০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

শিক্ষা আইন লঙ্ঘন করে বিদ্যালয়ে পরিচালিত

প্রতিনিধির নাম

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পাঠদান চলছে আলহাজ্ব হাতেম আলী আইডিয়াল স্কুলে। নেই কমিটির অনুমোদন তবুও চলছে বছরের পর বছর শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে বহাল তবিয়াতে। বিদ্যালয়টিকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ উপজেলা শিক্ষা অফিস একটি সতর্ক বার্তা পাঠালেও কোন কর্ণপাত করেনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিদ্যালয়টি নিজ শিক্ষার্থীদের অন্যকোন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোতি ছাড়াই এসব ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বই নিয়ে বিতরন করছে নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের নামে নেই কোন জমি, নিজস্ব স্থাপনা শিক্ষা কার্যক্রমের নামে ভাড়া বাসায় চলছে কোচিং বানিজ্য। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজ, মহিপুর মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ ও বর্তমানে ড.শহিদুল ইসলাম কলেজে প্রভাষক হিসিবে কর্মরত আছেন। একই সাথে ৩-৪টি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করায় ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু ও স্বীকৃতি প্রদানের নিতিমালা ২ এর (১,২,৩) স্পষ্ট লঙ্গন করেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের চার মাসের মধ্যে বিদ্যালয় চালুর প্রাথমিক অনুমতি প্রাপ্তির বিধান থাকা সত্বেও কোনরূপ অনুমতি নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানের নুন্যতম ৩কিঃ মিঃ দুরত্বের বিধান থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানটি মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত। যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ১৯৯৭ইং নীতিমালার পরিশিষ্ট-১ এর ক্রমিক ১ নং স্পষ্ট লঙ্গন। উপজেলা শিক্ষা অফিস প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার সতর্কবার্তা পাঠালেও কোন ধরনের কর্ণপাত করেননি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ।

স্থানীয় আমির হোসেন বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে বলে। পরে আমি খোজ নিয়ে জানতে পারি ওই স্কুলে অনেক বিষয়ে শিক্ষক নাই। পড়া লেখার মান মোটেও ভালো না। ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উদ্যোগ না নিলে আমার মত সরল অনেক অভিভাবকের প্রতারণা শিকার হবে। অত্র বিদ্যালয় এর বিদায়ী ছাত্র বনি আমিন বলেন, আমার মায়ের সাথে এবং আমার সাথে তিনি একাধিকবার বিব্রতকর আচরণ করেন এবং আমার কাগজপত্র আটকে রাখেন মোটা অংকের টাকা দিয়ে আমার কাগজপত্র নিতে হয়েছে।

মহিপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাবিবুল্লাহ খান রাব্বী বলেন, স্বনাম ধন্য মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশেই আলহাজ্ব হাতেম আলী আইডিয়াল স্কুল নামেই আর একটি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এটি সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত কার্যক্রম সংগঠিত হয়েছে। তবে আমি মনে করি উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সঠির তদারকি না থাকায় এমনটি হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের স্কুল থেকে মাত্র আধা কিঃ মিঃ দুরে বিদ্যালয়ের নামে কোচিং বানিজ্য চালাচ্ছে। আমার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা আফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান বলেন, মহিপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমি জেলা শিক্ষা অফিস সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি।

ট্যাগস :
আপডেট : ১০:৫৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩
১০৭ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষা আইন লঙ্ঘন করে বিদ্যালয়ে পরিচালিত

আপডেট : ১০:৫৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পাঠদান চলছে আলহাজ্ব হাতেম আলী আইডিয়াল স্কুলে। নেই কমিটির অনুমোদন তবুও চলছে বছরের পর বছর শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে বহাল তবিয়াতে। বিদ্যালয়টিকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ উপজেলা শিক্ষা অফিস একটি সতর্ক বার্তা পাঠালেও কোন কর্ণপাত করেনি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই বিদ্যালয়টি নিজ শিক্ষার্থীদের অন্যকোন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসের অনুমোতি ছাড়াই এসব ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বই নিয়ে বিতরন করছে নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের নামে নেই কোন জমি, নিজস্ব স্থাপনা শিক্ষা কার্যক্রমের নামে ভাড়া বাসায় চলছে কোচিং বানিজ্য। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজ, মহিপুর মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ ও বর্তমানে ড.শহিদুল ইসলাম কলেজে প্রভাষক হিসিবে কর্মরত আছেন। একই সাথে ৩-৪টি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করায় ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু ও স্বীকৃতি প্রদানের নিতিমালা ২ এর (১,২,৩) স্পষ্ট লঙ্গন করেছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের চার মাসের মধ্যে বিদ্যালয় চালুর প্রাথমিক অনুমতি প্রাপ্তির বিধান থাকা সত্বেও কোনরূপ অনুমতি নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানের নুন্যতম ৩কিঃ মিঃ দুরত্বের বিধান থাকলেও এই প্রতিষ্ঠানটি মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে মাত্র আধা কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত। যা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ১৯৯৭ইং নীতিমালার পরিশিষ্ট-১ এর ক্রমিক ১ নং স্পষ্ট লঙ্গন। উপজেলা শিক্ষা অফিস প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার সতর্কবার্তা পাঠালেও কোন ধরনের কর্ণপাত করেননি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আবু সালেহ।

স্থানীয় আমির হোসেন বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে বলে। পরে আমি খোজ নিয়ে জানতে পারি ওই স্কুলে অনেক বিষয়ে শিক্ষক নাই। পড়া লেখার মান মোটেও ভালো না। ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উদ্যোগ না নিলে আমার মত সরল অনেক অভিভাবকের প্রতারণা শিকার হবে। অত্র বিদ্যালয় এর বিদায়ী ছাত্র বনি আমিন বলেন, আমার মায়ের সাথে এবং আমার সাথে তিনি একাধিকবার বিব্রতকর আচরণ করেন এবং আমার কাগজপত্র আটকে রাখেন মোটা অংকের টাকা দিয়ে আমার কাগজপত্র নিতে হয়েছে।

মহিপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাবিবুল্লাহ খান রাব্বী বলেন, স্বনাম ধন্য মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশেই আলহাজ্ব হাতেম আলী আইডিয়াল স্কুল নামেই আর একটি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এটি সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত কার্যক্রম সংগঠিত হয়েছে। তবে আমি মনে করি উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সঠির তদারকি না থাকায় এমনটি হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

মহিপুর কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের স্কুল থেকে মাত্র আধা কিঃ মিঃ দুরে বিদ্যালয়ের নামে কোচিং বানিজ্য চালাচ্ছে। আমার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা আফিসার মোঃ মোকলেছুর রহমান বলেন, মহিপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমি জেলা শিক্ষা অফিস সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি।