০৩:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

ভালোই খেলেছে নেপাল

ড. সাঈদুর রহমানের

ভারত-নেপাল ম্যাচে ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে নেপালের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে শুরু করেছিল, সেটা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা নেপালের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। অন্য কোন দল হলে রোহিত শর্মা এই সিদ্ধান্তটা হয়তোবা নিতেন না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় ভারতীয় বোলাররা একটি বল‌ও করার সুযোগ পাননি। তাই দুর্বল নেপালের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মা তার বোলারদেরকে বোলিং প্রাকটিসের সুযোগ দেবার জন্য হয়তো প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তাছাড়া ম্যাচে বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় আগে নেপালকে অল্প রানে অলআউট করে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত খেলা শেষ করার লক্ষেও রোহিত শর্মার আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত খুবই যৌক্তিক। এমনকি ম্যাচের দৈর্ঘ্য যখন কমে আসে তখন পরে ব্যাট করা দল অনেক বেশি হিসেবী ব্যাটিং করার সুযোগ পায়।

প্রথম উইকেট জুটিতে নেপাল ৯.৫ ওভারে ৬৫ রান করেছিল। নেপাল কেন, ভারতের বিরুদ্ধে পৃথিবীর যে কোনো দল প্রথম উইকেট জুটিতে এই রান করতে পারলে নিঃসন্দেহে খুশি থাকতো। নেপালের দুই ওপেনার কুশাল ভুরটেল এবং আসিফ শেখ চমৎকার ব্যাটিং করলেন। কুশাল ভুরটেল ২৫ বলে ৩৮ রানের একটা ইনিংস খেললেন। এটাকে আপনি কী বলবেন? আবার আসিফ শেখ আউট হওয়ার আগে ৫৮ রান করলেন। নেপাল হয়তো ভারত বা পাকিস্তানের মতো দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতার মতো জায়গায় এখনো আসেনি। তবে এই ধরনের ছোট ছোট অর্জনগুলো কিন্তু তাদের জন্য অনেক বড় কিছু। আইসিসি এই ছোট দলগুলোকে যত বেশি সুযোগ তৈরি করে দেবে, আগামীতে নিঃসন্দেহে তারা অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য যোগ্য হয়ে উঠবে।

আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শ্রীলংকা খেলবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। শ্রীলংকা-আফগানিস্তান ম্যাচে শ্রীলংকা যদি জয়লাভ করে তাহলে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশ চলে যাবে সুপার ফোরে। তবে আফগানিস্তান যদি জয়লাভ করে তখন শ্রীলংকা, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান – এই তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। তখন আসবে নেট রানরেটের প্রশ্ন।
বি গ্রুপে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান। নেট রানরেটে শ্রীলংকা সবার উপরে। বাংলাদেশের কাছে ৮৯ রানে হেরে আফগানিস্তানের নেট রানরেটের অবস্থা খারাপ। শ্রীলংকার নেট রানরেট +০.৯৫১, বাংলাদেশের নেট রানরেট +০.৩৭৩ এবং আফগানিস্তানের নেট রানরেট -১.৭৮০।

শ্রীলঙ্কা তাদের সর্বশেষ ১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে টানা জয়লাভ করেছে। পক্ষান্তরে আফগানিস্তান তাদের সর্বশেষ পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সব ক’টিতে পরাজিত হয়েছে। আজ আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শেষ হচ্ছে গ্রুপ পর্বের খেলা। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তান যদি হেরে যায়, তাহলে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে আফগানিস্তানকে শুধু জিতলেই হবে না, বরং বড় ব্যবধানে হারাতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। তা নাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার সমান পয়েন্ট হলেও বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকার মধ্যে কোন একটি দলের নেট রানরেটকে‌ও তারা অতিক্রম করতে পারবে না। আফগানিস্তান সাহসী ক্রিকেট খেলে। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলেছিল, শ্রীলঙ্কা নিশ্চয়ই সেখান থেকে শিক্ষা নেবে। শ্রীলংকা এশিয়া কাপের আগে আসন্ন বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলে এসেছে। এটা মানসিকভাবে তাদের খারাপ লাগলেও তাদের কিন্তু অনেকগুলো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। তারই নিদর্শন আমরা দেখেছিলাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে। হয়তোবা সেই কারণেই প্রথম সারির চারজন খেলোয়াড়কে বাইরে রেখেও বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়েছিল তারা। লাহোরে বৃষ্টির সম্ভবনা খুব একটা নেই। প্রচন্ড গরমে যে দল টসে জিতবে তাদের আগে ব্যাটিং করার সম্ভাবনাই বেশি।  এবং ম্যাচ জিততে গেলে ৩০০ বা তার কাছাকাছি স্কোর না করলে, ম্যাচ জেতা কঠিন হতে পারে।

এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রান করেছেন বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ ম্যাচে তার রান ১৯৩ । নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মেহেদী হাসান মিরাজ সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই লিটন দাস সুস্থ হয়ে দলের সাথে যোগ দেবার জন্য পাকিস্তান রওনা হয়েছেন। আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশ সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ খেলবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের চোখ এখন সেই ম্যাচের দিকে।

ট্যাগস :
আপডেট : ০৮:০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
৮৩ বার পড়া হয়েছে

