'মশিউর রহমান ' জামালপুর
- রবিবার ২২ মে, ২০২২ / ৬৬ জন দেখেছেন
বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীক ২২ মে রবিবার দুপুরে জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার তাঁকে বীর প্রতীক উপাধীতে ভূষিত করেন।
উল্লেখ্য, সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল ৩১ জানুয়ারি, ১৯৫০ সালে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার দুরমূঠ (সাহেব বাড়ি) গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ বদরুজ্জামান এবং মায়ের নাম সৈয়দা খোদেজা জামান। তাঁর স্ত্রীর নাম সৈয়দা সাহানা জামান। তাঁর এক ছেলে, দুই মেয়ে।
১৯৭১ সালে কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন সৈয়দ সদরুজ্জামান। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৯ বছর।
মা-বাবার অনুমতি নিয়েই তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে ১১ নম্বর সেক্টরের মহেন্দ্রগঞ্জ সাব সেক্টরের একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কামালপুরসহ আরও কয়েক স্থানের যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ও তাঁর দলের মুক্তিযোদ্ধারা সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের মাধ্যমে যুদ্ধ করেন।
১৯৭১ সালের ৯ আগস্ট জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্রাজোড় ইউনিয়নের অন্তর্গত উঠানো পাড়ায় সৈয়দ সদরুজ্জামানের নেতৃত্বে এক দল মুক্তিযোদ্ধা সেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য অ্যামবুশ তৈরি করে। ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা উঠানিপাড়ায় অ্যামবুশ আক্রমনে যোগ দেন। দিনের বেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ভারত থেকে এসে অবস্থান নেয় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন সৈয়দ সদরুজ্জামান। অদূরে ছিলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থান। সেই অবস্থানকে ঘিরে অবস্থান নেয় মুক্তিযোদ্ধাদের আরও কয়েকটি দল। রাতে সৈয়দ সদরুজ্জামানের দলের অবস্থানের দিকে এক দল পাকিস্তানি সেনা এগিয়ে আসলে শুরু হয় যুদ্ধ। ১০ মিনিটের বেশি সময় সম্মুখযুদ্ধের ফলে পাকবাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। কামালপুরে মোট ১৮ বার আক্রমণ করা হয়। এরমধ্যে ১৪ বার আক্রমণে ছিলেন সৈয়দ সদরুজ্জামান। সেদিন যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৭ জন হতাহত হয় ও ২ জন রাজাকার হাতিয়ারসহ ধরা পড়ে । সৈয়দ সদরুজ্জামানের ডাক নাম হেলাল। তাই তার নাম অনুসারে কোম্পানির নাম হয় হেলাল কোম্পানি। হেলাল কোম্পানির সবমোট ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য খেতাবও পেয়েছেন। এক কোম্পানির ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা খেতাব পাওয়া এটা একটা রেকর্ড।
স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।
Related