admin
- শনিবার ২৬ নভেম্বর, ২০২২ / ৭৯
নওগাঁর রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিস থেকে দলিলের জাবেদা কপি (নকল কপি) তুলতে গেলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। সরকার নির্ধারিত রেটের বাইরে সমিতির নাম ভাঙিয়ে প্রতি জাবেদার কপিতে প্রায় ১ হাজার থেকে ১১শ’ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নকল-নবিশের সমিতির সদস্যরা। এতে করে প্রতিনিয়তই জাবেদা কপি তুলতে আসা ব্যক্তিদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এমনকি প্রতি মাসে জাবেদা কপি নিতে আসা গ্রহীতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নকলনবিশের এই সমিতি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিস থেকে দলিলের জাবেদা কপি নিতে সরকারিভাবে ১০ পাতার বাংলা জাবেদা কপিতে সরকারি ফি-সহ অন্যান্য খরচ বাবদ ৬শ’ ৪০ টাকা রেট নির্ধারিত করে দেয়া আছে। এরমধ্যে কোন গ্রহীতা জরুরীভাবে জাবেদা কপি নিতে চাইলে তাকে ১৫০ টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া জাবেদা কপিতে ১০ পাতার বেশি পাতা হলে সরকারিভাবে আরও কিছু টাকা ফি দিতে হয়। এছাড়াও ইংরেজি জাবেদা কপি নিতে চাইলে বাংলা জাবেদা কপির রেটের চেয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অল্পকিছু টাকা বেশি নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের নকলনবিশ নিয়ে অনুসন্ধানে ধরা পরেছে উল্টো চিত্র।
রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে নকলনবিশে মোট ২২ জন কর্মরত আছেন। তাদের রয়েছে নকলনবিশের সমিতি। নকলনবিশের সদস্যরা কেউ সরকার নির্ধারিত টাকায় দলিলের জাবেদা কপি দেয় না। অবৈধ নামধারী নকলনবিশের সমিতির বেঁধে দেয়া ১৭শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা রেটে গ্রহীতাদের জাবেদা কপি দেয়া হয়। আর সমিতির বেঁধে দেয়া টাকা না দিলে জাবেদা কপি নিতে অফিসে ঘুড়তে হয় মাসের পর মাস।
রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের নকলনবিশ থেকে দলিলের জাবেদা কপি নিয়েছেন উপজেলার পূর্ব বালুভরা গ্রামের কৃষক বিপ্লব শাহ। কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, নকলনবিশ থেকে জরুরীভাবে আমি ১০ পাতার একটি জাবেদা কপি নিয়েছি। সেই জাবেদা কপিতে সরকারিভাবে সব মিলে রেট লেখা আছে ৯৭০ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে ১৭শ’ টাকা নেয়া হয়েছে।
জাবেদা কপি গ্রহীতা আতাইকুলা গ্রামের জাহিদ বলেন, নিজের প্রয়োজনে কিছুদিন আগে রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে দলিলের জাবেদা কপি তুলতে যাই। নকলনবিশের এক নারী সদস্য আমার কাছ থেকে ১৭শ’ টাকা নিয়ে জাবেদা কপি দিয়েছেন।
উপজেলার বড়বড়িয়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে আমার এক শুভাকাক্ষীর নকল নিতে গিয়েছিলাম। নকলনবিশের সমিতির এক সদস্য জাবেদা কপি দিতে ১৭শ’ টাকা দাবি করেন। আমি কিছু টাকা কম দিতে চাইলে নকল দিতে তিনি রাজি হয়নি। বাধ্য হয়ে ১৭শ’ টাকা দিয়েই সেই জাবেদা কপি নিতে হয়েছে।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের নকলনবিশের সভাপতি মোছাঃ আঙ্গুরী দাবি করে বলেন, নকলনবিশে কোন সমিতি নেই। আর জাবেদা কপিতে সরকার নির্ধারিত রেটের বাহিয়ে অতিরিক্ত কোন টাকা নেয়া হয় না।
Related