১০:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

নিখোঁজের একুশ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরল ঠাকুরগাঁওয়ের মতিউর রহমান 

মজহারুল ইসলাম বাদল, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
দীর্ঘ ২১ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরল ঠাকুরগাঁওয়ের মতিউর রহমান। শুক্রবার বিকেলে ভারতের দিল্লি থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে পিতা মাতার কাছে ফিরেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২ নং আখানগর ইউনিয়নের ঝারগাঁও (দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান (৩৬)।
এর আগেও দেশে আসার প্রস্তুতি থাকলেও ফেরত আসতে পারে নি  মতিউর রহমান মতি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর বয়সে হারিয়ে যান মতি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও পাওয়া যায়নি তাকে। অবশেষে ২১ বছর পরে সেই ছেলেকে ফিরে পেল তার  মা-বাবা। মতিউর ২০০২ সাল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। শুক্রবার  ভারতের দিল্লি থেকে পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন মতিউর । এসময় মতিউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়িতে আসেন ভারতের মানবসেবা সংস্থা শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ডাঃ সোরালী কে কুনইন্ডিলকার এবং তার সহকারী নিতিশ শর্মা।
দীর্ঘ অপেক্ষায় বাবা শহিদুল ইসলাম ও মা মর্জিনা বেগম বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে হারানো সন্তান মতিউর রহমান ফিরে আসে ।
ঠাকুরগাঁওয়ের আখানগর ইউনিয়নের ঝারগাঁও(দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও মর্জিনা বেগমের বড় ছেলে মো: মতিউর রহমান। তার জন্ম ১৯৮৭ সালে।
শহিদুল ইসলাম জানান, ২০০২ সালে ছেলে হারানোর পরে থানায় জিডি করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছেলেকে খুঁজলেও মিলেনি।
কিছু দিন আগে খবর পাই আমার ছেলে ভারতে রয়েছে তারপর শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা আমার ছেলে মতিউর রহমানকে বাড়িতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তিনি  বলেন, এর আগেও  তার ছেলে মতিউর দেশে ফেরার কথা ছিল কিন্তু কাগজপত্র সমস্যা সংক্রান্ত কারণে ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন তাকে ফিরতে দেয়নি। আজকে সন্তানকে ফেরত পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি।
ঝারগাঁও গ্রামের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির বিপ্লব বলেন দীর্ঘ ২১ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন মতিউর রহমান, আজকে তাকে পেয়ে তার পরিবার সহ এলাকাবাসী অনেক আনন্দিত হয়েছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রোমান বাদশা জানান, ইউনিয়নের ঝারগাঁও (দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান প্রায় ২১ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কিছু দিন পরে জানা যায় ভারতে রয়েছে মতিউর রহমান পরে সে দেশের একটা মানবসেবা সংস্থা শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন মতিউর রহমান এর সন্ধান দেন এবং দেশে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করেন। তিনি আরও বলেন আজকে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন এর জন্য নিখোঁজ মতিউর রহমানকে ফিরে পেলেন তার পিতা- মাতা এজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
এ সময় মতিউর রহমান বলেন, আমি কেমন করে যেন বাড়ি থেকে ভারতে চলে যাই সেটা মনে নেই তবে সেখানে আমি  মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাই তারপর একটি সংস্থা আমাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে এবং তাদেরকে আমি আমার বাড়ির ঠিকানা দিলে সেই সংস্থাটি আমাকে আজ বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসে।
মতিউর রহমান এর সাথে আসা ভারতের মানবক সেবা সংস্থা  শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ডাঃ সোরালী কে কুইন্ডিকার বলেন আমরা (শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন) আমাদের দেশে মানসিক প্রতিবন্ধী সহ রাস্তায় পরে থাকা অসুস্থ মানুষকে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি এবং তারপর রোগীর পরিচয় পেলে তার পরিবারের মাঝে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ করি। তিনি বলেন ঠিক তেমনই মতিউর রহমান ভারতের মুম্বাইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ভাবে  আমরা পেয়েছিলাম, তাকে আমাদের সংস্থায় নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করি। তিনি বলেন গত বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মতিউর রহমানের ঠিকানা বললে তারা বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার সন্ধান দেন তারপরেই আমরা মতিউর রহমানকে তার দেশে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ করতে থাকি এবং অবশেষে আজকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত বোধ করছি।
ট্যাগস :
আপডেট : ০১:৩৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩
৮২ বার পড়া হয়েছে

