১০:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

ভেড়ামারায় মাদক ও সামাজিক অনাচার রোদকে অগ্ৰাধিকার দিয়ে কঠোরতর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন

প্রতিনিধির নাম

ভেড়ামারায় মাদক ও সামাজিক অনাচার রোদকে অগ্ৰাধিকার দিয়ে কঠোরতর অবস্থানে ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় এবং সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রাজধানী ও জেলা শহরে মাদক চোরাচালান রুট হিসেবে বিবেচিত অত্র উপজেলায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পথভ্রষ্ট, বিপথগামী মাদকসেবিদের ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ যেন হাহাকারে পরিণত হয়েছে। সর্বনাশা মাদক যুব সমাজে দারুণ অবক্ষয়ের সূচনা করেছে। সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হলেও সীমান্ত গলিয়ে হামেশাই ভারতীয় আমদানী নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে মাদকসেবি ও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে অভিনব নানা উপায়ে ।

এক সাক্ষাৎকারে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীনেশ সরকার জানিয়েছেন, তিনি ও তার প্রশাসন মাদকের ভয়াবহ থাবা থেকে এলাকাকে নিরাপদ রাখার জন্য সম্প্রতি মাদক বিরোধী ভ্রাম্যমান অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনাকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালত পুলিশ,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,, র‍্যাব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনকারী অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবিদেরকে অর্থদন্ড ও কারাদন্ড এবং ক্ষেত্র বিশেষে উভয় দন্ডেও দন্ডিত করছেন। নিম্নে পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি উপস্থাপন করা হলো।

আপনি মে’২০২১ এর ৫ তারিখে ভেড়ামারা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছেন। এই সাত মাসে উপজেলায় ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা কোনগুলো?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ সুন্দর প্রশ্নের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ইউএনও হিসেবে যোগদানের সময়কালে আপনারা জানেন, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করা করোনা’র দ্বিতীয় ঢেউ চলছিল। কুষ্টিয়া জেলার ৬ উপজেলা মারাত্মক করোনা ঝুঁকিতে ছিল এবং আক্রান্ত ও মৃতদের ঊর্দ্ধমুখী সংখ্যা ভয়াবহ পরিস্থিতির অজানা অশংকা জাগিয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে আমার যোগদানের পরের মাস ২১ শে জুন থেকে জেলাব্যাপী লক ডাউন ডাকা হয়। কঠোর লক ডাউন যথাযথভাবে পালনের দায়িত্ব পড়ে উপজেলা প্রশাসনের উপর।

একদিকে লক ডাউনের জন্য বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অন্যদিকে লক ডাউনের প্রভাবে ঘরবন্দী কর্মহীন, কাজ বন্ধ থাকা দরিদ্রদের সহায়তায় সরকারি ত্রাণ কার্য পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গ্রহন করি। ৩৩৩ এর ত্রাণ কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান করি। গাড়িতে করে প্রাপ্যদের বাড়িতে বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করি।

আমার কর্মকালে সম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে একযোগে অনুষ্ঠিত ২য় পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নিরবাচনে ভেড়ামারা উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় উক্ত নির্বাচনকে অংশগ্রহনমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে গ্রহনযোগ্য ও সর্বমহলে প্রশংসিত স্থানীয় সরকার কাঠানোর নির্বাচন আয়োজন করি। আমার কর্মকালের শুরুতে ভেড়ামারায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূণ্য ছিল। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ উক্ত পদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করি। পরবর্তীতে আগষ্ট মাসের ০৯ তারিখে রেকসোনা খাতুন নবাগত এসি ল্যান্ড হিসেবে যোগদানের পর আমি তার নিকট উক্ত দায়িত্বভার হস্তান্তর করি।চলমান শীত মৌসুমে শীতার্ত দরিদ্রদের জন্য সরকারি সহায়তার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে । একাজে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সহযোগিতায় সুষম বন্টনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার নতুন বছরের জন্য স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনার কোন বিশেষ উদ্যেগগুলো শেয়ার করা যাবে কি?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ দেখুন, সম্প্রতি এখানে স্থানীয় সরকারের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণ শপথ গ্রহন করছেন। নতুন বছরে উপজেলার ৬ ইউনিয়নেই নতুন পরিষদ গঠন হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতেই জনস্বার্থে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। তবে সম্প্রতি উপজেলার রাস্তাগুলোতে সড়ক দূর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। যা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। মানুষের আযূ ও বাড়ানোর যে লক্ষ্য আমাদের দুর্ণিবার তার সাথে সঙ্গতি রেখে সড়ক দূর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের তত্ববধানে সড়কে মোবাইল কোর্ট সক্রিয় করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট যানবাহনের ফিটনেস, ড্রাইভং লাইসেন্স, ওভার স্পীড, হেলমেট প্রভৃতি ক্ষেত্রে আইনের ব্যাত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিক আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে সচেষ্ট রয়েছেন। এই অভিযান চলমান রাখারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

