০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

প্রজন্মকে শোনাতে, রহুমারির (রৌমারীর) কিছু স্মৃতি কথা

প্রতিনিধির নাম

সময়ের চক্রস্রোতে তথা ঘূর্ণাবর্তে কেউ ডোবে, কেউ ভাসে! ঘাট অঘাট হয়, অঘাট ঘাট হয়। যেমন “সোনাভরি” নৌ স্টীমার ঘাট, এখন নাকি আর নেই, এখন হয়েছে বলদ মারা ঘাট! বৃটিশের একটি নামকরা থানার নাম ছিল— রহুমারি। সে সময় কেউ কেউ বলতো রুইমারি। এখানে নাকি একসময় প্রচুর রুই মাছ ধৃত হতো। জানিনে, শৌলমারী, বোয়ালমারী, কর্তিমারী, পুটিমারী, ইঞ্জলামারী( এটিও মাছের নাম) শিংমারী, চিতলমারী ইত্যাদিও কি এসব মাছ অতিরিক্ত ধৃত হওয়ার জন্য এমন নামকরণ করা হয়েছে…?
ইছাকুড়িতে কত কুড়ি ইছে মাছ কুড়িয়ে পাওয়ার জন্য ইছেকুড়ি নামটি হলো কে জানে…..!?
যা হোক্ , রহুমারি— এটি আসাম ও মেঘালয় উভয়ের রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত অত্যন্ত সুশান্ত ও শ্যামলিমাময় বিস্তৃত একটি জনপদের নাম।
এর উত্তরে— ভারতের মাথা ভাঙ্গা অতঃপর দক্ষিণে
দাঁতভাঙ্গা, আরো দক্ষিণে কোমরভাঙ্গা এবং আরো দক্ষিণে….( মনুষ্য দেহের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গা।থাক আর নাইবা বললাম) বিশাল এলাকা নিয়ে বৃটিশের এই থানাটির ভৌগোলিক অবস্থান ছিল!
এই রহুমারির পশ্চিম পাঁজর ঘেঁষে, ব্রহ্মপুত্র নদ হতে জন্ম নেয়া যে শাখা নদীটি কুলুকুলু রবে প্রবাহিত হয়ে আবার দেওয়ানগঞ্জ পয়েন্টে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে মিলেছে, তারই নাম ছিল “সোনাভরি নদী!”
জানিনে, কোন্ ব্রাহ্মণ পুত্রের সলিল সমাধি হওয়াতে ব্রহ্মপুত্র—এর নাম হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র। তবে নদটি ব্রাহ্মণের মতই আভিজাত্যতায় ছিল পরিপূর্ণ।
আর, কত ভরি সোনা জলের তলায় হারিয়ে গিয়ে এ শাখা নদীটির নাম সোনা ভরি হলো, সেটিও এখনো অজানাই রয়ে গেল।
নদের পূর্বে রহুমারি ও পশ্চিমে চিলমারী বন্দরের সাথে সরাসরি বানিজ্য জাহাজ চলতো কলিকাতা, পাটনা ও ধুবড়ি বন্দর হয়ে গৌহাটি এবং অরুণাচল বন্দর পর্যন্ত।
সোনাভরি রহুমারি পয়েন্টে ছিল— ব্যস্ততম নৌ—বন্দর! বড় বড় শত টনি, হাজার টনি পাহাড়সম উঁচু কালো রঙের নৌকাগুলো যখন হাফ ডজন পাল গুটিয়ে সোনাভরি বন্দরে নোঙর করতো— আমরা, সখ করে দেখতে যেতাম।
নৌকো গুলোর আলকাতরা ও মালামালের এক ধরনের গন্ধ মাদকতা আজো মনে পড়ে। সোনাভরির পূর্ব পাড়ে, কেওড়া তলার শশ্মাণঘাটি ছিলো খুবই ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত । বলাই বাহুল্য যে, ভরা বর্ষায় ঐ নৌকো গুলোই সোনাভরি নদী হতে আর একটু এগিয়ে এসে, বৃটিশ নির্মিত ডাকবাংলো ঘাটে নোঙর করতো। তখন, রহুমারির দর্শনীয় এলাকাটি ছিলো— ডাকবাংলো প্রেমিসেস্। এখানে বৃটিশদের রোপিত শত রকমের ফলফলাদির গাছে গাছে এলাকাটি ছিল বেশ বড়সড় কোনো নন্দন কাননের মতো! ডাকবাংলো প্রেমিসেস্—এর দক্ষিণ প্রান্তে— একটি ইন্দিরা (কুপ) ছিল, যেটাতে একসঙ্গে ২০ জন মানুষ চারিপাশে দাঁড়িয়ে, দড়ি—বালতি দিয়ে এক সাথে জল তুলতে পারত।
বৃটিশ পরবর্তী রাজনৈতিক সভাগুলোর সাড়ম্বর আয়োজন এখানেই, এই ডাকবাংলো মাঠেই অনুষ্ঠিত হতো।
এসময়ই রহুমারির তিন কিলোমিটার উত্তর দিকে হাজার হাজার বড়ুই গাছের সমারোহে বড়াইকান্দি নামক আরেকটি বিশাল বৃক্ষ কানন ছিল।

তারও উত্তর পাশ ঘেঁষে ছিলো নাপিতের ভিটে নামক বিশাল বৃক্ষ চত্তর। এগুলো সবই ছিলো সরকারি (খাস) জমি।
এখানে, বিখ্যাত বিখ্যাত যাত্রাদলের যাত্রা পালা হতো। সার্কাস ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও জমতো এখানে।
এখানে রাজা হরিষচন্দ্রের পালা, গুনাই বিবির পালা সহ কতই না যাত্রাপালা দেখেছি।
তুরা রোডের পূর্ব দক্ষিণ প্রান্তে পাহাড়ের উপর কামাখ্যা মন্দির ও মোগল সেনানায়ক মীর জুমলার মাজার ছিল এই জনপদের মানুষের মনোরম আড্ডাস্থল!
তুরা রোডের মাথায় সীমান্তের জিরো পয়েন্ট বরাবর তেঁতুল গাছটি তখনও ছিল, তবে ছোটখাটো ছিল। বৃটিশোত্তর পাকিস্তান পেরিয়ডে, রহুমারির বড় ব্যবসায়ী ছিলো মারোয়ারী শ্যামলাল কাইয়ার বিখ্যাত জুটমিল। পান্নালাল কাইয়া নামক আরেকজন মারোয়ারীও ছিলো। এখন এটি বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স হয়েছে! এখানে শতাধিক শ্রমিকের গান ও হৈচৈ—এ চলতো জুট বেলটিং (বাইন্ডিং)— এর কাজ। রহুমারিতে মুসলমান মারোয়ারী বলা হতো কয়েকটি নুতন ব্যবসায়ী পরিবারকে। যাঁরা ঐ সময়ই ফরাসি সৌরভ (সেন্ট) ব্যবহার করতো। যার সুগন্ধীর স্ফুরণ ছুটতো আধা মাইল পর্যন্ত। কেউ যদি আধঘন্টা পরেও ঐ রাস্তা দিয়ে হাঁটতো, তাঁরাও বলতে পারতো, এ রাস্তায় আধঘন্টা আগে কে গমনাগমন করেছে, কোন্ মিয়ারা গমনাগমন করেছে। এই মুসলমান ব্যবসায়ীদেরকে বলা হতো “মিয়া” ! এঁদের আদি নিবাস ছিল চিলমারীর বন্দরের আশপাশেই! কারো কারো আদিবাস ছিল উলিপুরেও।
এই মিয়াদেরই সুযোগ্য সন্তানদের মধ্যে দু’একজন এখানে অর্থাৎ রহুমারিতে ব্যবসা সূত্রে স্হায়ী হয়ে যায়। এঁদের মধ্যে ছিলেন কাশেম মিয়া, আরেকজন ছিলেন হাশেম মিয়া। অভিজাত বংশের আরেকজন ছিলেন বজলার চৌধুরী। তিনি রহুমারি বাজার মসজিদের উত্তর পাশের বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। আর,বৃটিশ সনদধারি বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক ডাক্তার ছিলেন— বাবু মনমোহন রায়! তিনি ছিলেন মায়া কুটিরের মালিক। এখন যেখানে সিজি জামান হাই স্কুলের ক্যান্টিনটি সংস্থাপিত হয়েছে।

