০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

নগরকান্দায় পাটের ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি, পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায়

আবু নাছির

 

ফরিদপুরের নগরকান্দায় চলতি মৌসুমে পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার জন্য ব্য¯ত্ম সময় পার করছেন কৃষকেরা। ২০ ও ২১ জুলাই সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চরযশোরদী, কাইচাইল, ফুলসূতি, ডাঙ্গী, কোদালিয়া শহিদ নগর, তালমা, পুরাপাড়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার জন্য ব্য¯ত্ম সময় পার করছে চাষীরা। কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় এ বছর পাট আবাদের সময় প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও, পরবর্তীতে সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, ন্যায্য দামের স্বপ্ন দেখছেন তারা। তবে খাল বিলে পানি না আসায় পাট জাগ দিতে ভোগাšিত্মতে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। পানির অভাবে জমি থেকে পাট কেটে মাথায় করে অন্যত্র নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে তাদের। এবারে পাটের ফলন ভালো হলেও উৎপাদন ও পরিবহন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতায় শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নগরকান্দা উপজেলায় ১১ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। আর গত বছরে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিল। মৌসুমের শুরম্নতে, সময় মত বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক চাষি সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন। এ কারণে গেল বছরের তুলনায় এবার চাষ তুলনা মূলক কম হয়েছে। এবারে পাট চাষে ভাইরাস বা ক্ষতিকর পোকার সংক্রমণের তেমন সমস্যা না থাকলেও শেষ দিকে এসে পাট জাগে দেরি হওয়াতে পাট মারা যাওয়া পাটের আগা পুড়ে যাওয়ার, পাটের গোড়া পচার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। কৃষি অফিসের তথ্যসূত্রে এখন পর্যšত্ম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাটের গোড়া পচা, আগা মরা রোগ দ্বারা আক্রাšত্ম জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ হেক্টর। তবে এখনই যদি কৃষকেরা পাট জাগ দিয়ে ফেলেন তাহলে আর তেমন কোন ক্ষতি হবে না কৃষকদের এমনটাই আশ্ব¯ত্ম করছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা। কয়েকটি গ্রামের পাট চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঠিক সময়ে আষাঢ়ের বৃষ্টি না পেয়ে পাট জাগ দিতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের। সবাই এখন পাট কেটে জাগ দেওয়ার জন্য খালে-বিলে ডোবায়, নালায় জমা হচ্ছে। পাট পরিপক্ক হওয়ায় তাড়াতাড়ি করে পাট কাটা শুরম্ন করেছেন।

বাজারে পাটের দাম ভালো হলে এ বছর বেশ লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা। এ দিকে চরযশোরদী ইউনিয়নের পাট চাষি হান্নান মোল্যা বলেন, মৌসুমের শুরম্নতে বৃষ্টি না হলেও কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে পাটের আবাদ খুব সুন্দর হয়েছে। এখন আমরা পাট কাটছি তার পর জাগ দিব। অন্যদিকে ডাঙ্গী ইউনিয়ের পাট চাষী সেকেন বলেন, এবার আমাগো পাটের ফলন ভালো হইছে, কিন্তু এখন আমরা পাট কেটে জাগ দিয়া নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কোন পানি নাই কৃষাণ ভাড়া কইরা মেলা দূরে নিয়া জাগ দিতে হয় এবং একদিনে একটা কৃষান ৬০,৭০ মোঠা মাঠ কাটে পানি না হওয়ায় পাটের ভিতর কিষে যানো কামড়ায় ১টা কৃষান যে পাঠ কাটে তাতে তাদেরই সব দেওয়া লাগবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোষ জানান, এ বছর পাটের রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। তাই এবার পাটের ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি। তবে কৃষকেরা পাটজাগ নিয়ে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে পদ্মার পানি বাড়লে সেটা দ্রম্নতই সমাধান হবে আশা করছি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পাট চাষে চাষীরা আগামীতে আরও বেশি আবাদ করবে।

ট্যাগস :
আপডেট : ০১:৪১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩
১৭৬ বার পড়া হয়েছে

