হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
- মঙ্গলবার ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ / ৮৯ জন দেখেছেন
প্রেমিক-প্রেমিকাকে এক সাথে দেখে ফেলে শিশু লিজা বিষয়টি প্রেমিকার মাকে জানিয়ে দেয়ায় ৯ বছরের শিশু লিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে । শিশুটির লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখা হয়। ছয় মাস পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে (পিবিআই)। তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির দেয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার।
তিনি আরও জানান, বিগত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল আযহার দিন সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের মো. সাগর আলীর মেয়ে লিজা আক্তারকে তার মা সেলিনা বেগম প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রী আনতে গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাজারে পাঠায় কিন্তু ততক্ষণে রাত হয়ে গেলেও লিজা সে ফিরে আসেনি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি লিজার পরিবার। ঐ দিন রাতেই শিশু লিজার বাবা সাগর আলী মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। চারদিন পর গ্রামের পার্শ্ববর্তী এক নারী বাঁশঝাড়ে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে লিজার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পায় । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাটায় রাতে লিজার বাবা সাগর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে পিবিআইয়ের সদস্যরা তথ্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গত ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের বাহার উদ্দিন, খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবদ চালায়। পুলিশের জিজ্ঞাসবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে পরে ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আদালতে হাজির করলে বাহার ও তাজরীন হবিগঞ্জের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুমুর সরকারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আসামিরা আদালতকে জানান, গ্রেপ্তার তাজরীনের ছোটভাই তাকবীর হাসানের সাথে প্রতিবেশি কিশোরী শান্তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল । সেই সুবাদে তারা দুজনের প্রায়ই দেখা সাক্ষাৎ করতেন। হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে এক সন্ধ্যায় শান্তা ও তাকবির দেখা করার সময় শিশু লিজা তাদেরকে একসাথে দেখে ফেলে শিশু লিজা শান্তার মাকে জানিয়ে দেয়।শাশান্তার মা শান্তাকে গালিগালাজ করেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। শান্তা ও তাকবির রাগে ও ক্ষোভে লিজাকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে জানা যায় গত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল আযহার দিন সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লিজাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা এবং তারা লিজাকে গলা টিপে হত্যা করে লাশ বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার বলেন, লিজা হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। এদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে খুব দ্রুতই লিজা হত্যাকান্ডের জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
Related