সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) উপজেলার ৮নং করপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বদরপুর গ্রামের পূর্ব পালের বাড়িতে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৩ নভেম্বর) শিক্ষিকা স্মৃতি রানী বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বর্তমানে শিক্ষিকা স্মৃতি রানী পাল রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
করপাড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডাক্তার মাঈন উদ্দিন মানিক জানান, স্মৃতি রানী পালের বাবা পরীক্ষিত চন্দ্র পাল হত দরিদ্র থাকায় বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে বিক্রি করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরে ২০০৯ সালে স্মৃতি রানীর চাকরি হওয়ার পরে স্মৃতি সংসারের হাল ধরেন। বাবা পরীক্ষিত পাল মারা যাওয়ার পর স্মৃতি রানী পালের উপর নির্যাতন শুরু হয়। মূলত কানাই শংকর পালের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে তার বোন স্মৃতি রানী পালের অনেক অবদান রয়েছে।
রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্মৃতি রানী পাল বলেন, আমার ভাই শংকর তার স্ত্রী প্রমা ও মা মলিনা সকলে একত্রিত হয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও আমার ভাই এবং মা গত ১৭ নভেম্বর সকালে বড় মেয়ে স্নেহাদ্রী পাল এবং ১০ অক্টোবর ছোট মেয়ে সোহাদ্রী পালকেও মারধর করেন।
অভিযুক্ত কানাই শংকর পাল বলেন, মারধর ও হামলার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। এগুলো সব নাটক। আইনগতভাবে বিয়ের পর মেয়েরা পৈতৃক কোন সম্পত্তির মালিক হয় না। কিন্তু আমার বোন স্মৃতি আইন অমান্য করে জোর করেই আমার বাড়িতে থেকে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে আসছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বদরপুর পালের বাড়ির পরীক্ষিত চন্দ্র পালের মেয়ে স্মৃতি রানী পাল সরকারি চাকরি করার সুবাদে বিয়ের পর থেকে নিজ পিত্রালয়ে বসবাস করে আসছেন। তার সঙ্গে বাস করেন মা মলিনা রানী পাল ও নিজের ভাই কানাই শংকর পাল। এক পর্যায়ে কানাই শংকর পাল বিয়ে করেন। এরপর থেকেই কানাইয়ের স্ত্রী প্রমা রানী পাল ও পরিবারের সকলে একত্রিত হয়ে স্মৃতি রানী পালকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শিক্ষিকা স্মৃতি রানী পালের ওপর চড়াও হয় তার ভাই ভাই কানাই শংকর এবং স্মৃতিকে নির্দয়ভাবে প্রহার করে।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী আফরোজা আক্তার জানান, বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্মৃতি রানী পালকে বেধড়ক পিটানোর ঘটনায় সমিতির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত কানাই শংকর পালসহ জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি অপূর্ব কুমার সাহা জানান, খবর পেয়ে স্মৃতি রানীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছি। তবে উভয় পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে খুব শিগগরই বিষয়টি সমাধান করা হবে।