উপজেলার মাঠ পর্যায়ের জেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে কিছু বলুন।

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন সজাগ রয়েছেন। এখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় গোষ্টী দ্বন্দ্বে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও এগুলোকে কোনভাবেই নির্বাচন পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে বিবেচনায় নেয়া যাবেনা। নির্বাচন পূর্বকালে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যেভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্তমানেও যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কোন ধরনে দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার শক্তি ও মনোবল আমাদের আছে।
জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার মাদক, সন্ত্রাস, সামাজিক শৃঙ্খলা এগুলোর পাশাপাশি আর কোন কোন বিষয়গুলো আপনার ভাবনা-চিন্তার মধ্যে রয়েছে?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ খুব সুন্দর প্রশ্ন করেছেন আপনি, ধন্যবাদ। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমরা এক কথায় আমাদের উপর অর্পিত সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের দিকেই মনযোগ দিয়ে আসছি। সরকার যে কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে মাঠ প্রশাসনের নিকট যে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা/কর্মচারী হিসেবে আমরা সেই সহযোগিতার জোগান দিতে সর্বদা প্রস্তুত। মাদক, সন্ত্রাস ও আইন শৃঙ্খলার পাশপাশি

সরকারি  ভূমি দখল, যৌতুক, বাল্য বিবাহ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কার তথা অনাচার রোধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ধারণা থেকে শিক্ষা এবং আইসিটি খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য উৎসাহিত করে যাচ্ছি। খেলাধুলা ও শরীরচর্চাকে উৎসাহিত ও পৃষ্ঠপোষকতা করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিন্তা চেতনার ভিত্তিতে উদার নীতি নিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছি। দরিদ্র, অসহায়, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় যেন কোন ছেদ না পড়ে সে জন্য প্রচেষ্টা নিয়েছি।

আপনার মূল্যবান সময় থেকে খানিকটা সময় এই সাক্ষাৎকার এর জন্য আমাদেরকে দেয়ায় আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে আপনার আজ ও আগামীর কর্মজীবন সফল হোক, সার্থক হোক এমন প্রত্যাশাই করি। ইউএনও দীনেশ সরকার আপনাকেও ধন্যবাদ।।

ট্যাগস :
আপডেট : ১২:২৩:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২২
২০১ বার পড়া হয়েছে

ভেড়ামারায় মাদক ও সামাজিক অনাচার রোদকে অগ্ৰাধিকার দিয়ে কঠোরতর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন

আপডেট : ১২:২৩:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২২

ভেড়ামারায় মাদক ও সামাজিক অনাচার রোদকে অগ্ৰাধিকার দিয়ে কঠোরতর অবস্থানে ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় এবং সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রাজধানী ও জেলা শহরে মাদক চোরাচালান রুট হিসেবে বিবেচিত অত্র উপজেলায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পথভ্রষ্ট, বিপথগামী মাদকসেবিদের ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ যেন হাহাকারে পরিণত হয়েছে। সর্বনাশা মাদক যুব সমাজে দারুণ অবক্ষয়ের সূচনা করেছে। সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী হলেও সীমান্ত গলিয়ে হামেশাই ভারতীয় আমদানী নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে মাদকসেবি ও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে অভিনব নানা উপায়ে ।

এক সাক্ষাৎকারে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীনেশ সরকার জানিয়েছেন, তিনি ও তার প্রশাসন মাদকের ভয়াবহ থাবা থেকে এলাকাকে নিরাপদ রাখার জন্য সম্প্রতি মাদক বিরোধী ভ্রাম্যমান অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনাকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালত পুলিশ,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,, র‍্যাব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনকারী অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবিদেরকে অর্থদন্ড ও কারাদন্ড এবং ক্ষেত্র বিশেষে উভয় দন্ডেও দন্ডিত করছেন। নিম্নে পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি উপস্থাপন করা হলো।

আপনি মে’২০২১ এর ৫ তারিখে ভেড়ামারা উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছেন। এই সাত মাসে উপজেলায় ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা কোনগুলো?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ সুন্দর প্রশ্নের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ইউএনও হিসেবে যোগদানের সময়কালে আপনারা জানেন, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করা করোনা’র দ্বিতীয় ঢেউ চলছিল। কুষ্টিয়া জেলার ৬ উপজেলা মারাত্মক করোনা ঝুঁকিতে ছিল এবং আক্রান্ত ও মৃতদের ঊর্দ্ধমুখী সংখ্যা ভয়াবহ পরিস্থিতির অজানা অশংকা জাগিয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে আমার যোগদানের পরের মাস ২১ শে জুন থেকে জেলাব্যাপী লক ডাউন ডাকা হয়। কঠোর লক ডাউন যথাযথভাবে পালনের দায়িত্ব পড়ে উপজেলা প্রশাসনের উপর।

