১১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

নওগাঁয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন ও ঠিকাদারকে মারপিটের অভিযোগ

এ.বি.এম.হাবিব
বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় নওগাঁয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম ফজলে রাব্বির সাথে  অসৌজন্যমুলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড সদস্যের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তিনি মঙ্গলবার (১ আগষ্ট) বেলা ১২টায় জেলা পরিষদ অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর আগের দিন সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলা পরিষদের চত্বরে গালিগালাজ ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে একেএম ফজলে রাব্বি বলেন- ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) এর আওতায় তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা বাৎসরিক বরাদ্দ আসে। এর অনুকুলে ছয় আসনের সংসদ সদস্য পরিপত্রের নির্দেশনা মোতাবেক ১৩০ টি প্রকল্প দাখিল করে। এ নিয়ে সোমবার জেলা পরিষদের হলরুমে মাসিক আলোচনা সভা হয়। আলোচনার মুল বিষয়বস্তু ছিল প্রকল্প সমূহের প্রস্তাব প্রেরণ। কিন্তু জেলা পরিষদের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন সদস্য ১১৩ টি প্রকল্প আমার নিকট দাখিল করে এবং তারা নিজেরাই সেসব প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠাবে বলে জানায়। যা ছিল তাদের অযৌক্তিক দাবী এবং বিধি বর্হিভূত।
তিনি বলেন- তাদের দাবী মেনে না নেওয়ায় হলরুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে পরিষদ চত্বরে ওয়ার্ড সদস্য রাহেলা চৌধূরী, জাকিয়া ও জাকিরসহ কয়েকজন হৈ-চৈ করা সহ অশালীন আচরণ এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে তারাই মুঠোফোনে বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারি ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলমকে টানা হেচড়া সহ মারপিট করে এবং উল্টো তার বিরুদ্ধেই আক্রমণ কারীরা মামলা করে। তারা অহেতুক পেশিশক্তি প্রয়োগ করে তাদের অযৌক্তিক কাজ হাসিল করার চেষ্টা করেছে। আমার কোন লোকজন তাদের হুমকি বা মারধরের ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলনা। বরং তারা বহিরাগতদের নিয়ে এসে মারপিটে সাথে সম্পৃক্ত হয় এবং গালিগালাজ করে। এ ব্যাপারে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো বলে তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন- রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হতে পারে। যেখানে আমাকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। কারণ আমি যেনো জেলা পরিষদ থেকে বেরিয়ে আগামী সংসদ সদস্যের মনোনয়ন না পাই।
৬ নম্বর ওয়ার্ড(বদলগাছী উপজেলা) সদস্য রাহেলা চৌধূরী বলেন, আমাদের মাসিক সভায় জেলা পরিষদের হলরুমে চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা হয়। সেখানে সংসদ সদস্য এবং আমরা যেসব প্রকল্পের নাম দিয়েছিলাম তা যেন সমন্বয় করে দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা না শুনে বার বার বেরিয়ে যেতে বলছিলেন। পরে হলরুম থেকে বেরিয়ে এসে আমরা প্রতিবাদ করি এবং কিছু উচ্চবাচ্য কথা বলেছি। সেখানে আমরা কাউকে মারধর করিনি। বরং চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং মারধর করেছে। তবে এডিপি প্রকল্ডের কাজ জোর করে পাশ করে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি সঠিক না এবং আমরা বাহিরের কোন লোকজন নিয়ে আসিনি।
১০ নম্বর ওয়ার্ড(রানীনগর উপজেলা) সদস্য জাকির হোসেন বলেন, আলোচনা সভা বর্জন করে টয়লেট যায়। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি আমাকে চড়থাপ্পর ও কিলঘুষি দেওয়া সহ হত্যার হুমকি দেয়। পরে আমাকে একটি কক্ষের ভেতরে নিয়ে গালিগালাজ করা হয়। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলমের নামে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন- আমার ঠিকাদার লাইসেন্সের নবায়ন করার জন্য জেলা পরিষদে গিয়েছিলাম। এসময় দেখছি কয়েকজন ওয়ার্ড সদস্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। আমি শুধু তাদের জানায় সংযত হয়ে কথা বলতে। একথা বলায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং মুঠোফোনে কয়েকজন বহিরাগতকে ডেকে নিয়ে আসে। আমি মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যেতে চাইলে ওয়ার্ড সদস্য জাকিয়া সহ কয়েকজন আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে। তারা আমাকে মারধর করে এবং উল্টো আমার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। এ ঘটনায় আমিও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান।
ট্যাগস :
আপডেট : ০৮:০৭:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
১১৭ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন ও ঠিকাদারকে মারপিটের অভিযোগ

