমগীর নগর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক ওরফে বাচ্চু ভুয়া দলিলের মাধ্যমে ৭-৮ একর জমি ক্রয় করে দখল করেছেন। এছাড়াও কিছু জমির মালিক লাবীব গ্রুপের কাছে জমি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের জমিও দখলের পাঁয়তারা করছেন। অনেককে মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করাচ্ছেন।
ভূক্তভোগী ও হয়রানির শিকার ঘোনারচালা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, আলমগীর নগরে তাঁর পরিবারের ৬ একর জমি রয়েছে। অথচ আমাদের পরিবারের কারও কাছ থেকে জমি ক্রয় করা হয়নি। অর্থ্যাৎ প্রকৃত জমি মালিকদের কাছ থেকে জমি না কিনে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে ওই জমি লাবীব গ্রুপ ক্রয় করে জবরদখল করেছেন। একই ধরনের অভিযোগ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মো. লিয়াকত হোসেন, নুরুজ্জামান, মোশারফ হোসেন, মাহমুদ আল শাহীন, আছিয়া, জয়তন।
আমির হামজা বলেন, তাঁর জমি না কিনেই লাবীব গ্রুপ দখল করেছেন। আরও কিছু জমি কমমূল্যে বিক্রি করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছেন লাবীব গ্রুপ। দখল করেছেন ৩০ শতাংশ।
রহিমা আক্তার নামে এক নারী অভিযোগ করেন, তাঁদের জমি ও বাড়িঘর দখল করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। আমাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে আমাদের হয়রানি করতে পুলিশও পাঠাচ্ছেন।
ওই এলাকার কৃষি জমি আবাদের জন্য পানি সেচের দুটি গভীর নলকুপ স্থাপিত হয়েছে। নলকূপের মালিক মজিবর রহমান ও খালেক মুন্সী  বলেন, লাবীব গ্রুপ জমি কেনার পর মাটি দিয়ে ভরাট করায় ও পানির ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক কৃষি জমি পতিত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৫০ ভাগ জমিতে ইরিবোরো আবাদ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাবীব গ্রুপের প্রতিনিধি সখীপুর ঘোনারচালা আলমগীর নগর রেঞ্জের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক বাচ্চু তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা লাবীব গ্রুপের পক্ষ থেকে গত পাঁচ-ছয় বছরে পর্যায়ক্রমে উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর জমি ক্রয় করেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বৈধ মালিকদের কাছ থেকেই জমি ক্রয় করা হয়েছে। আমরা ওই জমি জবর দখল করিনি। এমনকি ওই কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করে ঘাস আবাদ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারী বলেন, কারও জমি দখল করলে তাঁরা দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে পারবে। এছাড়া কৃষি জমিতে কেউ মাটি ভরাট করলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ট্যাগস :
আপডেট : ১২:১১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
১৩০ বার পড়া হয়েছে

সখীপুরে কৃষি জমি জবর দখল করে ভরাট করার প্রতিবাদে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

আপডেট : ১২:১১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২
টাঙ্গাইলের সখীপুরে কৃষি জমি জবরদখল করে ভরাট করার প্রতিবাদে লাবীব গ্রুপের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকা-সাগরদিঘী সড়কের উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় ভূক্তভোগী শতাধিক কৃষক এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। আজ রোববার  বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আধাঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে ওই সড়কের দুপাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ওই সড়কের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভূক্তভোগীরা জানান, কারখানা স্থাপনের উদ্দেশ্যে লাবীব গ্রুপ নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান উপজেলার কালিয়াপাড়া ঘোনারচালা মৌজার বিভিন্ন দাগে প্রায় ৩৫ একর কৃষি জমি ক্রয় করেছেন। ওই স্থানটিকে লাবীব গ্রুপের মালিকের নাম অনুসারে ‘আলমগীর নগর’ নামকরণ করে একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ভূক্তভোগীদের অভিযোগ লাবীব গ্রুপের আলমগীর নগর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক ওরফে বাচ্চু ভুয়া দলিলের মাধ্যমে ৭-৮ একর জমি ক্রয় করে দখল করেছেন। এছাড়াও কিছু জমির মালিক লাবীব গ্রুপের কাছে জমি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের জমিও দখলের পাঁয়তারা করছেন। অনেককে মামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করাচ্ছেন।
ভূক্তভোগী ও হয়রানির শিকার ঘোনারচালা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, আলমগীর নগরে তাঁর পরিবারের ৬ একর জমি রয়েছে। অথচ আমাদের পরিবারের কারও কাছ থেকে জমি ক্রয় করা হয়নি। অর্থ্যাৎ প্রকৃত জমি মালিকদের কাছ থেকে জমি না কিনে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে ওই জমি লাবীব গ্রুপ ক্রয় করে জবরদখল করেছেন। একই ধরনের অভিযোগ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা মো. লিয়াকত হোসেন, নুরুজ্জামান, মোশারফ হোসেন, মাহমুদ আল শাহীন, আছিয়া, জয়তন।
আমির হামজা বলেন, তাঁর জমি না কিনেই লাবীব গ্রুপ দখল করেছেন। আরও কিছু জমি কমমূল্যে বিক্রি করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছেন লাবীব গ্রুপ। দখল করেছেন ৩০ শতাংশ।
রহিমা আক্তার নামে এক নারী অভিযোগ করেন, তাঁদের জমি ও বাড়িঘর দখল করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। আমাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে আমাদের হয়রানি করতে পুলিশও পাঠাচ্ছেন।
ওই এলাকার কৃষি জমি আবাদের জন্য পানি সেচের দুটি গভীর নলকুপ স্থাপিত হয়েছে। নলকূপের মালিক মজিবর রহমান ও খালেক মুন্সী  বলেন, লাবীব গ্রুপ জমি কেনার পর মাটি দিয়ে ভরাট করায় ও পানির ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক কৃষি জমি পতিত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৫০ ভাগ জমিতে ইরিবোরো আবাদ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাবীব গ্রুপের প্রতিনিধি সখীপুর ঘোনারচালা আলমগীর নগর রেঞ্জের প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক বাচ্চু তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা লাবীব গ্রুপের পক্ষ থেকে গত পাঁচ-ছয় বছরে পর্যায়ক্রমে উপজেলার ঘোনারচালা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর জমি ক্রয় করেছি। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বৈধ মালিকদের কাছ থেকেই জমি ক্রয় করা হয়েছে। আমরা ওই জমি জবর দখল করিনি। এমনকি ওই কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করে ঘাস আবাদ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চিত্রা শিকারী বলেন, কারও জমি দখল করলে তাঁরা দেওয়ানি আদালতে মামলা করতে পারবে। এছাড়া কৃষি জমিতে কেউ মাটি ভরাট করলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।