বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
কমল চক্রবর্তীঃ চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান
আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা কখনো রাস্তায়, কখনো বাসে ধাক্কা দিয়ে মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা কখনো ব্যাংক থেকে বের হওয়া গ্রাহকদেরকে টার্গেট করে তার পিছু নেয়। একটু নির্জন স্থানে গেলে সেখানে গিয়ে কৌশল অবলম্বন করে ধাক্কা দেয়। গ্রাহক পরে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা অস্ত্র শস্ত্র বের করে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে যা থাকে সর্বস্ব লুটে নেয়। এই চক্রের ৭ সদস্যকে নগরির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এসময় ১ টি দেশীয় এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ, ১টি টিপ ছোরা ও লুন্ঠিত নগদ ২৫,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আজ বুধবার ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২:৪৫ মিনিটের সময় সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চলিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানান এসআই মোঃ মোমিনুল হাসান।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, মোঃ রকি (২৪), কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন বিউটি আক্তার এর বাড়ীর মৃত খালেকের ছেলে বর্তমানে-নগরীর সদরঘাট থানাধীন পশ্চিম মাদারবাড়ীর গেঞ্জিওয়ালার বিল্ডিং, ৫ম তলার বাসিন্দা। রফিকুল ইসলাম বাপ্পি (২৭), নেত্রকোনা জেলার নেত্রকোনা সদর থানাধীন ত্রিশিরী এলাকার ছগির প্রকাশ খেরুর ছেলে বর্তমানে- বারো কোর্য়াটার, গেঞ্জিওয়ালার বিল্ডিং, ৫ম তলার বাসিন্দা। মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩০) মোগলটুলী, বারো কোর্য়াটার, ফটিকছড়ি বিল্ডিং এর ৫ম তলার বাসিন্দা মোঃ হারিছ মিয়ার ছেলে। মোঃ তৌহিদুল ইসলাম তপু (২৪) পশ্চিম মাদারবাড়ী, ল্যাংটা
ফকির মাজার, এরশাদ মিয়ার ৫ম তলার বাসিন্দা মনেক মিয়ার ছেলে। মোঃ জসিম উদ্দিন (২২),পশ্চিম মাদারবাড়ী, ওলা পুকুরপাড়, আবু জমিদার এর ভাড়াটিয়া মোঃ মমিন মিয়া বার্বুচীর ছেলে ও মোঃ সাহাবুদ্দিন (৩২),ঈদগাঁহ, বড়পকুরপাড়, চৌধুরী বাড়ীর নীচতলার ভাড়াটিয়া মোঃ রুস্তম ড্রাইভা্রের ছেলে এবং মোঃ তাজুল ইসলাম (৩৪) কদমতলী, পোড়া মসজিদ গলির ভাড়াটিয়া মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, আসামীরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। তারা কখনো রাস্তায়, কখনো বাসে ধাক্কা দিয়ে মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা কখনো ব্যাংক থেকে বের হওয়া গ্রাহকদেরকে টার্গেট করে তার পিছু নেয়। একটু নির্জন স্থানে গেলে সেখানে গিয়ে কৌশল অবলম্বন করে ধাক্কা দেয়। গ্রাহক পরে যাওয়ার সাথে সাথেই তারা অস্ত্র শস্ত্র বের করে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে যা থাকে সর্বস্ব লুটে নেয়। আবার তারা কখনো বিভিন্ন প্রেমিক প্রেমিকাকে টার্গেট করে, নির্জন স্থানে প্রেমিক প্রেমিকা দেখলে প্রেমিকাকে তাদের বোনের সার্থে সম্পর্ক আছে বলিয়া ছবি দেখানোর ভান করে মোবাইল নিয়ে নেয় এবং মোবাইল দিতে না চাইলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া সহ সর্বস্ব লুটে নেয়। তারা বাসে যাত্রী বেশে উঠে টার্গেটকৃত যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে তার সাথে মারামারি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সর্বস্ব লুটে নেয়। তারা বেশিরভাগই আঞ্চলিক ভাষায় ও সাধু ভাষায় কথা বলে। এই প্রক্রিয়ায় আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে নগরীতে ডাকাতি করে আসছে।
কোতোয়ালী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন জানান,মামলার সুত্র ধরে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তাদের চিহ্নিত করা হয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় ও পলোগ্রাউন্ড মাঠের মেইন গেইটে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আসামীরা সকলেই একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে বলে স্বীকার করে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য যে, আসামী মোঃ সাহাবুদ্দিন এর বিরুদ্ধে, অস্ত্র মাদক, দ্রুত বিচার সহ পৃথক আইনে মোট ২৮টি মামলা আছে, মোঃ তাজুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে মাদক ও দন্ডবিধি আইনে মোট ৩টি মামলা সহ অবশিষ্ট আসামীদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক আইনে বেশ কয়েকটি মামলা আছে।
বিএস/কেসিবি/সিটিজি/৬ঃ০০পিএম