০৪:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

আজ পহেলা ফাল্গুন এলো ঋতুরাজ বসন্ত

প্রতিনিধির নাম
আজ সোমবার; পহেলা ফাল্গুন। প্রেমিক মনে দোলা দিয়ে যায় ঋতুরাজের বরদান। শাখে শাখে রঙ বাহারি ফুল আর মুকুলের আবরণে ঢেকে যায় প্রকৃতি। ওপার বাংলার অনুপম রয়ের নেশা ভরা ছন্দের ভাষায় ‘বাতাসে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিলো নেশা/ কারা যে ডাকিলো পিছে, বসন্ত এসে গেছে’।
বসন্ত এসে গেছে। বিপুল ঐশ্বর্যমণ্ডিত ঋতুরাজ বসন্ত বরণের দিন। আগমনী বার্তা বাহক কোকিলের সুর আর ফুলে ফলে ভরে ওঠার এই দিনে প্রেমিক মন যেন কোনও বাঁধা ই মানতে নারাজ। ঘুম থেকে উঠেই প্রিয়তম বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে না কেউ। বসন্তের ছোঁয়া না পেলেও ভিড় বাড়ে ফুলের দোকানে। প্রিয়জনের জন্য উপহার দেন হরেক রকম ফুলের মিশেলে বানানো অলঙ্কার।
বন্ধুহীন বুকও ভরে ওঠে বসন্তের আনন্দে। বরণ করে নিতে রবীন্দ্রনাথের গান ছেড়ে দীর্ঘ মৌন ভ্রমণে মিশে বরণ করেন বসন্তকে। “আজি দখিন-দুয়ার খোলা/ এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।”
শীতের শুষ্কতায় বিবর্ণ প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পায় বসন্তে। শাখে শাখে ধরা দেয় কচি পাতার দোল। চারিদিক মাতোয়ারা করে তোলে দক্ষিণা হাওয়ায়। বড়ো বড়ো শহরগুলোর দক্ষিণা বেলকণিও ভরে উঠে ফুলে ফুলে। বকুল, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, মালতী, পলাশেরা জেগে ওঠে তরতর করে। মৌ মৌ করে সৌরভ ছেয়ে যায় আমের মুকুলে। আর এই আগুন ঝরা ফাল্গুনেই বৃক্ষের কঠিন হৃদয়ে বসে প্রিয়াকে প্রাণপণে গান শুনিয়ে বেড়ায় প্রেমিক কোকিল।
প্রতিবছর এ মাসে একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ বসন্তের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। তবে চলতি বছর ওমিক্রনের প্রভাবে দেরি তে মেলা হওয়ায় হয়তো দেখা যাবে না সে আমেজ।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, টিএসসি চত্বর, চারুকলাসহ পুরো শাহবাগ এলাকাতেই অসংখ্য নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ,তরুণ-তরুণীরা মেতে ওঠে বসন্ত উৎসবে। বসন্তের ফুলের সৌরভ থাকাকালীন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানে স্মরণ করা হয় ভাষা শহীদদের। এমন বসন্ত দিনেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রোপিত হয়েছিল বাঙালির স্বাধীনতার বীজ। বসন্তেই শুরু হয়েছিলো বাঙালির মুক্তির যুদ্ধ। সব মিলিয়ে কেবল প্রকৃতি আর সুরে নয়; জাতির ইতিহাসেও বসন্ত আসে এক বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে।
প্রকৃতির স্বাধীনতা আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক অনন্য উৎসব বসন্ত। ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরই বিশেষভাবে প্রস্তুতি নেয় সারাদেশ। এবারও রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানান প্রস্তুতি। জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বরাবরের মতো পালন করে থাকে বসন্ত উৎসব। ঢাবির চারুকলায় বকুলতলার পাশাপাশি মুক্তমঞ্চ, টিএসসি, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক, ধানমণ্ডির রবীন্দ্রসরোবরসহ বিভিন্ন জায়গায় উদযাপনে বরণ করা হয় ঋতু সম্রাট বসন্তকে।
সবকিছু ছাপিয়ে উদযাপনের দিন বসন্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরি করতে হবে আনন্দঘন পরিবেশ। বন্ধু আর সঙ্গির সঙ্গে আড্ডার সাথে সাথে খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রচুর পরিমানে পরিচ্ছন্ন থাকা আর স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখাকে মাথায় রেখে ঘুরে বেড়াতে হবে প্রবল উচ্ছ্বাসে।
ট্যাগস :
আপডেট : ১০:০৮:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
২৯৭ বার পড়া হয়েছে