অতঃপর রহুমারিতে আরো কিছু মিয়া তৈরি হয় তাঁদের ব্যবসায়িক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় দু’চার জনের নাম বলাই যায়—
যেমন— করীম মিয়া (কন্ডাকটর), পোড়া হাজী (মান্নান মিয়া), কাণি মান্নান (মান্নান মিয়া) রব্বানী মিয়া, বক্সি পাল, নিবারণ সাহা প্রমূখ ব্যবসায়ীগণ।
সেই “রহুমারি” এখন কালচক্রে হয়েছে “রৌমারী”।
এসব বনসাই তুল্য ব্যবসায়ীদের এখন আর চোখে পড়ার মতো কোনো অস্তিত্ব দেখিনা। মন্দ নয়, তদস্থলে এখন দেখি সুপার মার্কেট সমূহ…..!
সময়ের স্রোতবেয়ে এখন তৈরি হয়েছে, রমিজ মার্কেট, দোহা মার্কেট, মোস্তফা মার্কেট, সাহা মার্কেট, এমপি মার্কেট আরও কত কি….!
লেকিন এক বাত, য়া ছাকতা হ্যায়— রহুমারি’ছে আসমান, চাঁন, আওর সূরুজ’ভি আজতক্ একই রাহতা হ্যায়। হিয়াছে খতরনাক রাস্তা’ভি একই রাহতা হ্যায়, মাগার— থোড়ি বদল গিয়া ইনসান!

ট্যাগস :
আপডেট : ০৯:৫২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩
১২৬ বার পড়া হয়েছে

