০৮:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

বয়স্ক বিধবা ভাতা দেয়ার নামে আমিরুলের বানিজ্য

প্রতিনিধির নাম
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের লিডার আমিরুলের বিরুদ্ধে বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি মাতৃকালীন ভাতার কার্ড দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর এলাকার একাধিক বয়স্ক বিধবার নিকট থেকে এই অর্থ হাতিয়ে নেয়ায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।সোহাগপুর গ্রামের ফিরোজা খাতুন জানান, সে তার স্বামী মজিবার রহমানের জন্য একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডে জন্য তথা কথিত নেতা আমিরুল ৪৫০০ টাকা চাই। আমিরুল বলে টাকা ছাড়া কার্ড হয় না। টাকা দিলাম কিন্তু এখন সে টাকাও দেয় না কার্ড ও দেয় না।
আমার দুই ছেলেই স্রোবন প্রতিবন্ধি। আমার ছেলের  প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেবে বলে টাকা চাই।  দালাল আমিরুলের ক্ষপরে পড়ে আমি ৭০০০ টাকা দিয়। আজ নয় কাল নয় বলে অনেক দিন যাবৎ আমাকে ঘুরায়। কার্ড যখন আর না হলো খুব ঘুরা ঘুরি করলে ছয় হাজার টাকা ফেরত দেয় এখনো আমি এই আমিরুলের কাছে ১০০০ এক হাজার টাকা পাবো বলে জানান সোহাগপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহবধূ।
সোহাগপুর গ্রামের মৃত্যু গোলাম খাঁ চান্দা এর স্ত্রী এক হতভাগী মর্জিনা খাতুন জানান,আমার স্বামী নেই, অনেক কষ্ট করে আমার সংসার চালাই। আমার একটি ভাতার কার্ডের জন্য অনেক ঘুরা ঘুরি করেও যখন আর হলো না। তখন আমিরুল আমার কার্ড করে দেয়ার নাম করে টাকা চাই।  নিরুপায় হয়ে আমিরুলের কাছে আমার একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য ১৫০০ একা হাজার পাঁচ শত টাকা দিই। কিন্তু আমার কার্ড কই? আজ আমার আর টাকাও ফেরত দেয়না কার্ডও দেয়না।
এতো গেলো এক রাজ্যের কথা। এবার শুনা গেল অন্য এক রাজ্যের আমিরুলের টাকা কামানো ম্যাশিংয়ের কথা। প্রেগন্যান্ট ভাতার কার্ড দেয়ার নামেও চালিয়েছেন অবাধ বানিজ্য। সোমবার বিকালে সরেজমিনে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি গোলাম রসুল কটার কাছ থেকে তার স্ত্রী রত্না জন্য ৪২০০ টাকা নিলেও মেলেনি একটি কার্ড।গোলাম রসুল কটা সাংবাদিকের জানান, আমার স্ত্রীর কার্ডের কথা বলে চার হাজার দুইশত নেয় পরে যখন আর দিতে পারলো না তখন আমি বকাঝকা করে চাপ দিলে সে ১৯০০ টাকা ফেরত দেয়। আমি আমার বাকী টাকাও ফেরত চাই।
এব্যাপার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রেগন্যান্ট ভাতার কোনও বরাদ্দ এখনো আসেনি। এব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শতকধারী সোহাগপুর গ্রামের নেতা আমিরুল আমার কাছ থেকে ১০ টাকা কেজির সরকারী চাউলের কার্ড করে দেয়ার নাম করে আমার কাছে এসে ২২০০ দুই হাজার দুই শত টাকা নেয়। আজ দুই বছর পার হলেও আমি আজও পেলাম না। আমি এই ভণ্ড প্রতারকের বিচার দাবি করছি বলে জানান সোহাগপুর উত্তর পাড়া গ্রামের দিনমুজুরী আনোয়ার হোসেন। তিনি আরও বলেন এই নেতা সাবেক চেয়ারম্যান পলাশের নাম ভাংগিয়ে আরও অনেকের কাছে থেকে অনেক টাকা নিয়েছে।
এব্যাপারে সোহাগপুর গ্রামের উম্বাদ মন্ডল এর ছেলে গ্রাম্য নেতা আমিরুলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ও ভাই আমি চেয়ারম্যান এর লোক। আপনি একটু দেখা করেন।
নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐ গ্রামের বাসিন্দা, খুলনা মেট্রো পলিটন পুলিশ সদস্য রাজু আহম্মেদ এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে গুণ্ডা বানিজ্য সম্রাট আমার চাকরী খেয়ে নেবেন বলেও হুমকী ধামকী দেয়।
এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিউলী রানী সাংবাদিকদের বলেন, এখনো পযন্ত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসিনি,লিখিত অভিযোগ পেলে কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড নিয়ে কেউ বানিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করতে কোনও টাকা লাগে না।
ট্যাগস :
আপডেট : ১০:৩১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২
২০৩ বার পড়া হয়েছে

