সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩, ০২:২২ অপরাহ্ন
জাল দলিলের তথ্য চাওয়ায় বাংলাদেশ সমাচারের নীলফামারী জেলা বিশেষ প্রতিনিধির উপর চড়াও হন নীলফামারীর ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিস মহিকুল ইসলাম ও তার অনুগত কর্মচারীসহ দালাল চক্র। এ সময় তারা ওই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার (৫ই জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ভিতরে সাব রেজিস্ট্রারের সামনেই এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডিমলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিক জামান মৃধা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সমাচারের জেলা বিশেষ প্রতিনিধি জামান মৃধা বলেন, ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রার মনিষা সাহা অফিসের নির্ধারিত সময়ের পরেও তার খাস কামরার মুল দরজা বন্ধ করে দলিল রেজিস্ট্রি করছেন।কর্মকর্তার আড়ালে জাল দলিল রেজিস্ট্রি করাতে অফিসের ভিতরেই মোটা অঙ্কের ঘুষ নেন নকলনবিশ মহিকুল ও তার দালাল চক্র। এমন তথ্য আমার কাছে এলে বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় জাল দলিল চক্র ও ঘুষের তথ্য সংগ্রহ করতে আমি এবং দৈনিক আশ্রয় প্রতিদিনের ডিমলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যাই। অফিসে গিয়ে দেখি সাব-রেজিস্ট্রার তার খাস কামরায় বসে মূল দরজা বন্ধ করে দলিল রেজিস্ট্রি করছেন। এরপর আমরা রেকর্ড রুমের সামনে গেলে দেখতে পাই নকলনবিশ মহিকুল ইসলাম রেকর্ড রুমের ভিতরে বসে আছেন। তার হাতে বেশকিছু দলিল ও নগদ অর্থ। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি সটকে পড়েন। রেকর্ড রুমের ভিতরে একজন নকলনবিশ কিভাবে বসতে পারে এ বিষয়ে জানতে সাব-রেজিস্ট্রারের খাস কামরায় তার দেখা মেলেনি। পরে মহিকুল ইসলাম, দলিল লেখক হবিবর রহমান,সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কেরানী ধনন্ঞ্জয় রেকর্ড রুম থেকে বের হয়ে আমার দিকে তেরে আসেন। মহিকুল ও তার অনুগত কর্মচারীসহ দালাল চক্র আমাদের ধমকাতে থাকে। তারা বলেন, তাড়াতাড়ি এই জায়গা থেকে না গেলে বড় ধরনের বিপদ হবে। এ সময় অজ্ঞাতনামা একজন মারার উদ্দেশ্যে আমার হাত ধরে টান দেয়। আমি হাত ছুটিয়ে দ্রুত অফিসের বাইরে চলে আসি।
দৈনিক জনবাণীর ডিমলা প্রতিনিধি রুহুল আমিন বলেন, জাল দলিল মামলায় সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকসহ কয়েকজন ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। তাঁদের কাছে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলের শতাধিক সরকারি স্ট্যাম্প ও দলিল জাল করার উপকরণসহ বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তা, সাব-রেজিস্ট্রার ও ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জাল সই-সংবলিত ১৬৫ টি সিল জব্দ করা হয়ে ইতিপূর্বে। এ ঘটনার তথ্য সংগ্রহের জন্য গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করি সাব রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলার জন্য। পরে আমি নিচে নেমে আসি। এ সময় জামান মৃধা রেকর্ড রুমে নকলনবিশ বসার বিষয়ে কথা বলায় তারা অফিসের বাইরেও তার ওপরে চড়াও হয়। পরে আমি দৌড়ে গিয়ে কিছু ভিডিও ধারণ করি। এ সময় তারা সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব রেজিস্টার মনিষা সাহা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকলে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লাইছুর রহমান জানান, সাংবাদিকদের লান্ঞ্চিতের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।