নিখোঁজের একুশ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরল ঠাকুরগাঁওয়ের মতিউর রহমান 

আপডেট : ০১:৩৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩
দীর্ঘ ২১ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরল ঠাকুরগাঁওয়ের মতিউর রহমান। শুক্রবার বিকেলে ভারতের দিল্লি থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে পিতা মাতার কাছে ফিরেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২ নং আখানগর ইউনিয়নের ঝারগাঁও (দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান (৩৬)।
এর আগেও দেশে আসার প্রস্তুতি থাকলেও ফেরত আসতে পারে নি  মতিউর রহমান মতি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর বয়সে হারিয়ে যান মতি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও পাওয়া যায়নি তাকে। অবশেষে ২১ বছর পরে সেই ছেলেকে ফিরে পেল তার  মা-বাবা। মতিউর ২০০২ সাল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। শুক্রবার  ভারতের দিল্লি থেকে পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন মতিউর । এসময় মতিউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়িতে আসেন ভারতের মানবসেবা সংস্থা শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ডাঃ সোরালী কে কুনইন্ডিলকার এবং তার সহকারী নিতিশ শর্মা।
দীর্ঘ অপেক্ষায় বাবা শহিদুল ইসলাম ও মা মর্জিনা বেগম বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে হারানো সন্তান মতিউর রহমান ফিরে আসে ।
ঠাকুরগাঁওয়ের আখানগর ইউনিয়নের ঝারগাঁও(দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও মর্জিনা বেগমের বড় ছেলে মো: মতিউর রহমান। তার জন্ম ১৯৮৭ সালে।
শহিদুল ইসলাম জানান, ২০০২ সালে ছেলে হারানোর পরে থানায় জিডি করেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছেলেকে খুঁজলেও মিলেনি।
কিছু দিন আগে খবর পাই আমার ছেলে ভারতে রয়েছে তারপর শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা আমার ছেলে মতিউর রহমানকে বাড়িতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তিনি  বলেন, এর আগেও  তার ছেলে মতিউর দেশে ফেরার কথা ছিল কিন্তু কাগজপত্র সমস্যা সংক্রান্ত কারণে ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন তাকে ফিরতে দেয়নি। আজকে সন্তানকে ফেরত পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি।
ঝারগাঁও গ্রামের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির বিপ্লব বলেন দীর্ঘ ২১ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন মতিউর রহমান, আজকে তাকে পেয়ে তার পরিবার সহ এলাকাবাসী অনেক আনন্দিত হয়েছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রোমান বাদশা জানান, ইউনিয়নের ঝারগাঁও (দেবীডাঙ্গা) গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মতিউর রহমান প্রায় ২১ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কিছু দিন পরে জানা যায় ভারতে রয়েছে মতিউর রহমান পরে সে দেশের একটা মানবসেবা সংস্থা শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন মতিউর রহমান এর সন্ধান দেন এবং দেশে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ করেন। তিনি আরও বলেন আজকে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন এর জন্য নিখোঁজ মতিউর রহমানকে ফিরে পেলেন তার পিতা- মাতা এজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
এ সময় মতিউর রহমান বলেন, আমি কেমন করে যেন বাড়ি থেকে ভারতে চলে যাই সেটা মনে নেই তবে সেখানে আমি  মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাই তারপর একটি সংস্থা আমাকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে এবং তাদেরকে আমি আমার বাড়ির ঠিকানা দিলে সেই সংস্থাটি আমাকে আজ বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসে।
মতিউর রহমান এর সাথে আসা ভারতের মানবক সেবা সংস্থা  শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ডাঃ সোরালী কে কুইন্ডিকার বলেন আমরা (শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশন) আমাদের দেশে মানসিক প্রতিবন্ধী সহ রাস্তায় পরে থাকা অসুস্থ মানুষকে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি এবং তারপর রোগীর পরিচয় পেলে তার পরিবারের মাঝে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ করি। তিনি বলেন ঠিক তেমনই মতিউর রহমান ভারতের মুম্বাইয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ভাবে  আমরা পেয়েছিলাম, তাকে আমাদের সংস্থায় নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করি। তিনি বলেন গত বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মতিউর রহমানের ঠিকানা বললে তারা বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার সন্ধান দেন তারপরেই আমরা মতিউর রহমানকে তার দেশে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় কাজ করতে থাকি এবং অবশেষে আজকে তার বাড়িতে পৌঁছে দিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত বোধ করছি।