আজ পহেলা ফাল্গুন এলো ঋতুরাজ বসন্ত

আপডেট : ১০:০৮:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
আজ সোমবার; পহেলা ফাল্গুন। প্রেমিক মনে দোলা দিয়ে যায় ঋতুরাজের বরদান। শাখে শাখে রঙ বাহারি ফুল আর মুকুলের আবরণে ঢেকে যায় প্রকৃতি। ওপার বাংলার অনুপম রয়ের নেশা ভরা ছন্দের ভাষায় ‘বাতাসে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিলো নেশা/ কারা যে ডাকিলো পিছে, বসন্ত এসে গেছে’।
বসন্ত এসে গেছে। বিপুল ঐশ্বর্যমণ্ডিত ঋতুরাজ বসন্ত বরণের দিন। আগমনী বার্তা বাহক কোকিলের সুর আর ফুলে ফলে ভরে ওঠার এই দিনে প্রেমিক মন যেন কোনও বাঁধা ই মানতে নারাজ। ঘুম থেকে উঠেই প্রিয়তম বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে না কেউ। বসন্তের ছোঁয়া না পেলেও ভিড় বাড়ে ফুলের দোকানে। প্রিয়জনের জন্য উপহার দেন হরেক রকম ফুলের মিশেলে বানানো অলঙ্কার।
বন্ধুহীন বুকও ভরে ওঠে বসন্তের আনন্দে। বরণ করে নিতে রবীন্দ্রনাথের গান ছেড়ে দীর্ঘ মৌন ভ্রমণে মিশে বরণ করেন বসন্তকে। “আজি দখিন-দুয়ার খোলা/ এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।”
শীতের শুষ্কতায় বিবর্ণ প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পায় বসন্তে। শাখে শাখে ধরা দেয় কচি পাতার দোল। চারিদিক মাতোয়ারা করে তোলে দক্ষিণা হাওয়ায়। বড়ো বড়ো শহরগুলোর দক্ষিণা বেলকণিও ভরে উঠে ফুলে ফুলে। বকুল, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, মালতী, পলাশেরা জেগে ওঠে তরতর করে। মৌ মৌ করে সৌরভ ছেয়ে যায় আমের মুকুলে। আর এই আগুন ঝরা ফাল্গুনেই বৃক্ষের কঠিন হৃদয়ে বসে প্রিয়াকে প্রাণপণে গান শুনিয়ে বেড়ায় প্রেমিক কোকিল।
প্রতিবছর এ মাসে একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ বসন্তের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে। তবে চলতি বছর ওমিক্রনের প্রভাবে দেরি তে মেলা হওয়ায় হয়তো দেখা যাবে না সে আমেজ।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, টিএসসি চত্বর, চারুকলাসহ পুরো শাহবাগ এলাকাতেই অসংখ্য নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ,তরুণ-তরুণীরা মেতে ওঠে বসন্ত উৎসবে। বসন্তের ফুলের সৌরভ থাকাকালীন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানে স্মরণ করা হয় ভাষা শহীদদের। এমন বসন্ত দিনেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রোপিত হয়েছিল বাঙালির স্বাধীনতার বীজ। বসন্তেই শুরু হয়েছিলো বাঙালির মুক্তির যুদ্ধ। সব মিলিয়ে কেবল প্রকৃতি আর সুরে নয়; জাতির ইতিহাসেও বসন্ত আসে এক বিশেষ গুরুত্ব নিয়ে।
প্রকৃতির স্বাধীনতা আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক অনন্য উৎসব বসন্ত। ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে প্রতিবছরই বিশেষভাবে প্রস্তুতি নেয় সারাদেশ। এবারও রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানান প্রস্তুতি। জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বরাবরের মতো পালন করে থাকে বসন্ত উৎসব। ঢাবির চারুকলায় বকুলতলার পাশাপাশি মুক্তমঞ্চ, টিএসসি, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক, ধানমণ্ডির রবীন্দ্রসরোবরসহ বিভিন্ন জায়গায় উদযাপনে বরণ করা হয় ঋতু সম্রাট বসন্তকে।
সবকিছু ছাপিয়ে উদযাপনের দিন বসন্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরি করতে হবে আনন্দঘন পরিবেশ। বন্ধু আর সঙ্গির সঙ্গে আড্ডার সাথে সাথে খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রচুর পরিমানে পরিচ্ছন্ন থাকা আর স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখাকে মাথায় রেখে ঘুরে বেড়াতে হবে প্রবল উচ্ছ্বাসে।