সোমবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
২০১৯ সালের জুন মাস। ইংল্যান্ডে তখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ চলছে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে টিভি ক্যামেরায় একাধিকবার হাই তুলতে দেখা যায় পাকিস্তানের উইকেটকিপার সরফরাজ আহমেদকে। তার এই আয়েশি হাই তোলা নিয়ে সমালোচনা, ট্রলে জেরবার অবস্থা। অবশ্য এর আগেই উইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রানে অলআউট হওয়ার দায় তৎকালীন অধিনায়ক সরফরাজের ওপর চাপান শোয়েব আখতার। তাঁকে ভুঁড়িওয়ালা, ঘিলুহীন বলতেও ছাড়েননি শোয়েব।
চার বছর পর সেই সরফরাজকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন পিন্ডি এক্সপ্রেস। শুধু শোয়েব একা নন, কিউইদের বিপক্ষে গত শুক্রবারের সেঞ্চুরির পর সবাই সরফরাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
চার বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন সরফরাজ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে তাঁর স্কোর ৮৬, ৫৩, ৭৮ ও ১১৮। ৩৩৫ রান নিয়ে তিনি সিরিজসেরা। কী অসাধারণ প্রত্যাবর্তন!
অথচ অধিনায়ক হিসেবে ২০১৭ সালে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এনে দেওয়া এ মানুষটির গত তিনটি বছর কেটেছে রীতিমতো অবহেলায়। নেতৃত্ব হারালেন, একাদশ থেকে বাদ পড়লেন, স্কোয়াডেও ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে, দলের সিনিয়র হয়েও সতীর্থদের জন্য পানি টানলেন। কিন্তু কারও কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। নিজের ভেতর আগুনটা জ্বালিয়ে রেখেছিলেন একটি সুযোগের অপেক্ষায়।
প্রত্যাবর্তনের প্রথম তিন ইনিংসে তিনি পারফর্ম করলেন নিজের জন্য। তবে গত শুক্রবার তিনি পুরো পাকিস্তান দলকে উদ্ধারের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। দলের চরম বিপদে প্রায় ৫ ঘণ্টা ব্যাট করে ১৭৬ বলে খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ১১৮ রানের ইনিংস।
ভুঁড়িওয়ালা সরফরাজের এমন ব্যাটিং দেখে অবাক শোয়েব, ‘ক্রিকেটে আমার দেখা অন্যতম শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন। চরম মানসিক শক্তির পরিচয় দেওয়ায় সব প্রশংসা সরফরাজের। চার বছর পর ফিরে এমন কিছু করা মোটেই সহজ নয়।’
যাঁকে নিয়ে এত কথা, সেই সরফরাজ বলেন, ‘একটা সুযোগ চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি। শুরুতে একটু ভয় হচ্ছিল, কিন্তু বাবর এসে বলল, শুধু নিজের খেলাটা খেলতে। সেটাই করেছি। আবার দেশের হয়ে খেলতে পেরেছি! এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় আনন্দ।’