আপডেট : ০৮:০৭:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩
বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় নওগাঁয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম ফজলে রাব্বির সাথে  অসৌজন্যমুলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড সদস্যের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তিনি মঙ্গলবার (১ আগষ্ট) বেলা ১২টায় জেলা পরিষদ অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর আগের দিন সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলা পরিষদের চত্বরে গালিগালাজ ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে একেএম ফজলে রাব্বি বলেন- ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) এর আওতায় তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা বাৎসরিক বরাদ্দ আসে। এর অনুকুলে ছয় আসনের সংসদ সদস্য পরিপত্রের নির্দেশনা মোতাবেক ১৩০ টি প্রকল্প দাখিল করে। এ নিয়ে সোমবার জেলা পরিষদের হলরুমে মাসিক আলোচনা সভা হয়। আলোচনার মুল বিষয়বস্তু ছিল প্রকল্প সমূহের প্রস্তাব প্রেরণ। কিন্তু জেলা পরিষদের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন সদস্য ১১৩ টি প্রকল্প আমার নিকট দাখিল করে এবং তারা নিজেরাই সেসব প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠাবে বলে জানায়। যা ছিল তাদের অযৌক্তিক দাবী এবং বিধি বর্হিভূত।
তিনি বলেন- তাদের দাবী মেনে না নেওয়ায় হলরুম থেকে বেরিয়ে গিয়ে পরিষদ চত্বরে ওয়ার্ড সদস্য রাহেলা চৌধূরী, জাকিয়া ও জাকিরসহ কয়েকজন হৈ-চৈ করা সহ অশালীন আচরণ এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে তারাই মুঠোফোনে বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারি ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলমকে টানা হেচড়া সহ মারপিট করে এবং উল্টো তার বিরুদ্ধেই আক্রমণ কারীরা মামলা করে। তারা অহেতুক পেশিশক্তি প্রয়োগ করে তাদের অযৌক্তিক কাজ হাসিল করার চেষ্টা করেছে। আমার কোন লোকজন তাদের হুমকি বা মারধরের ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলনা। বরং তারা বহিরাগতদের নিয়ে এসে মারপিটে সাথে সম্পৃক্ত হয় এবং গালিগালাজ করে। এ ব্যাপারে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো বলে তিনি জানান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন- রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে। আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হতে পারে। যেখানে আমাকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। কারণ আমি যেনো জেলা পরিষদ থেকে বেরিয়ে আগামী সংসদ সদস্যের মনোনয়ন না পাই।
৬ নম্বর ওয়ার্ড(বদলগাছী উপজেলা) সদস্য রাহেলা চৌধূরী বলেন, আমাদের মাসিক সভায় জেলা পরিষদের হলরুমে চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা হয়। সেখানে সংসদ সদস্য এবং আমরা যেসব প্রকল্পের নাম দিয়েছিলাম তা যেন সমন্বয় করে দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা না শুনে বার বার বেরিয়ে যেতে বলছিলেন। পরে হলরুম থেকে বেরিয়ে এসে আমরা প্রতিবাদ করি এবং কিছু উচ্চবাচ্য কথা বলেছি। সেখানে আমরা কাউকে মারধর করিনি। বরং চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং মারধর করেছে। তবে এডিপি প্রকল্ডের কাজ জোর করে পাশ করে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি সঠিক না এবং আমরা বাহিরের কোন লোকজন নিয়ে আসিনি।
১০ নম্বর ওয়ার্ড(রানীনগর উপজেলা) সদস্য জাকির হোসেন বলেন, আলোচনা সভা বর্জন করে টয়লেট যায়। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি আমাকে চড়থাপ্পর ও কিলঘুষি দেওয়া সহ হত্যার হুমকি দেয়। পরে আমাকে একটি কক্ষের ভেতরে নিয়ে গালিগালাজ করা হয়। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলমের নামে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন- আমার ঠিকাদার লাইসেন্সের নবায়ন করার জন্য জেলা পরিষদে গিয়েছিলাম। এসময় দেখছি কয়েকজন ওয়ার্ড সদস্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। আমি শুধু তাদের জানায় সংযত হয়ে কথা বলতে। একথা বলায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং মুঠোফোনে কয়েকজন বহিরাগতকে ডেকে নিয়ে আসে। আমি মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যেতে চাইলে ওয়ার্ড সদস্য জাকিয়া সহ কয়েকজন আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে। তারা আমাকে মারধর করে এবং উল্টো আমার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। এ ঘটনায় আমিও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান।