০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

সড়ক ও নৌপথের সুব্যবস্থা  থাকা সত্ত্বেও রাঙ্গুনিয়ার স্বপ্নের ইপিজেড বাস্তবায়ন হয়নি

প্রতিনিধির নাম

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চট্টগ্রাম জেলার ষষ্ঠ বৃহত্তম এবং জনসংখ্যার দিক থেকে নবম জনবহুল উপজেলা।৩৬১.৫৪ বর্গকিমি: আয়তনের উপজেলায় আড়াই হাজার হেক্টর জমি নিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্ববৃহৎ গুমাইবিল আছে এখানে, আছে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কর্ণফুলী জুট মিল ও ফোরাত কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরি এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের ভাওয়ানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, দেশের প্রথম কোদালা চা বাগান, আগুনিয়া চা বাগান ও ঠাণ্ডাছড়ি নামের দৃষ্টিনন্দন চা বাগানও আছে এই অঞ্চলে। এছাড়াও আছে গোডাউন এলাকাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেডি, যেটিতে নৌপথ হয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতি ও মেশিং অনলোডিং হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

কাপ্তাই হয়ে রাঙ্গুনিয়ার মাঝখানে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত উপজেলার প্রধান নদীর নাম কর্ণফুলী। ৫০০ কোটি টাকা খরচে ভাঙনকবলিত নদী তীর সংরক্ষণ করে কর্ণফুলীকেও করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন। আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরপূর সুপ্রশস্ত কাপ্তাই সড়ক। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম করতে বিভিন্ন খালের ওপর নির্মিত হয়েছে অর্ধশত ব্রিজ।

বর্তমানে চট্টগ্রামে সরকারি দুটি ইপিজেড রয়েছে, এর একটি চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং অন্যটি কর্ণফুলী ইপিজেড, বেসরকারি ইপিজেডের মধ্যে কোরিয়ান ইপিজেড। অন্যান্য উপজেলা চেয়েও রাঙ্গুনিয়া প্রাকৃতিক সম্পদ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঊর্বর, জলবায়ু, সড়ক ও নৌপথসহ সর্বদিক বিবেচনায় এলাকাটি শিল্প কারখানার জন্য উপযুক্ত। পুঁজি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তার অভাবে কৃষিভিক্তিক ও মাঝারি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি এখানে। সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়িত হয়নি স্বপ্নের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। রাঙ্গুনিয়া ইপিজেডের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকা এখনও বনজঙ্গলেই ছেয়ে রয়েছে।

কিন্তু দীর্ঘ ২৪ বছরের মৃতপ্রায় প্রকল্পটি হলে অঞ্চলটিতে রপ্তানিমুখী কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন করা যেত। পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিপুল ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য গন্তব্যে পরিণত হওয়ার সুযোগ ছিল। কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানার জন্য গবাদি পশু, হাঁস-মুরগির খামার, মৎস্য খামার, তাঁতশিল্প, টেক্সটাইল তৈরির কারখানা, ফলদ দ্রব্যাদির হিমাগার প্রতিষ্ঠান, সবজি জাতীয় দ্রব্যাদি সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে কুটিরশিল্প, বিভিন্ন খাবার তৈরির কারখানা, পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা এবং যানবাহন তৈরির কারখানা এখানে গড়ে উঠতো।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার ‘প্রাইভেট এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেডএস)’ নামে একটি বিল পাস করে, যা এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে আইনে পরিণত করা হয়। ইপিজেডএস-এর বোর্ড অভ গভর্নরদের প্রথম সভাতেই রাঙ্গুনিয়ায় দেশীয় মালিকানাধীন প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব ওঠে।

এরপর ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গুনিয়া পরিদর্শনে এসে রাঙ্গুনিয়াকে শিল্পজোন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বেসরকারি ইপিজেড করার ঘোষণা দেন। ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চে সরকার সে প্রস্তাব অনুমোদন দিলে গঠন হয় ‘চিটাগং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক লিমিটেড (সিআইপিএল)’। পরে ১৯৯৯ সালে ১০ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়ায় দেশের প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।