নগরকান্দায় পাটের ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি, পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায়

আপডেট : ০১:৪১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩

 

ফরিদপুরের নগরকান্দায় চলতি মৌসুমে পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার জন্য ব্য¯ত্ম সময় পার করছেন কৃষকেরা। ২০ ও ২১ জুলাই সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চরযশোরদী, কাইচাইল, ফুলসূতি, ডাঙ্গী, কোদালিয়া শহিদ নগর, তালমা, পুরাপাড়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়ার জন্য ব্য¯ত্ম সময় পার করছে চাষীরা। কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় এ বছর পাট আবাদের সময় প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও, পরবর্তীতে সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে, ন্যায্য দামের স্বপ্ন দেখছেন তারা। তবে খাল বিলে পানি না আসায় পাট জাগ দিতে ভোগাšিত্মতে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। পানির অভাবে জমি থেকে পাট কেটে মাথায় করে অন্যত্র নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে তাদের। এবারে পাটের ফলন ভালো হলেও উৎপাদন ও পরিবহন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যের অসমতায় শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নগরকান্দা উপজেলায় ১১ হাজার ৭০৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। আর গত বছরে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিল। মৌসুমের শুরম্নতে, সময় মত বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক চাষি সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন। এ কারণে গেল বছরের তুলনায় এবার চাষ তুলনা মূলক কম হয়েছে। এবারে পাট চাষে ভাইরাস বা ক্ষতিকর পোকার সংক্রমণের তেমন সমস্যা না থাকলেও শেষ দিকে এসে পাট জাগে দেরি হওয়াতে পাট মারা যাওয়া পাটের আগা পুড়ে যাওয়ার, পাটের গোড়া পচার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। কৃষি অফিসের তথ্যসূত্রে এখন পর্যšত্ম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাটের গোড়া পচা, আগা মরা রোগ দ্বারা আক্রাšত্ম জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ হেক্টর। তবে এখনই যদি কৃষকেরা পাট জাগ দিয়ে ফেলেন তাহলে আর তেমন কোন ক্ষতি হবে না কৃষকদের এমনটাই আশ্ব¯ত্ম করছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা। কয়েকটি গ্রামের পাট চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঠিক সময়ে আষাঢ়ের বৃষ্টি না পেয়ে পাট জাগ দিতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের। সবাই এখন পাট কেটে জাগ দেওয়ার জন্য খালে-বিলে ডোবায়, নালায় জমা হচ্ছে। পাট পরিপক্ক হওয়ায় তাড়াতাড়ি করে পাট কাটা শুরম্ন করেছেন।

বাজারে পাটের দাম ভালো হলে এ বছর বেশ লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা। এ দিকে চরযশোরদী ইউনিয়নের পাট চাষি হান্নান মোল্যা বলেন, মৌসুমের শুরম্নতে বৃষ্টি না হলেও কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে পাটের আবাদ খুব সুন্দর হয়েছে। এখন আমরা পাট কাটছি তার পর জাগ দিব। অন্যদিকে ডাঙ্গী ইউনিয়ের পাট চাষী সেকেন বলেন, এবার আমাগো পাটের ফলন ভালো হইছে, কিন্তু এখন আমরা পাট কেটে জাগ দিয়া নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কোন পানি নাই কৃষাণ ভাড়া কইরা মেলা দূরে নিয়া জাগ দিতে হয় এবং একদিনে একটা কৃষান ৬০,৭০ মোঠা মাঠ কাটে পানি না হওয়ায় পাটের ভিতর কিষে যানো কামড়ায় ১টা কৃষান যে পাঠ কাটে তাতে তাদেরই সব দেওয়া লাগবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোষ জানান, এ বছর পাটের রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। তাই এবার পাটের ফলন ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি। তবে কৃষকেরা পাটজাগ নিয়ে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে পদ্মার পানি বাড়লে সেটা দ্রম্নতই সমাধান হবে আশা করছি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে পাট চাষে চাষীরা আগামীতে আরও বেশি আবাদ করবে।