একদিকে লক ডাউনের জন্য বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অন্যদিকে লক ডাউনের প্রভাবে ঘরবন্দী কর্মহীন, কাজ বন্ধ থাকা দরিদ্রদের সহায়তায় সরকারি ত্রাণ কার্য পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গ্রহন করি। ৩৩৩ এর ত্রাণ কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান করি। গাড়িতে করে প্রাপ্যদের বাড়িতে বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করি।

আমার কর্মকালে সম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।নভেম্বর মাসের ১১ তারিখে একযোগে অনুষ্ঠিত ২য় পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নিরবাচনে ভেড়ামারা উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় উক্ত নির্বাচনকে অংশগ্রহনমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে গ্রহনযোগ্য ও সর্বমহলে প্রশংসিত স্থানীয় সরকার কাঠানোর নির্বাচন আয়োজন করি। আমার কর্মকালের শুরুতে ভেড়ামারায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি শূণ্য ছিল। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ উক্ত পদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করি। পরবর্তীতে আগষ্ট মাসের ০৯ তারিখে রেকসোনা খাতুন নবাগত এসি ল্যান্ড হিসেবে যোগদানের পর আমি তার নিকট উক্ত দায়িত্বভার হস্তান্তর করি।চলমান শীত মৌসুমে শীতার্ত দরিদ্রদের জন্য সরকারি সহায়তার কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে । একাজে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সহযোগিতায় সুষম বন্টনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার নতুন বছরের জন্য স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনার কোন বিশেষ উদ্যেগগুলো শেয়ার করা যাবে কি?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ দেখুন, সম্প্রতি এখানে স্থানীয় সরকারের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। নির্বাচিত চেয়ারম্যানগণ শপথ গ্রহন করছেন। নতুন বছরে উপজেলার ৬ ইউনিয়নেই নতুন পরিষদ গঠন হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সবার মতামতের ভিত্তিতেই জনস্বার্থে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। তবে সম্প্রতি উপজেলার রাস্তাগুলোতে সড়ক দূর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। যা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। মানুষের আযূ ও বাড়ানোর যে লক্ষ্য আমাদের দুর্ণিবার তার সাথে সঙ্গতি রেখে সড়ক দূর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের তত্ববধানে সড়কে মোবাইল কোর্ট সক্রিয় করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট যানবাহনের ফিটনেস, ড্রাইভং লাইসেন্স, ওভার স্পীড, হেলমেট প্রভৃতি ক্ষেত্রে আইনের ব্যাত্যয় ঘটলে তাৎক্ষণিক আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে সচেষ্ট রয়েছেন। এই অভিযান চলমান রাখারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

উপজেলার মাঠ পর্যায়ের জেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে কিছু বলুন।

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন সজাগ রয়েছেন। এখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় গোষ্টী দ্বন্দ্বে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও এগুলোকে কোনভাবেই নির্বাচন পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে বিবেচনায় নেয়া যাবেনা। নির্বাচন পূর্বকালে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যেভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্তমানেও যে কোন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কোন ধরনে দাঙ্গা-হাঙ্গামা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার শক্তি ও মনোবল আমাদের আছে।
জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার মাদক, সন্ত্রাস, সামাজিক শৃঙ্খলা এগুলোর পাশাপাশি আর কোন কোন বিষয়গুলো আপনার ভাবনা-চিন্তার মধ্যে রয়েছে?

ইউএনও দীনেশ সরকারঃ খুব সুন্দর প্রশ্ন করেছেন আপনি, ধন্যবাদ। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমরা এক কথায় আমাদের উপর অর্পিত সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের দিকেই মনযোগ দিয়ে আসছি। সরকার যে কোন বিশেষ পরিস্থিতিতে মাঠ প্রশাসনের নিকট যে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা/কর্মচারী হিসেবে আমরা সেই সহযোগিতার জোগান দিতে সর্বদা প্রস্তুত। মাদক, সন্ত্রাস ও আইন শৃঙ্খলার পাশপাশি

সরকারি  ভূমি দখল, যৌতুক, বাল্য বিবাহ প্রভৃতি সামাজিক কুসংস্কার তথা অনাচার রোধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ধারণা থেকে শিক্ষা এবং আইসিটি খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য উৎসাহিত করে যাচ্ছি। খেলাধুলা ও শরীরচর্চাকে উৎসাহিত ও পৃষ্ঠপোষকতা করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিন্তা চেতনার ভিত্তিতে উদার নীতি নিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছি। দরিদ্র, অসহায়, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় যেন কোন ছেদ না পড়ে সে জন্য প্রচেষ্টা নিয়েছি।

আপনার মূল্যবান সময় থেকে খানিকটা সময় এই সাক্ষাৎকার এর জন্য আমাদেরকে দেয়ায় আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে আপনার আজ ও আগামীর কর্মজীবন সফল হোক, সার্থক হোক এমন প্রত্যাশাই করি। ইউএনও দীনেশ সরকার আপনাকেও ধন্যবাদ।।