১২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

খেজুরের রসে শীতের আমেজ

প্রতিনিধির নাম

শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাঁদর মোড়ানো গ্রামীণ জনপদ।পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে সকালের ঘুম ভেঙ্গে যায়।শীতের সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস দিয়ে যায় মনে তৃপ্তি।শীতের আমেজকে যেনো বাড়িয়ে দেয় খেজুরের রস।শীত যত বাড়ে খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়ে।

শীতের মৌসুমে খেজুরের রস দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ।সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়।খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও পাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,টাঙ্গাইলের বাসাইলে খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা  প্রতিদিন বিকেলে নলি, কোমরবন্ধ রশি সাথে নিয়ে  খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি ও হাড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।শীতের সকালে অনেকেই কিনতে আসেন খেজুরের রস।

নাটোর থেকে আসা খেজুরের রস সংগ্রহকারী ওয়াহিদ বলেন, আমি একশত টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি।প্রথম দিকে খেজুরের রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সাথে সাথে খেজুরের রস সংগ্রহ বেড়েছে।খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল করি।জ্বাল করে তারপর খেজুরের গুড় বানায়।প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি।প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৩০০-৩৫০  টাকা।সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে।প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে বিক্রি করি। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি। সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করি।

খেজুরের রস সংগ্রহকারী খশবর আলী বলেন, আমি রাজশাহী থেকে বাসাইলে এসেছি।এবছর প্রথম এই এলাকাতে আসলাম।ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহ করি। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় হাঁড়ি বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি।আমি ৪০ বছর ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করি।এই ৪০ বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় আমি খেজুরের রস সংগ্রহ করেছি। শীতের মৌসুমে এবছর ৮৫টি খেজুরের গাছ থেকে প্রতিদিন ৭-৮ মণ রস সংগ্রহ করি।তিনদিন পর পর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করি।সকালে রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল করি।জ্বাল করতে ২-৩ ঘন্টা সময় লাগে।আর প্রতিদিন ১০-১৫ কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি করি।আবার অনেকেই সকালে খেজুরের রস ও গুড় কিনতে আসে।প্রতি কেজি গুড় ৩০০-৩৫০ টাকা করে বিক্রি করি।আর এক গ্লাস রস বিক্রি করি ১০ টাকা করে।

ট্যাগস :
আপডেট : ১২:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২২
২৩৪ বার পড়া হয়েছে

খেজুরের রসে শীতের আমেজ

আপডেট : ১২:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২২

শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাঁদর মোড়ানো গ্রামীণ জনপদ।পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে সকালের ঘুম ভেঙ্গে যায়।শীতের সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস দিয়ে যায় মনে তৃপ্তি।শীতের আমেজকে যেনো বাড়িয়ে দেয় খেজুরের রস।শীত যত বাড়ে খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়ে।

শীতের মৌসুমে খেজুরের রস দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ।সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়।খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও পাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,টাঙ্গাইলের বাসাইলে খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা  প্রতিদিন বিকেলে নলি, কোমরবন্ধ রশি সাথে নিয়ে  খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি ও হাড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।শীতের সকালে অনেকেই কিনতে আসেন খেজুরের রস।

নাটোর থেকে আসা খেজুরের রস সংগ্রহকারী ওয়াহিদ বলেন, আমি একশত টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি।প্রথম দিকে খেজুরের রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সাথে সাথে খেজুরের রস সংগ্রহ বেড়েছে।খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল করি।জ্বাল করে তারপর খেজুরের গুড় বানায়।প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি।প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৩০০-৩৫০  টাকা।সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে।প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে বিক্রি করি। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি। সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করি।

খেজুরের রস সংগ্রহকারী খশবর আলী বলেন, আমি রাজশাহী থেকে বাসাইলে এসেছি।এবছর প্রথম এই এলাকাতে আসলাম।ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহ করি। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় হাঁড়ি বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি।আমি ৪০ বছর ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করি।এই ৪০ বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় আমি খেজুরের রস সংগ্রহ করেছি। শীতের মৌসুমে এবছর ৮৫টি খেজুরের গাছ থেকে প্রতিদিন ৭-৮ মণ রস সংগ্রহ করি।তিনদিন পর পর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করি।সকালে রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল করি।জ্বাল করতে ২-৩ ঘন্টা সময় লাগে।আর প্রতিদিন ১০-১৫ কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি করি।আবার অনেকেই সকালে খেজুরের রস ও গুড় কিনতে আসে।প্রতি কেজি গুড় ৩০০-৩৫০ টাকা করে বিক্রি করি।আর এক গ্লাস রস বিক্রি করি ১০ টাকা করে।