সাইফুল ইসলাম ক্রাইম রিপোর্টোর শরীয়তপুর
- বৃহস্পতিবার ১২ মে, ২০২২ / ৯২ জন দেখেছেন
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় শ্বশুর বাড়ি থেকে মনিকা ইসলাম (২০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে মনিকার শ্বশুরবাড়ি বিকেনগর ইউনিয়নের সোবাহান মাদবরকান্দি গ্ৰামের চানমিয়া শেখের বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মনিকার পরিবারের অভিযোগ স্বামী রিপন শেখ তার মা এবং তার ভাগনী ঝর্নার প্ররোচনায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। আজ বুধবার দুপুর ২ টায় মনিকার ময়নাতদন্ত সম্পর্ন হয়।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিন্টু মন্ডল আজ দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানান, মনিকা ইসলাম (২০), জাজিরা উপজেলার, পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের শব্দের ফকিরের কান্দি গ্রামের মোস্তফা চৌকিদারের বড় মেয়ে, ৩ বছর আগে জাজিরা উপজেলার বি কে নগর ইউনিয়নের চান মিয়া শেখের ছেলে রিপন শেখের (৩৫) সাথে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। রিপন পরিবারের অসম্মতিতে মনিকাকে পছন্দ করে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে পারিবারিক কলহ শুরু হয় মনিকার। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার রিপনের পরিবারের সাথে পারিবারিক শালিশ বৈঠক করে মনিকার পরিবার। মনিকার স্বামী মালেশিয়ান প্রবাসী। বিয়ের ২ বছর পর স্বামী রিপন মালয়েশিয়ায় চলে যান। স্বামীর অবর্তমানে মনিকা তার বাবার বাড়ি থাকতেন।
৪ মাসের ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছেন ৩ মাস হলো। স্বামী দেশে আসলে মনিকা শ্বশুর বাড়ি চলে আসেন। এরপর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে আবারো বিরোধ তৈরি হয় মনিকার।
তিনি আরো জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রিপনের বাসার মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজন প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ করেছে, মনিকার শ্বশুর বাড়ি লোকজন তাকে হত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এ বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন তারা হত্যা মামলা দায়ের করবেন।
মনিকার বাবা মোস্তফা চৌকিদার বলেন, ৩ বছর আগে রিপনের সাথে আমার মেয়ে মনিকার বিয়ে হয়। রিপনের বাবা আর রিপন ছাড়া কেউই এই বিয়েতে রাজি ছিল না। বিয়ের পর থেকে রিপনের মা ও রিপনের ভাগ্নি প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করতো, মানসিক যন্ত্রণা দিতে। বিয়ের পর রিপন মালয়েশিয়া চলে গেলে আমার মেয়ে আমার বাড়িতেই থাকতো।
গতকাল রাতে রিপনের পরিবারের লোকজন খবর দেয় আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে আমরা বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের মেঝেতে আমার মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরিকল্পিতভাবে রিপনের তার মা ভাগ্নি প্ররোচনায় পরিবারের সবাইকে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
ঘটনার পর থেকে রিপনের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে। রিপনের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
Related