০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

তানোরে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ দুর্নীতি 

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
ছোটখাটো চুরি হলে বলা হয় সাধারণ চুরি, তার থেকে বড় হলে হয় সিঁধেল চুরি, তার বড় হলে হয় পুকুর চুরি, তার বড় হলে হয় সাগর চুরি। কিন্ত্ত যে চুরি বা অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো মাফজোক বা কোনো সীমাপরিসীমা নাই তাকে কি ? বলা হবে ? এমন চুরি বা দূর্নীতির ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) প্রত্যন্ত পল্লী
ঝিনাইখোর গ্রামে।আর এই ঘটনা ঘটিয়েছে ইউপির আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান ওরফে হেনা। এদিকে তানোরের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ দূর্নীতির ঘটনা টক অবদ্যা তানোর-এ পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) খতিয়ান নম্বর ১৯০,
জেল নম্বর-৪৫, ঝিনাইখোর মৌজায় বিভিন্ন দাগে প্রায় ২৫ একর সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তির রেকর্ডিয় মালিক প্রয়াত লোলিত মোহন মিত্রের পুত্র ব্রজেন মোহন মিত্র ও গোপী মোহন মিত্র। তারা বর্তমানে ভারতে বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন দিন যাবত এসব জমি পরিত্যক্ত ছিল। কিন্ত্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নদী ভাঙন এলাকার ভূমিহীন মানুষ। আত্মীয়তার সূত্র ধরে এসব জমিতে বসতি গড়ে তোলে বংশপরম্পরায় বসবাস করে আসছে, যাদের সিংহভাগ আওয়ামী মতাদর্শী। স্থানীয়রা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্তিম মুহুর্তে, এই এলাকার  মানুষদের নৌকার বিপক্ষে ক্ষেপিয়ে তুলতে, তাদের উচ্ছেদের জন্য
অভিনব কৌশল অবলম্বন করে, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনা। তিনি একটি ভূমিগ্রাসী চক্রের যোগসাজশে জাল দলিল সৃষ্টি ও সেই জাল দলিল থেকে কয়েকজনের নামে জমি ক্রয় এবং জালিয়াতি করে নামজারি করেন। এখন প্রতিনিয়ত এসব ভূমিহীনদের উচ্ছেদের জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বিগত ১৯৮০ সালের ২৮ মার্চ  রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদিত ৬৬০৯ নম্বর দলিল মুলে সম্পত্তি বিক্রি করেন। চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণ গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী আসিয়া বেগম এবং রাজশাহীর পবা উপজেলার পুর্বপুঠিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের পুত্র সুমন আলী বিশ্বাস। এসব সম্পত্তি ক্রয় করেন  কামরুজ্জামান হেনা দলিল নম্বর ১৭৩৩ তারিখ ০৫/০৪/২০২৩ তানোর সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়। একই দিন দলিল রেজিষ্ট্রি হয় মুঞ্জুয়ারা পারভিন দলিল নম্বর ১৭৩৪ এবং এমদাদুল হক দলিল নম্বর ১৭৩৫।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুমন বিশ্বাসের ৬৬০৯ নম্বর দলিল জাল। প্রকৃত পক্ষে ৬৬০৯ নম্বর দলিল চারঘাট উপজেলার যোগীর গোফা এলাকার লুকমান আলী ও রমজান আলী দিগরের নামে রয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, সুমন আলী বিশ্বাস (৫০) পিতা মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাং পুর্বপুঠিয়াপাড়া, থানা পবা, জেলা রাজশাহী। এবং মারুফা (৩৫),পিতা মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাং কৃষ্ণ গোবিন্দপুর, থানা ও জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তারা তানোর উপজেলার খাড়িকুল্লাহ গ্রমের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র কামরুজ্জামান হেনা ও শাফিউল ইসলামের নেপথ্যে মদদে  জালিয়াতির মাধ্যমে নামজারি করেছে। যাহার খারিজ কেস নম্বর ৬২০৫/(IX-I)/২০২২-২৩। যাহার দলিল  নম্বর ৬৬০৯ তারিখ ২৮/০৩/১৯৮০। দলিল নম্বর ৩১২৮২ তারিখ ২৭/১২/১৯৮৭।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ১৯৮৭ সালে ৩১২৮২ নম্বর (রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদন) ভুয়া দলিল সৃষ্টি করেন ভূমিগ্রাসী সুমন।
