নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বগুড়া এডওয়ার্ড পার্কে খুনের ঘটনায় বগুড়া জেলা পুলিশের রুদ্ধশ্বাস অভিযানে ১২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত কথিত প্রেমিকসহ সকল আসামিকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশ। এসময় রক্তমাখা জ্যাকেটসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আজ বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২ ঘটিকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বগুড়ায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, বিপিএম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, বগুড়ায় প্রেম নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিরাজ হোসেন (২২) নামের এক যুবক খুনের ঘটনায় কথিত প্রেমিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ১৬ বছর হওয়ায় তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অপর দুইজন হলেন- সোনাতলা থানার নওদাবগা গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে তারেক রহমান (১৮) ও বগুড়া সদরের চক দুর্গা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মিঠুন (২৮)।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বগুড়া পৌর পার্কে প্রেম নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিরাজ হোসেন (২২) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এর পরপরই জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম মাঠে নামে খুনের সাথে জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করতে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুনের সাথে জড়িতদের সনাক্তের পর মঙ্গলবার রাতেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, শহরের বাদুড়তলা এলাকার এক মেয়ের সাথে মিরাজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে ফেসবুকে ওই মেয়ের সাথে পরিচয় সোনাতলা থানার নওদাবগা গ্রামের ১৬ বছর বয়সী ওই স্কুলছাত্রের। ওই মেয়ে মিরাজকে বাদ দিয়ে ওই স্কুলছাত্রের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ওই মেয়ের ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ছিল মিরাজের হাতে। যে কারণে তাকে ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকা নতুন প্রেমিকের সাথে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং মিরাজ প্রতিনিয়ত দেখতে থাকে। একপর্যায় মিরাজ ওই স্কুলছাত্রকে ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে।এই ত্রিভুজ প্রেম নিয়ে প্রেমিকার উপস্থিতিতে আলোচনা করতে চায় নতুন প্রেমিক ওই স্কুলছাত্র।
সেই অনুযায়ী প্রেমিকাসহ দুই পক্ষ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বগুড়া পৌর পার্কে আসার সময় ওই স্কুলছাত্র তার আরেক বন্ধু তারেক রহমানকে সাথে নিয়ে আসে। শহরের আসার পর তাদের আরেক বন্ধুকে না পেয়ে বন্ধুর বড় ভাই মিঠুনকে সাথে নিয়ে পৌর পার্কে যায়। সেখানে মিরাজ ও তার আরেক বন্ধু নাজমুল আগে থেকেই বসে ছিল। কিন্তু ওই মেয়ে সেখানে না আসায় তাদের মধ্যে প্রেম নিয়ে বাকবিতণ্ডা থেকে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এসময় মিঠুন প্যান্টের পকেট থেকে চাকু বের করে মিরাজকে উপুর্যপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়।পরে মিরাজের সাথে থাকা বন্ধু নাজমুল তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিএস/কেসিবি/সিটিজি/৫ঃ২৪পিএম