০৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে সিলেটের জারা লেবু বিদেশে রপ্তানি, স্বাবলম্বী কৃষক

প্রতিনিধির নাম
আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সিলেটের জারা লেবুর কদর এখন দেশে-বিদেশে। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় জারা লেবু চাষ করে প্রায় তিন শতাধিক কৃষক পরিবার এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। শুধু তাই নয় এলাকার উৎপাদিত জারা লেবু দেশের বাজার ছেড়ে এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। যার ফলে বদলে যাচ্ছে কৃষকদের ভাগ্যের চাকা। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলের চেয়ে জারা লেবুর চাষ লাভবান হওয়ায় জারা লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষক পরিবার। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকা ভূমি ও টিলা শ্রেণি হওয়াতে লেবু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার চিকনাগুল, হরিপুর, জৈন্তাপুর বাজার, ফতেহপুর বাজার জারা লেবুর জন্য সিলেটের মানুষের কাছে পরিচিত। এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা জারা লেবু ক্রয় করতে আসে। উন্নত প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের বাহিরে লন্ডন, আমেরিকা, সিংঙ্গাপুর, কাতার, সৌদি আরব, কুয়েত, আরব আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে।
সরেজমিনে দুটি উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের গৌরী, থুবাং, বালিদাঁড়া, ভিত্রিখেল উত্তর, লামাপাড়া থুবাং, ফতেপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর, হরিপুর, বাগেরখাল, শিকারখাঁ, উৎলারপার, চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর, পানিছড়া, ঠাকুরের মাটি, নিজপাট ইউনিয়নের কালিঞ্জিবাড়ি, হর্নি ও গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর, বানিগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় টিলা শ্রেণির ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে জারা লেবু চাষ হচ্ছে। অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় এবং বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় জারা লেবু চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক পরিবার গুলো। এই অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক অন্যান্য ফসলের চাষ বাদ দিয়ে অধিক মুনাফার আশায় জারা লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকার অধিকাংশ জনগণ অন্য কোনো পেশা না থাকায় জারা লেবু চাষে দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফলে এলাকার বেকারত্ব দূর হচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে গ্রামের সাধারণ লোকজন। এক সময় প্রচুর জমি বছরের পর বছর অনাবাদী থাকতো এখন এসব জমির কদর অন্য সব জমির চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। জারা লেবুর কলম করা চারা রোপণের ২ বছর পর হতে ফলন আসতে শুরু হয় এবং গাছগুলো ৫ বছরের অধিক সময় ফলন পাওয়া যায়। জারা লেবুর বৈশিষ্ট্য হলো খুব স্বাদ ও টক জাতীয় ফল। লেবু দেখতে অনেকটা কুমড়ার মতো। লেবুর রস তেমন না থাকলেও তা খেতে খুবই সু-স্বাদু।
জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের গৌরী গ্রামের কৃষক মো. রিমাল আহমেদ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, জারা লেবু চাষের জন্য আমাদের এলাকাটি খুব উপযোগী। আমাদের পূর্ব পুরুষরা জারা লেবু চাষ করেছেন শুধু নিজ পরিবারের জন্য, আমরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে শুরু করেছি।
বাগেরখাল গ্রামের কৃষক মো. মঈন উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমি লেবু চাষ করে আসছি। বর্তমানে আমি সরকারিভাবে সার ও কীটনাশক পেয়েছি। আমরা যদি আরো ভালো জাতের চারা ও প্রশিক্ষণ পেতাম তাহলে লেবুর উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি হতো। প্রতিদিন আমার বাগানে ৬ জন শ্রমিক পরিচর্যার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন। চলতি মৌসুমে বাগান হতে মুনাফা আসতে শুরু হয়েছে। সরকার যদি আমাদের মতো প্রকৃত কৃষকদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও রোগ প্রতিরোধের জন্য উন্নতমানের কীটনাশক এবং উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করলে উপকৃত হতে পারতাম ও জারা লেবু বিদেশের বাজারে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারতাম।
লেবু চাষ সর্ম্পকে জৈন্তাপুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাবেল খলিল চৌধুরী প্রতিবেদককে জানান, এলাকার প্রকৃত কৃষকদের মাধ্যমে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের আওতায় আমাদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ও টেকনোলজিক্যাল সাপোর্টে বিভিন্ন আয়তনের শতাধিক বাগান করানো হয়েছে। এছাড়া বাগান পরিচর্যায় কৃষি বিভাগ ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ বিতরণ ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ চলমান আছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা  এ বি এম খায়রুল আলম প্রতিবেদককে বলেন, লেবু ও লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণের জন্য উন্নতমানের চারা, সার ও কীটনাশক সহ বাণিজ্যিকভাবে বাগান করার জন্য যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার প্রতিবেদককে বলেন, জৈন্তাপুরের মাটি ও আবহাওয়া সাইট্রাস জাতীয় ফলের জন্য উপযোগী। উঁচু নিচু টিলা শ্রেণির জন্য বৃষ্টির পানি সহজেই গাছের গুড়ায় জমে থাকে না। এ জন্য জৈন্তাপুর সাইট্রাস ও লেবু জাতীয় ফসল কম খরচে বেশি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ‌তাছাড়া লেবু জাতীয় ফস‌লের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃ‌দ্ধিকরণ প্রক‌ল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ছোট বড় ৩৯০ টি লেবু জাতীয় ফস‌লের বাগান দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। জৈন্তাপুর উপ‌জেলার ১৯৩‌ হেক্টর জ‌মি লেবু জাতীয় ফসল আবা‌দের আওতায় এ‌সে‌ছে। এই উপজেলায় লেবু জাতীয় ফসল আবা‌দের সু‌যোগ থাকায় কৃ‌ষি সম্প্রসারণ অ‌ধিদপ্তর, জৈন্তাপুর, সিলেট লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসার‌ণে কাজ কর‌ছে এবং নিয়‌মিত কৃষক‌দের পরামর্শ দি‌য়ে যা‌চ্ছে।
ট্যাগস :
আপডেট : ০৩:৩৩:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩
২০৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে সিলেটের জারা লেবু বিদেশে রপ্তানি, স্বাবলম্বী কৃষক

আপডেট : ০৩:৩৩:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩
আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সিলেটের জারা লেবুর কদর এখন দেশে-বিদেশে। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় জারা লেবু চাষ করে প্রায় তিন শতাধিক কৃষক পরিবার এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। শুধু তাই নয় এলাকার উৎপাদিত জারা লেবু দেশের বাজার ছেড়ে এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। যার ফলে বদলে যাচ্ছে কৃষকদের ভাগ্যের চাকা। পাশাপাশি অন্যান্য ফসলের চেয়ে জারা লেবুর চাষ লাভবান হওয়ায় জারা লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছে কৃষক পরিবার। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকা ভূমি ও টিলা শ্রেণি হওয়াতে লেবু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার চিকনাগুল, হরিপুর, জৈন্তাপুর বাজার, ফতেহপুর বাজার জারা লেবুর জন্য সিলেটের মানুষের কাছে পরিচিত। এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা জারা লেবু ক্রয় করতে আসে। উন্নত প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের বাহিরে লন্ডন, আমেরিকা, সিংঙ্গাপুর, কাতার, সৌদি আরব, কুয়েত, আরব আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে।
সরেজমিনে দুটি উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের গৌরী, থুবাং, বালিদাঁড়া, ভিত্রিখেল উত্তর, লামাপাড়া থুবাং, ফতেপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর, হরিপুর, বাগেরখাল, শিকারখাঁ, উৎলারপার, চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুর, পানিছড়া, ঠাকুরের মাটি, নিজপাট ইউনিয়নের কালিঞ্জিবাড়ি, হর্নি ও গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর, বানিগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় টিলা শ্রেণির ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে জারা লেবু চাষ হচ্ছে। অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় এবং বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় জারা লেবু চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে কৃষক পরিবার গুলো। এই অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক অন্যান্য ফসলের চাষ বাদ দিয়ে অধিক মুনাফার আশায় জারা লেবু চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকার অধিকাংশ জনগণ অন্য কোনো পেশা না থাকায় জারা লেবু চাষে দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফলে এলাকার বেকারত্ব দূর হচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে গ্রামের সাধারণ লোকজন। এক সময় প্রচুর জমি বছরের পর বছর অনাবাদী থাকতো এখন এসব জমির কদর অন্য সব জমির চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। জারা লেবুর কলম করা চারা রোপণের ২ বছর পর হতে ফলন আসতে শুরু হয় এবং গাছগুলো ৫ বছরের অধিক সময় ফলন পাওয়া যায়। জারা লেবুর বৈশিষ্ট্য হলো খুব স্বাদ ও টক জাতীয় ফল। লেবু দেখতে অনেকটা কুমড়ার মতো। লেবুর রস তেমন না থাকলেও তা খেতে খুবই সু-স্বাদু।
জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের গৌরী গ্রামের কৃষক মো. রিমাল আহমেদ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, জারা লেবু চাষের জন্য আমাদের এলাকাটি খুব উপযোগী। আমাদের পূর্ব পুরুষরা জারা লেবু চাষ করেছেন শুধু নিজ পরিবারের জন্য, আমরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে শুরু করেছি।
বাগেরখাল গ্রামের কৃষক মো. মঈন উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমি লেবু চাষ করে আসছি। বর্তমানে আমি সরকারিভাবে সার ও কীটনাশক পেয়েছি। আমরা যদি আরো ভালো জাতের চারা ও প্রশিক্ষণ পেতাম তাহলে লেবুর উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি হতো। প্রতিদিন আমার বাগানে ৬ জন শ্রমিক পরিচর্যার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন। চলতি মৌসুমে বাগান হতে মুনাফা আসতে শুরু হয়েছে। সরকার যদি আমাদের মতো প্রকৃত কৃষকদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও রোগ প্রতিরোধের জন্য উন্নতমানের কীটনাশক এবং উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করলে উপকৃত হতে পারতাম ও জারা লেবু বিদেশের বাজারে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারতাম।
লেবু চাষ সর্ম্পকে জৈন্তাপুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাবেল খলিল চৌধুরী প্রতিবেদককে জানান, এলাকার প্রকৃত কৃষকদের মাধ্যমে লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের ২০২২-২৩ অর্থ বছরের আওতায় আমাদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ও টেকনোলজিক্যাল সাপোর্টে বিভিন্ন আয়তনের শতাধিক বাগান করানো হয়েছে। এছাড়া বাগান পরিচর্যায় কৃষি বিভাগ ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ বিতরণ ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণ চলমান আছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা  এ বি এম খায়রুল আলম প্রতিবেদককে বলেন, লেবু ও লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণের জন্য উন্নতমানের চারা, সার ও কীটনাশক সহ বাণিজ্যিকভাবে বাগান করার জন্য যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার প্রতিবেদককে বলেন, জৈন্তাপুরের মাটি ও আবহাওয়া সাইট্রাস জাতীয় ফলের জন্য উপযোগী। উঁচু নিচু টিলা শ্রেণির জন্য বৃষ্টির পানি সহজেই গাছের গুড়ায় জমে থাকে না। এ জন্য জৈন্তাপুর সাইট্রাস ও লেবু জাতীয় ফসল কম খরচে বেশি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ‌তাছাড়া লেবু জাতীয় ফস‌লের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃ‌দ্ধিকরণ প্রক‌ল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ছোট বড় ৩৯০ টি লেবু জাতীয় ফস‌লের বাগান দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। জৈন্তাপুর উপ‌জেলার ১৯৩‌ হেক্টর জ‌মি লেবু জাতীয় ফসল আবা‌দের আওতায় এ‌সে‌ছে। এই উপজেলায় লেবু জাতীয় ফসল আবা‌দের সু‌যোগ থাকায় কৃ‌ষি সম্প্রসারণ অ‌ধিদপ্তর, জৈন্তাপুর, সিলেট লেবু জাতীয় ফসল সম্প্রসার‌ণে কাজ কর‌ছে এবং নিয়‌মিত কৃষক‌দের পরামর্শ দি‌য়ে যা‌চ্ছে।