বয়স্ক বিধবা ভাতা দেয়ার নামে আমিরুলের বানিজ্য

আপডেট : ১০:৩১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের লিডার আমিরুলের বিরুদ্ধে বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি মাতৃকালীন ভাতার কার্ড দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর এলাকার একাধিক বয়স্ক বিধবার নিকট থেকে এই অর্থ হাতিয়ে নেয়ায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।সোহাগপুর গ্রামের ফিরোজা খাতুন জানান, সে তার স্বামী মজিবার রহমানের জন্য একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডে জন্য তথা কথিত নেতা আমিরুল ৪৫০০ টাকা চাই। আমিরুল বলে টাকা ছাড়া কার্ড হয় না। টাকা দিলাম কিন্তু এখন সে টাকাও দেয় না কার্ড ও দেয় না।
আমার দুই ছেলেই স্রোবন প্রতিবন্ধি। আমার ছেলের  প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেবে বলে টাকা চাই।  দালাল আমিরুলের ক্ষপরে পড়ে আমি ৭০০০ টাকা দিয়। আজ নয় কাল নয় বলে অনেক দিন যাবৎ আমাকে ঘুরায়। কার্ড যখন আর না হলো খুব ঘুরা ঘুরি করলে ছয় হাজার টাকা ফেরত দেয় এখনো আমি এই আমিরুলের কাছে ১০০০ এক হাজার টাকা পাবো বলে জানান সোহাগপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহবধূ।
সোহাগপুর গ্রামের মৃত্যু গোলাম খাঁ চান্দা এর স্ত্রী এক হতভাগী মর্জিনা খাতুন জানান,আমার স্বামী নেই, অনেক কষ্ট করে আমার সংসার চালাই। আমার একটি ভাতার কার্ডের জন্য অনেক ঘুরা ঘুরি করেও যখন আর হলো না। তখন আমিরুল আমার কার্ড করে দেয়ার নাম করে টাকা চাই।  নিরুপায় হয়ে আমিরুলের কাছে আমার একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য ১৫০০ একা হাজার পাঁচ শত টাকা দিই। কিন্তু আমার কার্ড কই? আজ আমার আর টাকাও ফেরত দেয়না কার্ডও দেয়না।
এতো গেলো এক রাজ্যের কথা। এবার শুনা গেল অন্য এক রাজ্যের আমিরুলের টাকা কামানো ম্যাশিংয়ের কথা। প্রেগন্যান্ট ভাতার কার্ড দেয়ার নামেও চালিয়েছেন অবাধ বানিজ্য। সোমবার বিকালে সরেজমিনে এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি গোলাম রসুল কটার কাছ থেকে তার স্ত্রী রত্না জন্য ৪২০০ টাকা নিলেও মেলেনি একটি কার্ড।গোলাম রসুল কটা সাংবাদিকের জানান, আমার স্ত্রীর কার্ডের কথা বলে চার হাজার দুইশত নেয় পরে যখন আর দিতে পারলো না তখন আমি বকাঝকা করে চাপ দিলে সে ১৯০০ টাকা ফেরত দেয়। আমি আমার বাকী টাকাও ফেরত চাই।
এব্যাপার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রেগন্যান্ট ভাতার কোনও বরাদ্দ এখনো আসেনি। এব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও অভিযোগও আসেনি। যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শতকধারী সোহাগপুর গ্রামের নেতা আমিরুল আমার কাছ থেকে ১০ টাকা কেজির সরকারী চাউলের কার্ড করে দেয়ার নাম করে আমার কাছে এসে ২২০০ দুই হাজার দুই শত টাকা নেয়। আজ দুই বছর পার হলেও আমি আজও পেলাম না। আমি এই ভণ্ড প্রতারকের বিচার দাবি করছি বলে জানান সোহাগপুর উত্তর পাড়া গ্রামের দিনমুজুরী আনোয়ার হোসেন। তিনি আরও বলেন এই নেতা সাবেক চেয়ারম্যান পলাশের নাম ভাংগিয়ে আরও অনেকের কাছে থেকে অনেক টাকা নিয়েছে।
এব্যাপারে সোহাগপুর গ্রামের উম্বাদ মন্ডল এর ছেলে গ্রাম্য নেতা আমিরুলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ও ভাই আমি চেয়ারম্যান এর লোক। আপনি একটু দেখা করেন।
নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐ গ্রামের বাসিন্দা, খুলনা মেট্রো পলিটন পুলিশ সদস্য রাজু আহম্মেদ এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে গুণ্ডা বানিজ্য সম্রাট আমার চাকরী খেয়ে নেবেন বলেও হুমকী ধামকী দেয়।
এদিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিউলী রানী সাংবাদিকদের বলেন, এখনো পযন্ত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসিনি,লিখিত অভিযোগ পেলে কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড নিয়ে কেউ বানিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করতে কোনও টাকা লাগে না।