বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইসহাক ৬ বছর পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে র্যাবের হাতে আটক।
আজ সোমবার ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬ঃ০০ টার সময় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করার বিষয়ে র্যাব-৭ এর সিপিসি-৩, চান্দগাঁও ক্যাম্পে (বহদ্দারহাট) বিকাল ৪ঃ০০ টায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এম এ ইউসুফ।
আটককৃত আসামী মোঃ ইসহাক (২৭) চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন ফটিকা এলাকার মোঃ কামাল হোসেনের ছেলে।
অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ২০১৬ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় প্রবাসীর স্ত্রী ভিকটিম পারভিন আক্তার(৩৬) এর বাসায় তার ছেলে গৃহ শিক্ষককে দরজায় বিদায় গিয়ে বাসায় ঢুকার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ৪ জন লোক বাসায় ঢুকে ভিকটিম ও তার ছেলেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আলমিরার চাবি দিতে বলে। এসময় ভিকটিম পারভিন আক্তার চাবি না দিয়ে চিৎকার করার চেষ্ঠা করলে আসামীরা তখন ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে খাটিয়া হতে ফ্লোরে ফেলে দেয় এবং তার হাত, পা শাড়ির কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে এবং পারভিন আক্তারকে তাহার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে বাসা থেকে স্বর্ণলংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। উক্ত ঘটনায় নিহ্তের স্বামী মোঃ নুরুল আলম(৪৫) বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত আসামী ইয়াসিন, মনসুর এবং আবু তৈয়ব ওরফে রানা এর উপস্থিতিতে পলাতক আসামী ইসহাকসহ চার জনকে মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার পর হতে আসামী মোঃ ইসহাক সু-কৌশলে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ ৬ বছর আত্নগোপন করে থাকে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি যে মৃত্যদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ ইসহাক চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানাধীন সুলতানপুর এলাকায় অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামী অকপটে স্বীকার করে যে, সে ভিকটিম পারভিন আক্তার কে হত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো।
তিনি আরও বলেন, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম পারভিন আক্তার এর স্বামী মোঃ নুুরুল আলম ও তাহার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের যৌথ মালিকানায় বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন রৌফাবাদস্থ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে ৬ষ্ঠ তলা বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ে মামলার ১নং আসামী মোঃ ইয়াছিন দারোয়ান হিসাবে নিয়োজিত ছিল। ইয়াছিন মোঃ নুরুল আলমের দুসম্পর্কের ভাগিনাও । মোঃ নুুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর আবুধাবীতে ব্যবসা করেন। আব্দুস শুক্কুর স্ব উদ্যেগে ইয়াসিনকে বিদেশ নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুস শুক্কুরের সাথে ইয়াসিনের মনোমালিন্য হলে ইয়াসিন দেশে চলে আসে এবং মোঃ নুুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুর এর উপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং তাদের ক্ষতি করার জন্য তার বন্ধু মোঃ মনসুর(২৫) এর সাথে পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তাদের পরিকল্পনা মতে তাদের অপর দুই সহযোগী মোঃ আবু তৈয়ব ওরেফ রানা (২৪) এবং মোঃ ইসহাক(২৭) সহ পারভিন আক্তার(৩৬)কে তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
বিএস/কেসিবি/সিটিজি/৭ঃ১০পিএম