বর্তমান সময়ে ভোক্তাদের পক্ষ থেকে ই-কমার্স একটা বড় ইস্যু। বেশীর ভাগ অভিযোগ ই-কমার্সকে নিয়ে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন,২০০৯ অনুযায়ী সেবা প্রদান বিষয়ক গণশুনানিতে এ কথা বলেন, জাতীয় ভোক্তা-সংরক্ষণ অধিকার-এর মহাপরিচালক এইচ এম সফিকুজ্জামান। গতকাল ১৬ অক্টোবর ২০২২ টিসিবি অডিটোরিয়ামে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন,২০০৯ অনুযায়ী সেবা প্রদান বিষয়ক গণশুনানির অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তপন কান্তি ঘোষ, সিনিয়র সচিব বানিজ্য মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন মোঃ জসিম উদ্দিন, সভাপতি এফবিসিসিআই, গোলাম রহমান, সভাপতি কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সভাপতিত্ব করেন এইচ এম সফিকুজ্জামান, মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
উক্ত গণশুনানিতে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রধান, পদস্থ কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ভোক্তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাছ থেকে বিভিন্ন ভোগান্তি, সেবার মানোন্নয়নের বিভিন্ন দিকগুলো তুলে ধরেন এবং সেবার মানোন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি হলো কৃষক, আমদানি-রফতানিকারক ও রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। সরকার অপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর ভ্যাট বাড়িয়েছে, অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানী ব্যাপারে সচেতন হই, তাহলে আমাদের জন্যই ভালো।
গণশুনানিতে বক্তারা আরও বলেন,বিদেশী পণ্য আমদানি, বাজারজাত করণের ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পক্ষ থেকে কতিপয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয় তাহলোঃ পণ্যের মেয়াদ থাকতে হবে, বিএসটিআইয়ের লোগো থাকতে হবে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সীলমোহর ও তাদের অনুমোদন থাকতে হবে। অননুমোদিত কোন প্রতিষ্ঠান বিদেশী পণ্য বাজারজাত করতে পারবে না। নকল ও ভেজাল পণ্য উৎপাদন পরিহার করতে হবে। কোন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বাজারজাত করতে হলে কোন ভাবেই উৎপাদিত প্রতিষ্ঠানের প্যাটার্ন পরিবর্তন করা যাবে না। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যের ব্যাপারে বাজার কন্ট্রোল রাখতে হবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ভবিষ্যতে ভোজ্য তেল আর খোলা রাখা হবে না। খোলা থাকলে তাতে ভোজ্যতেলের ভেজালের সম্ভাবনা বেশী থাকে। বক্তারা ভেজাল ও মানহীন পণ্য বাজারজাত করনের বিপরীতে সরকার ঘোষিত ২৫% ইনসেন্টিভ প্রদানের পক্ষে বিপক্ষে বিভন্ন মতামতা ব্যক্ত করেন। এছাড়াও বক্তারা জাতীয় ভোক্তা- সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের কার্যক্রম প্রসার ও মানোন্নয়নের বিভিন্ন ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাজারে যদি পণ্য সাপ্লাই না থাকে, সরকার যদি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় তাহলে,সেক্ষেত্রে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে। নকল ও ভেজাল বিরোধী সকল দেশে আইন আছে। ভোক্তার ক্ষতিপূরণ কম-বেশী আদায়ের ব্যাপারে প্রশাসনিক মোবাইল কোর্ট, ফৌজদারী ও দেওয়ানীমামলা করার ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও মামলা নিষ্পত্তির জনবল বৃদ্ধির ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ভোক্তা-সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তর নয় ব্যক্তি পর্যায়ে পণ্যের মান, মেয়াদ ইত্যাদি বিষয় সজাগ থাকতে হবে। আমরা যদি স্ব-স্ব ক্ষেত্রে দ্বায়িত্ব পালন করি তাহলে আমাদের সকলের জন্য ভালো। তখন বাজারকে কেউ মেনুপুলেট করতে পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ই-কমার্স একটা বড় ইস্যু। তাদের ব্যাপারে আমাদের কাছে এ ব্যাপারে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা এসব ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির চেষ্টা করবো। ভোক্তাদের কাছ থেকে যে হারে অভিযোগ আসছে সকল ব্যাপারে এ মূহুর্তে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে এক সাথে কাজ করতে হবে, সকলকে আইন মেনে চলতে হবে। আমাদেরকে কোন প্রতিষ্ঠানকে যেন ফাইন না করতে হয়, ফাইন যেন নিয়ে আসতে না হয় বরং ফুলের তোড়া নিয়ে আসতে পারি। পরিশেষে তিনি সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে গণশুনানির পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেন।