মাহবুবুর রহমান রানা সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
- বুধবার ১১ মে, ২০২২ / ২৯ জন দেখেছেন
মানিকগঞ্জে সাটুরিয়ায় কৃষকের মাথায় হাত।পাঁকা ধানে পোকা লাগায় অনেকে কাঁচা ধানই কাটছেন কৃষকরা। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে এ পোকার আক্রমন শুরু হলে এক পর্যায়ে পুরো আবাদী জমির ধান পুড়ে যায়। ফলে কৃষকরা কাঁচা ধানই কাটতে বাধ্য হচ্ছেন।কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে কোন সহযোগিতা না পেয়ে ক্ষোপ প্রকাশ করছেন কৃষকরা।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগে বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা বেশী থাকার কারণে বাদামী ঘাসফরিৎ নামে এক জাতের পোকা লেগেছে। এ পোকা গাছের গোড়া ও আগা কেটে ফেললে পাতা লাল হয়ে মরগ ধরে। এ বিয়য়ে সাটুরিয়ার কৃষকদের লিফলেট বিতরণ করে প্লেনাম, মিপসিম ও সামসিম কীটনাশক স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষি কর্মকর্তার অভিয়োগ কৃষকদের এ পরামর্শ দেওয়ার পরও তারা স্প্রে করছেন না। ফলে কিছু কিছু আবাদী জমিতে বাদামী রংয়ের ঘাসফরিৎ পোকা লাগায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ৫ হাজার ৬শত ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ইরির আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে কৃষি অফিসের তথ্যমতে ৫ একর জমিতে এ পোকার আক্রমন হয়েছে। কৃষকের অভিযোগ উপজেলার পুরো এলাকায় এ পোকার আক্রমন শুরু হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ ঈদের ছুটিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বাড়িতে থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরছে কৃষকরা।
কৃষক তোতামিয়ার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কারেন্ট পোকা নামে এক ধরনের নতুন পোকার আগমন হলে আমার কাঁচা ধান ক্ষেত পুরে যায়। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় আমার কাাঁচা ধানই কেটে ফেলতে হয়েছে। সময়মতো কৃষি অফিসের পরামর্শ পেলে হয়তো পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়া যেত বলে মনে করেন কৃষকরা।
দরগ্রামের কৃষক হামিদ ও দেলুয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর আবাদী বোরো ধানে পোকা লাগলে তারা কাঁচা ধানই কেটে নিয়েছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন লাভ না হওয়ায় তারা ধান কেটে ফেলেন।
কৃষক জামান হোসেন, শামীম হোসেন ও কুদ্দুস মিয়া জানান, একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে ধান কাটার শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় বিপাকে পরেছে কৃষকরা। এক হাজার টাকা থেকে ১২ শত টাকা দিয়ে শ্রমিক এনে কাঁচা ধান কাটতে হচ্ছে। ফলে এক বিঘা ধান কাটতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান।
রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত কৃষক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ.খ.ম নুরুল হক জানান, একটি পোকা ধরে এনে বোতলে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। পোকার আকৃতি ছোট ও কালো রংয়ের। এ বিষয়ে সাটুরিয়ার কৃষি অফিসের কৃষি কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কোন তথ্যই জানেন না বলে তিনি জানান। এমনকি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকের সাথে কোন যোগাযোগও করছেন না বলে কৃষকদের অভিযোগ।
সাটুরিয়ার কৃষি কর্মকর্তা মো. খলিলুল রহমান বলেন, পোঁকার আক্রমন ও কাঁচা ও পাঁকা ধানের পোকা আক্রন্তের কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় ২৭ জন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাঠে রয়েছেন কৃষকদের দেখভাল করার জন্য।
এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সমসময় মাঠে কৃষকদের নিয়ে কাজ করছেন। তার তথ্যমতে ঘাসফরিৎ নামে এক জাতের পোকার আক্রমনের তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু ধানের খোসা আছে ভেতরে চাল নেই এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
Related