মঙ্গলবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
চার বছর পর যখন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা বিশ্বকাপ মাঠে গড়াবে, তখন লিওনেল মেসির বয়স দাঁড়াবে ৩৯ বছর। সে বয়সে মেসি আরেকটা বিশ্বকাপ খেলবেন, এমনটা আশা করাই বাড়াবাড়ি। আর্জেন্টাইন মহাতারকা এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন কাতার বিশ্বকাপের পর তার পা আর পড়বে না গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের মঞ্চে। এদিকে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা মাঠে নামছে পোল্যান্ডের বিপক্ষে। এ ম্যাচে আর্জেন্টিনা জয়ের দেখা না পেলে মেসির বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যেতে পারে আজই।
কাতার বিশ্বকাপে শিরোপা জেতার জন্য ফেবারিট হিসেবেই এসেছিল আর্জেন্টিনা। তবে সৌদি আরব গরমিল করে দিয়েছে অঙ্কে। যে কারণে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনা আছে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কায়। বুধাবার (৩০ নভেম্বর) পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি হেরে গেলেই ২০০২ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিতে হবে আলবিসেলেস্তেদের। ড্র করলেও তাকিয়ে থাকতে হবে ওপর দুই দলের ম্যাচের দিকে।
ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসি। অনেকের চোখেই তিনি সর্বকালের সেরা ফুটবলার। সেই মেসির বিশ্বকাপ যাত্রার কি তবে আজই ইতি ঘটতে চলেছে? দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের মঞ্চে এটাই কি মেসির শেষ পদচারণা। সব প্রশ্নের জবাব মিলবে স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর সবুজ গালিচায়। ১৮ বছরের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছেন রোসারিওর সান্তা ফে-তে জন্ম নেয়া লা পুলগা। স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে একের পর এক ইতিহাস রচনা করেছেন। সম্ভাব্য সব শিরোপা জিতেছেন ক্লাবটির হয়ে। ব্যক্তিগত অর্জনেও ভাস্বর মেসির ক্যারিয়ার। তার নামের পাশে সাত-সাতটি ব্যালন ডি’অর! কিন্তু এক জায়গায় তার প্রতি কী নির্মম ভাগ্যদেবী! বিশ্বকাপটা যে ছুঁয়ে দেখা হয়নি এখনও।
মেসির গ্রেটনেস নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সন্দেহ নেই তার অমরত্ব নিয়েও। তারপরও বিশ্বকাপ তো বিশেষ কিছু। সর্বকালের সেরা বলে পরিচিত দুই তারকা পেলে ও ম্যারাডোনাকে ওই আসনটা তো দেয়া হয় বিশ্বকাপের মঞ্চে তাদের শ্রেষ্ঠত্বের জন্যই। আর সেখানেই পিছিয়ে তিনি।
২০১৪ বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েও ছুঁতে পারেননি সোনালি শিরোপাটা। ব্রাজিলের ট্র্যাজেডির স্টেডিয়াম মারাকানা যে মেসির ক্যারিয়ারেও ট্র্যাজেডির গল্পের ভেন্যু। ১১৩ মিনিটে মারিও গোটশের গোলে পোড়ে মেসির কপাল। ভাগ্যদেবী একটু বেশিই নির্মমতা দেখিয়েছিল মেসিদের। নইলে কেন ‘জার্মান মেসি’খ্যাত গোটশের গোলেই হারতে হবে! আসল মেসির সামনে নকল মেসি উঁচিয়ে ধরেছিল শিরোপা।
আর্জেন্টিনার সময়টাও ভালোই কাটছিল। টানা ৩৬ ম্যাচে জয় নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছিল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে একটা ম্যাচও হারেনি আর্জেন্টিনা। কাতার বিশ্বকাপে আলবিসেলেস্তেদের ধরা হচ্ছিল হট ফেবারিট। কিন্তু সৌদি আরবের কাছে এক হারে বদলে গেছে চিত্র। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে মেসি ও তার দল। হেরে গেলে বিদায়, ফিরতে পারলে মেসিদের সামনে থাকছে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। ফিরতে পারলে মেসি থামিয়েও দিতে পারেন সর্বকালের সেরার বিতর্ক।
এমন খাদের কিনারা থেকে দলকে ফেরানোর উদাহরণ কম নেই মেসির। ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বেই তো বাঁচামরার ম্যাচে হাটট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে এনেছিলেন মেসি। ২০১৪ বিশ্বকাপে তো ফাইনালেই তুলেছিলেন। সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপে আরও একবার ক্যারিশম্যাটিক মেসির পায়ে ভর করুক ফুটবলের দেবতা।