০৯:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

সুবর্ণচরে গাজর চাষে সফল হলেন কৃষক

প্রতিনিধির নাম

নোয়াখালী সুবর্ণচরে পরিক্ষামূলক ভাবে চলতি মৌসুমে গাজরের চাষ করে চমক দেখিয়েছেন এক কৃষক। সে চরজব্বার ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদিন সবুজ।

সঠিক নিয়ম মেনে চাষবাদ করায় এবং আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়। তার এই ভালো ফলন দেখে এখন অনেকেই এই গাজর চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

কৃষক সূত্রে জানা গেছে, গাজর চাষের জন্য দোআঁশ বা বেলে দোঁআশ মাটি উপযুক্ত। গাজর চাষকৃত জমি মূলত ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি গভীর করে চাষ করে নিয়েছি। কেননা, গাজরের শেকড় অনেক গভীরে প্রবেশ করে। এ জমি একাধিকবার চাষ করা আবশ্যক। তাই তিন থেকে চারবার চাষ করে নেওয়া হয়েছে। এরপর মই দিয়ে সমান করে নিয়ে জমি খুব ভালোভাবে তৈরি করার মাধ্যমে মাটি ঝুরঝুরে অবস্থায় বীজ বপন করি।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, গাজরের বীজ সারিবদ্ধভাবে বপন করতে হয়। জমিতে বীজ বপনের আগে গাজরের বীজ একদিন ভিজিয়ে রাখতে হয়। মাটি উত্তমরূপে তৈরি করে ২৫ সেমি ব্যবধানের সারি করে সারিতে বীজ বুনতে হয়। বীজ খুব ছোট বলে ছাই বা গুঁড়ো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বপন করা ভালো। দুই থেকে তিন ইঞ্চি দূরে দূরে বীজ বপন করতে হবে। বীজ গজানোর পর চারা একটু শক্ত হলে পর্যায়ক্রমে চারা পাতলা করে দিতে হয়। এতে চারা থেকে চারার দূরত্ব পাঁচ সেমি হলে গাজর খুব ভালো হয়। প্রতিটি বেডের প্রস্থ হতে হবে এক মিটার করে। দুই বেডের মাঝে সেচ দেওয়া ও পরিচর্যার জন্য ২০ সেমি গভীরতাবিশিষ্ট ৩০ সেমি চওড়া নালা রাখতে হবে।

তবে এমন পদ্ধতি থাকলেও কোনো নিয়ম অনুসরণ না করে শুধুমাত্র জমিটি প্রস্তুত করে বীজ গুলো ছিটিয়ে দিয়েছি। এছাড়া অন্যান্য পরিচর্যা সময়মতে করে এচাষে সফল হয়েছি। তবে পরবর্তীতে এই সব নিয়মকানুন অনুসরণ করে ভালো ফলনের জন্য আরো ব্যাপক হারে চাষাবাদ করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

কৃষক জয়নাল আবেদিন সবুজ বলেন, আমাদের এই উপজেলায় আগে গাজরের চাষ তেমন হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি ৪০ শতাংশ জমিতে গাজর চাষ করি। তবে প্রথমে আমার বিশ্বাসই হয়নি। পরে অফিসের কথা রাখতে গিয়ে এই অল্প জমিতে গাজর চাষ করে আমি সফল হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এটি মুলার মতোই মাটির নিচে পরিপূর্ণ বিকাশ হয়। মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পেয়ে উদ্ভিদগুলো সমৃদ্ধি লাভ করে তার ফল বৃদ্ধিতে। ফলন ভালো হওয়ায় এখন অন্যান্য কৃষকরাও আমার থেকে পরামর্শ নিচ্ছে।

উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, আগে এ উপজেলায় গাজর চাষ নিয়ে কৃষকরা তেমন চিন্তা-ভাবনা করতেন না। কিন্তু চরজব্বার ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের মোঃ জয়নাল আবেদিন সবুজ নামে এক কৃষককে উদ্বুদ্ধ করি। সে পরিক্ষামূলক ভাবে প্রথমবারের মতো অন্যান্য চাষাবাদের পাশাপাশি গাজর চাষ করে এখন সফল। এটি দেখে প্বার্শবর্তী চাষিরাও এখন গাজর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুন অর রশিদ জানান, সুবর্ণচরে ২০২১-২২ অর্থ বছরে (১.৫ হেক্টর) অথাৎ ৪ একর জায়গায় পরিক্ষামূলক ভাবে এই গাজরের আবাদ হয়। কৃষকরা সফল হওয়ায় আগামীতে আরো ব্যাপক হারে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য চাষাবাদের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ কৃষকের স্বার্থে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ট্যাগস :
আপডেট : ০৫:২৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
২২৬ বার পড়া হয়েছে

সুবর্ণচরে গাজর চাষে সফল হলেন কৃষক

আপডেট : ০৫:২৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২

নোয়াখালী সুবর্ণচরে পরিক্ষামূলক ভাবে চলতি মৌসুমে গাজরের চাষ করে চমক দেখিয়েছেন এক কৃষক। সে চরজব্বার ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মোঃ জয়নাল আবেদিন সবুজ।

সঠিক নিয়ম মেনে চাষবাদ করায় এবং আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়। তার এই ভালো ফলন দেখে এখন অনেকেই এই গাজর চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

কৃষক সূত্রে জানা গেছে, গাজর চাষের জন্য দোআঁশ বা বেলে দোঁআশ মাটি উপযুক্ত। গাজর চাষকৃত জমি মূলত ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি গভীর করে চাষ করে নিয়েছি। কেননা, গাজরের শেকড় অনেক গভীরে প্রবেশ করে। এ জমি একাধিকবার চাষ করা আবশ্যক। তাই তিন থেকে চারবার চাষ করে নেওয়া হয়েছে। এরপর মই দিয়ে সমান করে নিয়ে জমি খুব ভালোভাবে তৈরি করার মাধ্যমে মাটি ঝুরঝুরে অবস্থায় বীজ বপন করি।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, গাজরের বীজ সারিবদ্ধভাবে বপন করতে হয়। জমিতে বীজ বপনের আগে গাজরের বীজ একদিন ভিজিয়ে রাখতে হয়। মাটি উত্তমরূপে তৈরি করে ২৫ সেমি ব্যবধানের সারি করে সারিতে বীজ বুনতে হয়। বীজ খুব ছোট বলে ছাই বা গুঁড়ো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে বপন করা ভালো। দুই থেকে তিন ইঞ্চি দূরে দূরে বীজ বপন করতে হবে। বীজ গজানোর পর চারা একটু শক্ত হলে পর্যায়ক্রমে চারা পাতলা করে দিতে হয়। এতে চারা থেকে চারার দূরত্ব পাঁচ সেমি হলে গাজর খুব ভালো হয়। প্রতিটি বেডের প্রস্থ হতে হবে এক মিটার করে। দুই বেডের মাঝে সেচ দেওয়া ও পরিচর্যার জন্য ২০ সেমি গভীরতাবিশিষ্ট ৩০ সেমি চওড়া নালা রাখতে হবে।

তবে এমন পদ্ধতি থাকলেও কোনো নিয়ম অনুসরণ না করে শুধুমাত্র জমিটি প্রস্তুত করে বীজ গুলো ছিটিয়ে দিয়েছি। এছাড়া অন্যান্য পরিচর্যা সময়মতে করে এচাষে সফল হয়েছি। তবে পরবর্তীতে এই সব নিয়মকানুন অনুসরণ করে ভালো ফলনের জন্য আরো ব্যাপক হারে চাষাবাদ করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।

কৃষক জয়নাল আবেদিন সবুজ বলেন, আমাদের এই উপজেলায় আগে গাজরের চাষ তেমন হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি ৪০ শতাংশ জমিতে গাজর চাষ করি। তবে প্রথমে আমার বিশ্বাসই হয়নি। পরে অফিসের কথা রাখতে গিয়ে এই অল্প জমিতে গাজর চাষ করে আমি সফল হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এটি মুলার মতোই মাটির নিচে পরিপূর্ণ বিকাশ হয়। মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পেয়ে উদ্ভিদগুলো সমৃদ্ধি লাভ করে তার ফল বৃদ্ধিতে। ফলন ভালো হওয়ায় এখন অন্যান্য কৃষকরাও আমার থেকে পরামর্শ নিচ্ছে।

উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, আগে এ উপজেলায় গাজর চাষ নিয়ে কৃষকরা তেমন চিন্তা-ভাবনা করতেন না। কিন্তু চরজব্বার ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের মোঃ জয়নাল আবেদিন সবুজ নামে এক কৃষককে উদ্বুদ্ধ করি। সে পরিক্ষামূলক ভাবে প্রথমবারের মতো অন্যান্য চাষাবাদের পাশাপাশি গাজর চাষ করে এখন সফল। এটি দেখে প্বার্শবর্তী চাষিরাও এখন গাজর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুন অর রশিদ জানান, সুবর্ণচরে ২০২১-২২ অর্থ বছরে (১.৫ হেক্টর) অথাৎ ৪ একর জায়গায় পরিক্ষামূলক ভাবে এই গাজরের আবাদ হয়। কৃষকরা সফল হওয়ায় আগামীতে আরো ব্যাপক হারে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য চাষাবাদের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ কৃষকের স্বার্থে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।