১৯৯৯ সালে ভূমি জরিপের পর ২০০০ সালে ১৩ জন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীকে হস্তান্তর করা হয় জমির দলিল। সেসময় অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি রাঙ্গুনিয়া ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য এসেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা প্রহণের পর প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে প্রকল্পটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়। ২০১০ সালের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল পরিচালনা বোর্ডের এক সভায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ইপিজেডের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সাংবাদিক ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষক এনায়েতুর রহিম জানান, চিটাগং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইয়ুম চৌধুরী তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে এই ইপিজেড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। স্থানীয় কয়েকজনও তাদের জমি ইপিজেডের জন্য তাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরী সমন্বয় না করায় এবং আশপাশের বাকি জমিগুলো অধিগ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় প্রকল্পটি ভেস্তে যায়। দেশের প্রথম বেসরকারি ইপিজেডের পরিবর্তে কৃষিভিত্তিক অঞ্চল গঠনে এখন সময়ের দাবী।

ইপিজেডে ভূমিদাতা মো. আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘এই ইপিজেড ঘিরে আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখছি। শুধুমাত্র এলাকার উন্নয়নের জন্য, মানুষের কর্মক্ষেত্র তৈরির জন্য ইপিজেডকে জমি দিয়েছিলাম, যা গত ২৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তৎকালীন সময়ে ইপিজেড হওয়ার খবর এলাকাবাসীর মাঝে আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছিল বেকারত্বের মত অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে বলে। ইপিজেড প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। সরকার দেশে চাহিদা মিটিয়ে রাঙ্গুনিয়াসহ আশেপাশে উপজেলাগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি করতে পারতো। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতো সরকারি রাজস্ব খাতে। আনোয়ারা ও মিরসরাই উপজেলাতে ইপিজেড পেলে আমরা কেন পাব না? এখানে কলকারখানা গড়ে উঠলে রাঙ্গুনিয়ায় বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানে যথেষ্ট সহায়ক হতো।

ট্যাগস :
আপডেট : ০৩:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
৬৭ বার পড়া হয়েছে

সড়ক ও নৌপথের সুব্যবস্থা  থাকা সত্ত্বেও রাঙ্গুনিয়ার স্বপ্নের ইপিজেড বাস্তবায়ন হয়নি

আপডেট : ০৩:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চট্টগ্রাম জেলার ষষ্ঠ বৃহত্তম এবং জনসংখ্যার দিক থেকে নবম জনবহুল উপজেলা।৩৬১.৫৪ বর্গকিমি: আয়তনের উপজেলায় আড়াই হাজার হেক্টর জমি নিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সর্ববৃহৎ গুমাইবিল আছে এখানে, আছে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কর্ণফুলী জুট মিল ও ফোরাত কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরি এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের ভাওয়ানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, দেশের প্রথম কোদালা চা বাগান, আগুনিয়া চা বাগান ও ঠাণ্ডাছড়ি নামের দৃষ্টিনন্দন চা বাগানও আছে এই অঞ্চলে। এছাড়াও আছে গোডাউন এলাকাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেডি, যেটিতে নৌপথ হয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিভিন্ন ভারী যন্ত্রপাতি ও মেশিং অনলোডিং হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

কাপ্তাই হয়ে রাঙ্গুনিয়ার মাঝখানে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত উপজেলার প্রধান নদীর নাম কর্ণফুলী। ৫০০ কোটি টাকা খরচে ভাঙনকবলিত নদী তীর সংরক্ষণ করে কর্ণফুলীকেও করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন। আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরপূর সুপ্রশস্ত কাপ্তাই সড়ক। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম করতে বিভিন্ন খালের ওপর নির্মিত হয়েছে অর্ধশত ব্রিজ।

বর্তমানে চট্টগ্রামে সরকারি দুটি ইপিজেড রয়েছে, এর একটি চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং অন্যটি কর্ণফুলী ইপিজেড, বেসরকারি ইপিজেডের মধ্যে কোরিয়ান ইপিজেড। অন্যান্য উপজেলা চেয়েও রাঙ্গুনিয়া প্রাকৃতিক সম্পদ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঊর্বর, জলবায়ু, সড়ক ও নৌপথসহ সর্বদিক বিবেচনায় এলাকাটি শিল্প কারখানার জন্য উপযুক্ত। পুঁজি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তার অভাবে কৃষিভিক্তিক ও মাঝারি শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি এখানে। সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়িত হয়নি স্বপ্নের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। রাঙ্গুনিয়া ইপিজেডের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকা এখনও বনজঙ্গলেই ছেয়ে রয়েছে।