ভালোই খেলেছে নেপাল

আপডেট : ০৮:০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভারত-নেপাল ম্যাচে ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে নেপালের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে শুরু করেছিল, সেটা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা নেপালের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। অন্য কোন দল হলে রোহিত শর্মা এই সিদ্ধান্তটা হয়তোবা নিতেন না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় ভারতীয় বোলাররা একটি বল‌ও করার সুযোগ পাননি। তাই দুর্বল নেপালের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মা তার বোলারদেরকে বোলিং প্রাকটিসের সুযোগ দেবার জন্য হয়তো প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তাছাড়া ম্যাচে বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় আগে নেপালকে অল্প রানে অলআউট করে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত খেলা শেষ করার লক্ষেও রোহিত শর্মার আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত খুবই যৌক্তিক। এমনকি ম্যাচের দৈর্ঘ্য যখন কমে আসে তখন পরে ব্যাট করা দল অনেক বেশি হিসেবী ব্যাটিং করার সুযোগ পায়।

প্রথম উইকেট জুটিতে নেপাল ৯.৫ ওভারে ৬৫ রান করেছিল। নেপাল কেন, ভারতের বিরুদ্ধে পৃথিবীর যে কোনো দল প্রথম উইকেট জুটিতে এই রান করতে পারলে নিঃসন্দেহে খুশি থাকতো। নেপালের দুই ওপেনার কুশাল ভুরটেল এবং আসিফ শেখ চমৎকার ব্যাটিং করলেন। কুশাল ভুরটেল ২৫ বলে ৩৮ রানের একটা ইনিংস খেললেন। এটাকে আপনি কী বলবেন? আবার আসিফ শেখ আউট হওয়ার আগে ৫৮ রান করলেন। নেপাল হয়তো ভারত বা পাকিস্তানের মতো দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতার মতো জায়গায় এখনো আসেনি। তবে এই ধরনের ছোট ছোট অর্জনগুলো কিন্তু তাদের জন্য অনেক বড় কিছু। আইসিসি এই ছোট দলগুলোকে যত বেশি সুযোগ তৈরি করে দেবে, আগামীতে নিঃসন্দেহে তারা অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য যোগ্য হয়ে উঠবে।

আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শ্রীলংকা খেলবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। শ্রীলংকা-আফগানিস্তান ম্যাচে শ্রীলংকা যদি জয়লাভ করে তাহলে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশ চলে যাবে সুপার ফোরে। তবে আফগানিস্তান যদি জয়লাভ করে তখন শ্রীলংকা, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান – এই তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। তখন আসবে নেট রানরেটের প্রশ্ন।
বি গ্রুপে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান। নেট রানরেটে শ্রীলংকা সবার উপরে। বাংলাদেশের কাছে ৮৯ রানে হেরে আফগানিস্তানের নেট রানরেটের অবস্থা খারাপ। শ্রীলংকার নেট রানরেট +০.৯৫১, বাংলাদেশের নেট রানরেট +০.৩৭৩ এবং আফগানিস্তানের নেট রানরেট -১.৭৮০।

শ্রীলঙ্কা তাদের সর্বশেষ ১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে টানা জয়লাভ করেছে। পক্ষান্তরে আফগানিস্তান তাদের সর্বশেষ পাঁচটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সব ক’টিতে পরাজিত হয়েছে। আজ আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শেষ হচ্ছে গ্রুপ পর্বের খেলা। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তান যদি হেরে যায়, তাহলে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে আফগানিস্তানকে শুধু জিতলেই হবে না, বরং বড় ব্যবধানে হারাতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। তা নাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার সমান পয়েন্ট হলেও বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকার মধ্যে কোন একটি দলের নেট রানরেটকে‌ও তারা অতিক্রম করতে পারবে না। আফগানিস্তান সাহসী ক্রিকেট খেলে। কিন্তু বাংলাদেশ যেভাবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ক্যালকুলেটিভ ক্রিকেট খেলেছিল, শ্রীলঙ্কা নিশ্চয়ই সেখান থেকে শিক্ষা নেবে। শ্রীলংকা এশিয়া কাপের আগে আসন্ন বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলে এসেছে। এটা মানসিকভাবে তাদের খারাপ লাগলেও তাদের কিন্তু অনেকগুলো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল। তারই নিদর্শন আমরা দেখেছিলাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে। হয়তোবা সেই কারণেই প্রথম সারির চারজন খেলোয়াড়কে বাইরে রেখেও বাংলাদেশকে সহজেই হারিয়েছিল তারা। লাহোরে বৃষ্টির সম্ভবনা খুব একটা নেই। প্রচন্ড গরমে যে দল টসে জিতবে তাদের আগে ব্যাটিং করার সম্ভাবনাই বেশি।  এবং ম্যাচ জিততে গেলে ৩০০ বা তার কাছাকাছি স্কোর না করলে, ম্যাচ জেতা কঠিন হতে পারে।

এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রান করেছেন বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ ম্যাচে তার রান ১৯৩ । নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মেহেদী হাসান মিরাজ সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই লিটন দাস সুস্থ হয়ে দলের সাথে যোগ দেবার জন্য পাকিস্তান রওনা হয়েছেন। আগামীকাল বুধবার বাংলাদেশ সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ খেলবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের চোখ এখন সেই ম্যাচের দিকে।