০২:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

বিচার বিভাগকে এগিয়ে না নিলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে : শেরপুরে প্রধান বিচারপতি

প্রতিনিধির নাম
আদালত অঙ্গনে ন্যায়কুঞ্জ ও বার ভবনে লাইব্রেরীর উদ্বোধন করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিতে বিচারক ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, যাদের বয়স ৭০-৮০ বছর তারা জানেন, আগে দেশের অবস্থা কি ছিল আর এখন দেশের কি অবস্থা। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। যতো প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথে বিচার বিভাগকেও সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এগিয়ে চলা দেশের বিচার বিভাগকে এগিয়ে না নিলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আইনজীবী ও বিচারকদের সততার সাথে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওই কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি পার্লামেন্টে আইনজীবীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় বলেন, একসময় দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিয়েছেন আইনজীবীরা। কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে পার্লামেন্টে প্রতি ওয়ার্কিং ডেতে একটি করে বিল পাস হতো। ওইসময় পার্লামেন্টে আইনজীবীদের সংখ্যা কতো ছিল, আর এখন কতো? সেই হিসেবটা খতিয়ে দেখেন। তিনি আইনজীবীদের জাতির নেতৃত্বদানে এগিয়ে আসার আহবান জানান। ওইসময় তিনি জুনিয়র আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পরিশ্রম, ধৈর্য ও সততার সাথে কাজ করতে হবে। তবেই সফল হওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, দেশে গত বছর মামলা দায়েরের চাইতে নিস্পত্তি বেশি হয়েছে। গত বছর বিচার বিভাগ ৮ লাখের বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছে, আর মামলা দায়ের হয়েছে ৭ লাখের মতো। এছাড়া গত বছর সুপ্রীম কোর্ট ১৫৫টি ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করেছে, যা গত ৫০ বছরেও হয়নি। আমরা বিচার বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জুডিশিয়ারিকে আরও গতিশীল করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, শেরপুরে মামলা নিস্পত্তির হার ১৪২ ভাগ। অর্থাৎ ১০০ মামলা দায়ের হলে পুরোনো মামলাসহ নিষ্পত্তি হয়েছে ১৪২টি। এটি বেশ সন্তোষজনক। আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, বার ও বেঞ্চ একে অপরের পরিপূরক। যদি বার বেঞ্চকে সহায়তা না করে তবে একা জজদের পক্ষে বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ। ওইসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের রেজিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম হুমায়ুন কবীর এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুস সবুর মিনা।
ওইসময় প্রধান বিচারপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা ক্রেস্ট ও তার নিজের পোর্ট্রেট উপহার দেওয়া হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মুন্নার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বিচারকগণ ও আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত লাইব্রেরী কক্ষ উদ্বোধন করেন।
এর আগে তিনি জেলার বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজের সভাপতিত্বে ওইসময় অন্যান্য অতিথি ও বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ ইসমেত জিহান। পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে বিচারপ্রার্থী মানুষের জন্য বিশ্রামাগার ন্যায় কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধান বিচারপতি। ওইসময় তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাহাবুব আলী মোয়াদ।
ট্যাগস :
আপডেট : ০৬:১৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
৬৫ বার পড়া হয়েছে

বিচার বিভাগকে এগিয়ে না নিলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে : শেরপুরে প্রধান বিচারপতি

আপডেট : ০৬:১৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
আদালত অঙ্গনে ন্যায়কুঞ্জ ও বার ভবনে লাইব্রেরীর উদ্বোধন করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিতে বিচারক ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, যাদের বয়স ৭০-৮০ বছর তারা জানেন, আগে দেশের অবস্থা কি ছিল আর এখন দেশের কি অবস্থা। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। যতো প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সাথে সাথে বিচার বিভাগকেও সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এগিয়ে চলা দেশের বিচার বিভাগকে এগিয়ে না নিলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আইনজীবী ও বিচারকদের সততার সাথে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওই কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি পার্লামেন্টে আইনজীবীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় বলেন, একসময় দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিয়েছেন আইনজীবীরা। কিন্তু এখন অবস্থা ভিন্ন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে পার্লামেন্টে প্রতি ওয়ার্কিং ডেতে একটি করে বিল পাস হতো। ওইসময় পার্লামেন্টে আইনজীবীদের সংখ্যা কতো ছিল, আর এখন কতো? সেই হিসেবটা খতিয়ে দেখেন। তিনি আইনজীবীদের জাতির নেতৃত্বদানে এগিয়ে আসার আহবান জানান। ওইসময় তিনি জুনিয়র আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পরিশ্রম, ধৈর্য ও সততার সাথে কাজ করতে হবে। তবেই সফল হওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, দেশে গত বছর মামলা দায়েরের চাইতে নিস্পত্তি বেশি হয়েছে। গত বছর বিচার বিভাগ ৮ লাখের বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছে, আর মামলা দায়ের হয়েছে ৭ লাখের মতো। এছাড়া গত বছর সুপ্রীম কোর্ট ১৫৫টি ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করেছে, যা গত ৫০ বছরেও হয়নি। আমরা বিচার বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জুডিশিয়ারিকে আরও গতিশীল করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, শেরপুরে মামলা নিস্পত্তির হার ১৪২ ভাগ। অর্থাৎ ১০০ মামলা দায়ের হলে পুরোনো মামলাসহ নিষ্পত্তি হয়েছে ১৪২টি। এটি বেশ সন্তোষজনক। আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীদের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, বার ও বেঞ্চ একে অপরের পরিপূরক। যদি বার বেঞ্চকে সহায়তা না করে তবে একা জজদের পক্ষে বিচার বিভাগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ। ওইসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের রেজিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এসএম হুমায়ুন কবীর এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আব্দুস সবুর মিনা।
ওইসময় প্রধান বিচারপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা ক্রেস্ট ও তার নিজের পোর্ট্রেট উপহার দেওয়া হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মুন্নার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বিচারকগণ ও আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্মিত লাইব্রেরী কক্ষ উদ্বোধন করেন।
এর আগে তিনি জেলার বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ তৌফিক আজিজের সভাপতিত্বে ওইসময় অন্যান্য অতিথি ও বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২ ইসমেত জিহান। পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গনে বিচারপ্রার্থী মানুষের জন্য বিশ্রামাগার ন্যায় কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধান বিচারপতি। ওইসময় তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাহাবুব আলী মোয়াদ।