অথচ, রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে উক্ত বছরে এই পরিমান দলিল সম্পাদনই হয়নি। অন্যদিকে বিগত ১৯৮০ সালের ২৮ মার্চ ৬৬০৯ নম্বর দলিল (রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদন) দেখিয়ে সম্পত্তির মালিকানা দাবিদার। রাজশাহীর পবা উপজেলার পুর্বপুঠিয়া পাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র সুমন আলী বিশ্বাস। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভলিউম বইয়ে এই দলিলের কোনো অস্থিত্ব নাই এটিও ভূয়া দলিল। এদিকে রাস্ট্রপক্ষের হয়ে হোসেন বাচ্চু এসব নামজারি বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভুমি) কাছে আবেদন করেছেন।অন্যদিকে সাবেক ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান রহমান বাদি হয়ে জাল দলিল সৃষ্টিকারী ভূমিগ্রাসী সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা করেছেন। যা আদালতে চলমান রয়েছে। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কামরুজ্জামান হেনার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে মুন্ডুমালা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) রাবিউল ইসলাম বলেন, তাদের লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে। আবেদন পেলে তদন্ত সাপেক্ষে  নামজারি বাতিল করা হবে।#
তানোর প্রতিনিধি
তা ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মো ০১৭১১-৪১৭৪৬৬
ট্যাগস :
আপডেট : ১২:২১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
৯২ বার পড়া হয়েছে

তানোরে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ দুর্নীতি 

আপডেট : ১২:২১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ছোটখাটো চুরি হলে বলা হয় সাধারণ চুরি, তার থেকে বড় হলে হয় সিঁধেল চুরি, তার বড় হলে হয় পুকুর চুরি, তার বড় হলে হয় সাগর চুরি। কিন্ত্ত যে চুরি বা অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো মাফজোক বা কোনো সীমাপরিসীমা নাই তাকে কি ? বলা হবে ? এমন চুরি বা দূর্নীতির ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) প্রত্যন্ত পল্লী
ঝিনাইখোর গ্রামে।আর এই ঘটনা ঘটিয়েছে ইউপির আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান ওরফে হেনা। এদিকে তানোরের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ দূর্নীতির ঘটনা টক অবদ্যা তানোর-এ পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) খতিয়ান নম্বর ১৯০,
জেল নম্বর-৪৫, ঝিনাইখোর মৌজায় বিভিন্ন দাগে প্রায় ২৫ একর সম্পত্তি রয়েছে। এসব সম্পত্তির রেকর্ডিয় মালিক প্রয়াত লোলিত মোহন মিত্রের পুত্র ব্রজেন মোহন মিত্র ও গোপী মোহন মিত্র। তারা বর্তমানে ভারতে বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন দিন যাবত এসব জমি পরিত্যক্ত ছিল। কিন্ত্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নদী ভাঙন এলাকার ভূমিহীন মানুষ। আত্মীয়তার সূত্র ধরে এসব জমিতে বসতি গড়ে তোলে বংশপরম্পরায় বসবাস করে আসছে, যাদের সিংহভাগ আওয়ামী মতাদর্শী। স্থানীয়রা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্তিম মুহুর্তে, এই এলাকার  মানুষদের নৌকার বিপক্ষে ক্ষেপিয়ে তুলতে, তাদের উচ্ছেদের জন্য
অভিনব কৌশল অবলম্বন করে, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান হেনা। তিনি একটি ভূমিগ্রাসী চক্রের যোগসাজশে জাল দলিল সৃষ্টি ও সেই জাল দলিল থেকে কয়েকজনের নামে জমি ক্রয় এবং জালিয়াতি করে নামজারি করেন। এখন প্রতিনিয়ত এসব ভূমিহীনদের উচ্ছেদের জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বিগত ১৯৮০ সালের ২৮ মার্চ  রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদিত ৬৬০৯ নম্বর দলিল মুলে সম্পত্তি বিক্রি করেন। চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণ গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী আসিয়া বেগম এবং রাজশাহীর পবা উপজেলার পুর্বপুঠিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাসের পুত্র সুমন আলী বিশ্বাস। এসব সম্পত্তি ক্রয় করেন  কামরুজ্জামান হেনা দলিল নম্বর ১৭৩৩ তারিখ ০৫/০৪/২০২৩ তানোর সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়। একই দিন দলিল রেজিষ্ট্রি হয় মুঞ্জুয়ারা পারভিন দলিল নম্বর ১৭৩৪ এবং এমদাদুল হক দলিল নম্বর ১৭৩৫।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুমন বিশ্বাসের ৬৬০৯ নম্বর দলিল জাল। প্রকৃত পক্ষে ৬৬০৯ নম্বর দলিল চারঘাট উপজেলার যোগীর গোফা এলাকার লুকমান আলী ও রমজান আলী দিগরের নামে রয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, সুমন আলী বিশ্বাস (৫০) পিতা মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাং পুর্বপুঠিয়াপাড়া, থানা পবা, জেলা রাজশাহী। এবং মারুফা (৩৫),পিতা মৃত মফিজ উদ্দিন বিশ্বাস, সাং কৃষ্ণ গোবিন্দপুর, থানা ও জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তারা তানোর উপজেলার খাড়িকুল্লাহ গ্রমের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র কামরুজ্জামান হেনা ও শাফিউল ইসলামের নেপথ্যে মদদে  জালিয়াতির মাধ্যমে নামজারি করেছে। যাহার খারিজ কেস নম্বর ৬২০৫/(IX-I)/২০২২-২৩। যাহার দলিল  নম্বর ৬৬০৯ তারিখ ২৮/০৩/১৯৮০। দলিল নম্বর ৩১২৮২ তারিখ ২৭/১২/১৯৮৭।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ১৯৮৭ সালে ৩১২৮২ নম্বর (রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদন) ভুয়া দলিল সৃষ্টি করেন ভূমিগ্রাসী সুমন।
অথচ, রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে উক্ত বছরে এই পরিমান দলিল সম্পাদনই হয়নি। অন্যদিকে বিগত ১৯৮০ সালের ২৮ মার্চ ৬৬০৯ নম্বর দলিল (রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সম্পাদন) দেখিয়ে সম্পত্তির মালিকানা দাবিদার। রাজশাহীর পবা উপজেলার পুর্বপুঠিয়া পাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র সুমন আলী বিশ্বাস। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভলিউম বইয়ে এই দলিলের কোনো অস্থিত্ব নাই এটিও ভূয়া দলিল। এদিকে রাস্ট্রপক্ষের হয়ে হোসেন বাচ্চু এসব নামজারি বাতিলের দাবিতে জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভুমি) কাছে আবেদন করেছেন।অন্যদিকে সাবেক ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান রহমান বাদি হয়ে জাল দলিল সৃষ্টিকারী ভূমিগ্রাসী সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা করেছেন। যা আদালতে চলমান রয়েছে। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কামরুজ্জামান হেনার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে মুন্ডুমালা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) রাবিউল ইসলাম বলেন, তাদের লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে। আবেদন পেলে তদন্ত সাপেক্ষে  নামজারি বাতিল করা হবে।#
তানোর প্রতিনিধি
তা ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মো ০১৭১১-৪১৭৪৬৬