শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন
নিত্য-নতুন মাদক পাচারের পদ্ধতির অংশ হিসেবে এবার কচুর মুখীর ভিতরে সবজীর আড়ালে সর্বনাশা মাদক ইয়াবা পরিবহনের সময় ৩ মহিলা ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৭ঃ০৫ মিনিটের সময় হাটহাজারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃত আসামীরা হলেন, কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন দক্ষিণ রুমালিয়া ছড়া এলাকার হোসেন আহম্মদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওরফে মনু ওরফে আনোয়ারা (৪০) ও একই এলাকার আব্দুর রহিমের স্ত্রী হালিমা বেগম (৩২) এবং জসিম উদ্দিনের স্ত্রী আসমাউল হুসনা (২৬)।
র্যাব-৭, এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার জানান, রাঙ্গামাটি হতে সিএনজি যোগে মাদকের একটি বড় চালান চট্টগ্রামের দিকে আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী এলাকায় একটি চেকপোষ্ট স্থাপন করে গাড়ী তল্লাশী চালানো হয়। তল্লাশীর এক পর্যায়ে একটি সিএনজি থেকে নেমে তিন জন মহিলা সু-কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে র্যাব সদস্যরা তাদের আটক করে। পরে আসামীদের হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভিতরে কচুরমুখী নামক সবজির ভিতরে বিশেষ কায়দায় সংরক্ষিত অবস্থায় ১৮,৬০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ৫৬ লক্ষ টাকা।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই আপন বোন, যেখানে ফাতেমা এই অবৈধ মাদক ব্যবসা ও পাচারের পারিবারিক ব্যবসার মূল হোতা। তারা মোট ৮ বোন এবং সবাই মাদক (ইয়াবা) ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা এতই বিশেষজ্ঞ যে তারা তাদের ছোট বাচ্চাদের, এমনকি নিজের কন্যাদের ৫ মাস বয়সী বাচ্চাকেও নিয়ে গেছে, এটি প্রমান করার জন্য যে তারা পরিবারের সদস্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তারা মাদক বহনে অত্যন্ত দক্ষ এবং আইন প্রযোগকারী সংস্থার সমস্ত চেকপোস্ট এড়াতে একটি অনন্য পথ অনুসরণ করে। প্রথমে তারা সবজির উপরের অংশ (কচুরমুখী) কেটে ভিতরে খালি করে ইয়াবা লুকিয়ে রাখে, তারপর পলিথিনের ব্যাগে মুড়িয়ে ইয়াবা রাখে। তারপর টমেটো এবং অন্যান্য শাকসবজি নিয়ে যায়। তারা চকোরিয়া পর্যন্ত আসে তারপর পুলিশ ও অন্যান্য চেকপোস্ট এড়াতে ফাশিয়াখালী-লামা-আলীকদম-বিলছড়ি-লোহাগাড়া পথ অনুসরণ করে। পরে তারা সবাই সাতকানিয়ার কেরানিরহাটে এসে সেখান থেকে দুই দলে বিভক্ত হয়ে যায় যেখানে একটি দল নিয়মিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অনুসরণ করে এবং অন্যটি কেরানিরহাট-বান্দরবান-চন্দ্রঘোনা-রাঙ্গুনিয়া রুট অনুসরণ করে এবং হাটহাজারী পিএস পর্যন্ত কোনো সনাক্ত বা চেক ছাড়াই পৌঁছায়।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ রাঙ্গামাটি জেলা হতে ইয়াবা ট্যাবলেট স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে পরবর্তীতে তা বেশি মুনাফা লাভের আশায় চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার এবং ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট পাচার করে আসছে এবং উক্ত আসামীরা ইয়াবা পাচারে সবসময়ই নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে ইয়াবা পাচার করে আসছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএস/কেসিবি/সিটিজি/২ঃ১০পিএম