কিন্তু দীর্ঘ ২৪ বছরের মৃতপ্রায় প্রকল্পটি হলে অঞ্চলটিতে রপ্তানিমুখী কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন করা যেত। পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিপুল ফল ও শাকসবজি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য গন্তব্যে পরিণত হওয়ার সুযোগ ছিল। কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানার জন্য গবাদি পশু, হাঁস-মুরগির খামার, মৎস্য খামার, তাঁতশিল্প, টেক্সটাইল তৈরির কারখানা, ফলদ দ্রব্যাদির হিমাগার প্রতিষ্ঠান, সবজি জাতীয় দ্রব্যাদি সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে কুটিরশিল্প, বিভিন্ন খাবার তৈরির কারখানা, পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা এবং যানবাহন তৈরির কারখানা এখানে গড়ে উঠতো।

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার ‘প্রাইভেট এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেডএস)’ নামে একটি বিল পাস করে, যা এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে আইনে পরিণত করা হয়। ইপিজেডএস-এর বোর্ড অভ গভর্নরদের প্রথম সভাতেই রাঙ্গুনিয়ায় দেশীয় মালিকানাধীন প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল গঠনের প্রস্তাব ওঠে।

এরপর ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গুনিয়া পরিদর্শনে এসে রাঙ্গুনিয়াকে শিল্পজোন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বেসরকারি ইপিজেড করার ঘোষণা দেন। ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চে সরকার সে প্রস্তাব অনুমোদন দিলে গঠন হয় ‘চিটাগং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক লিমিটেড (সিআইপিএল)’। পরে ১৯৯৯ সালে ১০ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়ায় দেশের প্রথম বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল।

১৯৯৯ সালে ভূমি জরিপের পর ২০০০ সালে ১৩ জন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীকে হস্তান্তর করা হয় জমির দলিল। সেসময় অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি রাঙ্গুনিয়া ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য এসেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা প্রহণের পর প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে প্রকল্পটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়। ২০১০ সালের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল পরিচালনা বোর্ডের এক সভায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ইপিজেডের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সাংবাদিক ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষক এনায়েতুর রহিম জানান, চিটাগং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইয়ুম চৌধুরী তার পৈত্রিক সম্পত্তিতে এই ইপিজেড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। স্থানীয় কয়েকজনও তাদের জমি ইপিজেডের জন্য তাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরী সমন্বয় না করায় এবং আশপাশের বাকি জমিগুলো অধিগ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় প্রকল্পটি ভেস্তে যায়। দেশের প্রথম বেসরকারি ইপিজেডের পরিবর্তে কৃষিভিত্তিক অঞ্চল গঠনে এখন সময়ের দাবী।

ইপিজেডে ভূমিদাতা মো. আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘এই ইপিজেড ঘিরে আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখছি। শুধুমাত্র এলাকার উন্নয়নের জন্য, মানুষের কর্মক্ষেত্র তৈরির জন্য ইপিজেডকে জমি দিয়েছিলাম, যা গত ২৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।

সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তৎকালীন সময়ে ইপিজেড হওয়ার খবর এলাকাবাসীর মাঝে আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছিল বেকারত্বের মত অভিশাপ থেকে রক্ষা পাবে বলে। ইপিজেড প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। সরকার দেশে চাহিদা মিটিয়ে রাঙ্গুনিয়াসহ আশেপাশে উপজেলাগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি করতে পারতো। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতো সরকারি রাজস্ব খাতে। আনোয়ারা ও মিরসরাই উপজেলাতে ইপিজেড পেলে আমরা কেন পাব না? এখানে কলকারখানা গড়ে উঠলে রাঙ্গুনিয়ায় বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানে যথেষ্ট সহায়ক হতো।