প্রজন্মকে শোনাতে, রহুমারির (রৌমারীর) কিছু স্মৃতি কথা

আপডেট : ০৯:৫২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

সময়ের চক্রস্রোতে তথা ঘূর্ণাবর্তে কেউ ডোবে, কেউ ভাসে! ঘাট অঘাট হয়, অঘাট ঘাট হয়। যেমন “সোনাভরি” নৌ স্টীমার ঘাট, এখন নাকি আর নেই, এখন হয়েছে বলদ মারা ঘাট! বৃটিশের একটি নামকরা থানার নাম ছিল— রহুমারি। সে সময় কেউ কেউ বলতো রুইমারি। এখানে নাকি একসময় প্রচুর রুই মাছ ধৃত হতো। জানিনে, শৌলমারী, বোয়ালমারী, কর্তিমারী, পুটিমারী, ইঞ্জলামারী( এটিও মাছের নাম) শিংমারী, চিতলমারী ইত্যাদিও কি এসব মাছ অতিরিক্ত ধৃত হওয়ার জন্য এমন নামকরণ করা হয়েছে…?
ইছাকুড়িতে কত কুড়ি ইছে মাছ কুড়িয়ে পাওয়ার জন্য ইছেকুড়ি নামটি হলো কে জানে…..!?
যা হোক্ , রহুমারি— এটি আসাম ও মেঘালয় উভয়ের রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত অত্যন্ত সুশান্ত ও শ্যামলিমাময় বিস্তৃত একটি জনপদের নাম।
এর উত্তরে— ভারতের মাথা ভাঙ্গা অতঃপর দক্ষিণে
দাঁতভাঙ্গা, আরো দক্ষিণে কোমরভাঙ্গা এবং আরো দক্ষিণে….( মনুষ্য দেহের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গা।থাক আর নাইবা বললাম) বিশাল এলাকা নিয়ে বৃটিশের এই থানাটির ভৌগোলিক অবস্থান ছিল!
এই রহুমারির পশ্চিম পাঁজর ঘেঁষে, ব্রহ্মপুত্র নদ হতে জন্ম নেয়া যে শাখা নদীটি কুলুকুলু রবে প্রবাহিত হয়ে আবার দেওয়ানগঞ্জ পয়েন্টে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে মিলেছে, তারই নাম ছিল “সোনাভরি নদী!”
জানিনে, কোন্ ব্রাহ্মণ পুত্রের সলিল সমাধি হওয়াতে ব্রহ্মপুত্র—এর নাম হয়েছিল ব্রহ্মপুত্র। তবে নদটি ব্রাহ্মণের মতই আভিজাত্যতায় ছিল পরিপূর্ণ।
আর, কত ভরি সোনা জলের তলায় হারিয়ে গিয়ে এ শাখা নদীটির নাম সোনা ভরি হলো, সেটিও এখনো অজানাই রয়ে গেল।
নদের পূর্বে রহুমারি ও পশ্চিমে চিলমারী বন্দরের সাথে সরাসরি বানিজ্য জাহাজ চলতো কলিকাতা, পাটনা ও ধুবড়ি বন্দর হয়ে গৌহাটি এবং অরুণাচল বন্দর পর্যন্ত।
সোনাভরি রহুমারি পয়েন্টে ছিল— ব্যস্ততম নৌ—বন্দর! বড় বড় শত টনি, হাজার টনি পাহাড়সম উঁচু কালো রঙের নৌকাগুলো যখন হাফ ডজন পাল গুটিয়ে সোনাভরি বন্দরে নোঙর করতো— আমরা, সখ করে দেখতে যেতাম।
নৌকো গুলোর আলকাতরা ও মালামালের এক ধরনের গন্ধ মাদকতা আজো মনে পড়ে। সোনাভরির পূর্ব পাড়ে, কেওড়া তলার শশ্মাণঘাটি ছিলো খুবই ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত । বলাই বাহুল্য যে, ভরা বর্ষায় ঐ নৌকো গুলোই সোনাভরি নদী হতে আর একটু এগিয়ে এসে, বৃটিশ নির্মিত ডাকবাংলো ঘাটে নোঙর করতো। তখন, রহুমারির দর্শনীয় এলাকাটি ছিলো— ডাকবাংলো প্রেমিসেস্। এখানে বৃটিশদের রোপিত শত রকমের ফলফলাদির গাছে গাছে এলাকাটি ছিল বেশ বড়সড় কোনো নন্দন কাননের মতো! ডাকবাংলো প্রেমিসেস্—এর দক্ষিণ প্রান্তে— একটি ইন্দিরা (কুপ) ছিল, যেটাতে একসঙ্গে ২০ জন মানুষ চারিপাশে দাঁড়িয়ে, দড়ি—বালতি দিয়ে এক সাথে জল তুলতে পারত।
বৃটিশ পরবর্তী রাজনৈতিক সভাগুলোর সাড়ম্বর আয়োজন এখানেই, এই ডাকবাংলো মাঠেই অনুষ্ঠিত হতো।
এসময়ই রহুমারির তিন কিলোমিটার উত্তর দিকে হাজার হাজার বড়ুই গাছের সমারোহে বড়াইকান্দি নামক আরেকটি বিশাল বৃক্ষ কানন ছিল।

তারও উত্তর পাশ ঘেঁষে ছিলো নাপিতের ভিটে নামক বিশাল বৃক্ষ চত্তর। এগুলো সবই ছিলো সরকারি (খাস) জমি।
এখানে, বিখ্যাত বিখ্যাত যাত্রাদলের যাত্রা পালা হতো। সার্কাস ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও জমতো এখানে।
এখানে রাজা হরিষচন্দ্রের পালা, গুনাই বিবির পালা সহ কতই না যাত্রাপালা দেখেছি।
তুরা রোডের পূর্ব দক্ষিণ প্রান্তে পাহাড়ের উপর কামাখ্যা মন্দির ও মোগল সেনানায়ক মীর জুমলার মাজার ছিল এই জনপদের মানুষের মনোরম আড্ডাস্থল!
তুরা রোডের মাথায় সীমান্তের জিরো পয়েন্ট বরাবর তেঁতুল গাছটি তখনও ছিল, তবে ছোটখাটো ছিল। বৃটিশোত্তর পাকিস্তান পেরিয়ডে, রহুমারির বড় ব্যবসায়ী ছিলো মারোয়ারী শ্যামলাল কাইয়ার বিখ্যাত জুটমিল। পান্নালাল কাইয়া নামক আরেকজন মারোয়ারীও ছিলো। এখন এটি বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স হয়েছে! এখানে শতাধিক শ্রমিকের গান ও হৈচৈ—এ চলতো জুট বেলটিং (বাইন্ডিং)— এর কাজ। রহুমারিতে মুসলমান মারোয়ারী বলা হতো কয়েকটি নুতন ব্যবসায়ী পরিবারকে। যাঁরা ঐ সময়ই ফরাসি সৌরভ (সেন্ট) ব্যবহার করতো। যার সুগন্ধীর স্ফুরণ ছুটতো আধা মাইল পর্যন্ত। কেউ যদি আধঘন্টা পরেও ঐ রাস্তা দিয়ে হাঁটতো, তাঁরাও বলতে পারতো, এ রাস্তায় আধঘন্টা আগে কে গমনাগমন করেছে, কোন্ মিয়ারা গমনাগমন করেছে। এই মুসলমান ব্যবসায়ীদেরকে বলা হতো “মিয়া” ! এঁদের আদি নিবাস ছিল চিলমারীর বন্দরের আশপাশেই! কারো কারো আদিবাস ছিল উলিপুরেও।
এই মিয়াদেরই সুযোগ্য সন্তানদের মধ্যে দু’একজন এখানে অর্থাৎ রহুমারিতে ব্যবসা সূত্রে স্হায়ী হয়ে যায়। এঁদের মধ্যে ছিলেন কাশেম মিয়া, আরেকজন ছিলেন হাশেম মিয়া। অভিজাত বংশের আরেকজন ছিলেন বজলার চৌধুরী। তিনি রহুমারি বাজার মসজিদের উত্তর পাশের বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। আর,বৃটিশ সনদধারি বিখ্যাত আয়ুর্বেদিক ডাক্তার ছিলেন— বাবু মনমোহন রায়! তিনি ছিলেন মায়া কুটিরের মালিক। এখন যেখানে সিজি জামান হাই স্কুলের ক্যান্টিনটি সংস্থাপিত হয়েছে।

অতঃপর রহুমারিতে আরো কিছু মিয়া তৈরি হয় তাঁদের ব্যবসায়িক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় দু’চার জনের নাম বলাই যায়—
যেমন— করীম মিয়া (কন্ডাকটর), পোড়া হাজী (মান্নান মিয়া), কাণি মান্নান (মান্নান মিয়া) রব্বানী মিয়া, বক্সি পাল, নিবারণ সাহা প্রমূখ ব্যবসায়ীগণ।
সেই “রহুমারি” এখন কালচক্রে হয়েছে “রৌমারী”।
এসব বনসাই তুল্য ব্যবসায়ীদের এখন আর চোখে পড়ার মতো কোনো অস্তিত্ব দেখিনা। মন্দ নয়, তদস্থলে এখন দেখি সুপার মার্কেট সমূহ…..!
সময়ের স্রোতবেয়ে এখন তৈরি হয়েছে, রমিজ মার্কেট, দোহা মার্কেট, মোস্তফা মার্কেট, সাহা মার্কেট, এমপি মার্কেট আরও কত কি….!
লেকিন এক বাত, য়া ছাকতা হ্যায়— রহুমারি’ছে আসমান, চাঁন, আওর সূরুজ’ভি আজতক্ একই রাহতা হ্যায়। হিয়াছে খতরনাক রাস্তা’ভি একই রাহতা হ্যায়, মাগার— থোড়ি বদল গিয়া ইনসান!