০৫:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজ্ঞপ্তি

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিহত পুলিশ সদস্যর দাফন সম্পন্ন মাহবুব আলম রাসেল মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা :

প্রতিনিধির নাম
রাজধানীর দৈনিক বাংলার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা জানাজার নামাজ শেষে তার লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার(২৯ অক্টোবর) মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার সরকারি প্রমেদা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ মাগরিব তার জানাজার নামাজ শেষ হয়। পরে উপজেলা সদর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
রবিবার বিকেলে তার মরদেহ বাংলাদেশ ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের লাশবাহী গাড়িতে দৌলতপুর উপজেলা সদরের প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনা হয়।
 সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।   উপস্থিত প্রায় সবার চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত। পারভেজের একমাত্র  শিশু মেয়ে তানহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন বাবার কফিনে।  তার বিশ্বাস তার বাবা ফিরে আসবে।   তার জন্য চকোলেট কিনে দিবে।  নিহত পারভেঝের পিতা তার ছেলের নিথর মুখটি দেখার সাথে সাথে
বুকে ধরে কান্নায় ভেঙে পরেন।   মাটিতে গড়াগড়ি খেতে খেতে তার মা প্রলাপ
বলছে আমার বুকের ধন আইনা দাও।২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে রাজধানীর ফকিরাপুল
চার রাস্তার মোড়ে হামলার শিকার হয়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ
(৩৩) নিহত হয়েছেন। ১৯৯০ সালে ১০ মে চরকাটারী গ্রামে জন্ম নেওয়া আমিরুল
স্থানীয় চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ২০১১ সালের
১৫ আগস্ট পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। পারভেজ ডিএমপির কাউন্টার
টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে কনস্টেবল পদে
কর্মরত ছিলেন।  চলতি বছরের ৩ আগস্ট থেকে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের
(ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন (সিটিআই–৩) ইউনিটে কর্মরত ছিলেন।
বাড়িতে শোকের মাতম, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।  রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনকালে বিএনপির কর্মীদের হামলায়
একমাত্র উপার্জনকারী নিহত হওয়ায় তার পরিবারের দিকে প্রধানমন্ত্রীর দৃস্টি কামনা করেছেন নিহতের পরিবার স্থানীয়রা। সেই সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তাঁরা।
মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মোল্লার বড় ছেলে নিহত পুলিশ সদস্য পারভেজের
বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের বোটঘর গ্রামে। ৮ মাস
আগে নদী ভাঙনের কবলে পরে তারা পাশ্ববর্তী নাগরপুর উপজেলার ফয়েজপুর গ্রামে
ভাড়া বাসায় থাকছেন। তারা সপরিবারে এখনো মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার
বাসিন্দা এবং ভোটার।  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম রাজা।
সরজমিন দেখা যায়, সংঘর্ষে নিহতের খবর পেয়ে আদি বাড়ি দৌলতপুরে ও ভাড়া বাসা
ফয়েজপুর গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহত পারভেজের বৃদ্ধ বাবা বীর
মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী মোল্লা কান্নায় ভে‌ঙ্গে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।  বৃদ্ধা মা রহিমা খাতুনের চোখের অশ্রু যেন বাঁধ মানছে না।
পরিবার ও, স্বজন ও এলাকাবাসীর কান্নার রোলে আকাশ বাতাস ভারী হ‌য়ে আস‌ছিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী মোল্লার দুই ছেলে পারভেজ ও বিপ্লব এবং বড় মেয়ে শেফালি বেগম। দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়ে ওঠেন পারভেজ। ২০১২ সালে পারিবারিকভাবে মানিকগঞ্জের সিংগাইর এলাকার রুমা আক্তারের সঙ্গে পারভেজের বিয়ে হয়। ঘর আলো করে একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। নাম রাখা হয় তানহা ইসলাম। বর্তমানে তার বয়স ছয় বছর। পারভেজের বড় বোনের বিয়ে হয় অনেক আগেই, তবে ছোট ভাই বিপ্লব বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তেমন কোনো কাজকর্ম করতে
পারেন না। ফলে পুরো সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন পারভেজ।
পারভেজের মৃত্যুর সংবাদটি শোনার পর থেকেই বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা
সেকেন্দার আলী বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন।
পারভেজের বড় বোন শেফালি বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা।  আমার ভাই
পারভেজ দেশের পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। পুরো
পরিবারটি পারভেজের ওপর নির্ভর ছিল। এখন কীভাবে চলবে আমাদের এই পরিবার।
আমার ছোট্ট ভাতিজি তানহা অল্প বয়সে এতিম হয়ে গেলো। আমার ভাইয়ের খুনিদের
ফাঁসি চাই।
প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, পারভেজ  সব সময় সম্মান দিয়ে কথা বলেছেন।
ছুটিতে বাড়িতে এলে সবার খোঁজ-খবর নিতেন তিনি।
চরকাটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, নিহত পারভেজ এলাকার
একজন শান্তশিষ্ট ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। পারভেজ নিহত হওয়ার খবরে
খুব মর্মাহত হয়েছি।
দায়িত্ব পালনকা‌লে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজের মৃত্যু মানতে পারছেন না ছোট ভাই আজিজুল হক বিপ্লব।
তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তি দাবী করেন।
মানিকগঞ্জ -১ আসনের এমপি নাঈমুর রহমান দূর্জয় বলেন, আন্দোলনের নামে মানুষকে পিটিয়ে মারতে হবে, এ কেমন আন্দোলন। ধিক্কার জানাই এই জঘণ্য ঘটনার। এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান
তিনি।   নিহতের পরিবারকে যথাসাধ্য সহায়তা করা হবে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, পুলিশ সদস্য
পারভেজের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় জানাজা হয়।
এরপর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মরদেহ তার জন্মস্থান দৌলতপুরে জানাযা নামাজের পর উপজেলার কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।  পারভেজ ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।   তাই তার পরিবারের প্রতি পুলিশ পাশে থাকবে।
রোববার বিকেলে তার মরদেহ দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনা হয়।   এসময় সেখানে বিভিন্ন শ্রেনী পেশা ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করেন।   এরপর তার মরদেহে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার প্রদান করেন
একদল পুলিশ।
মাগরিবের নামাজের পর তার জানাযায় মানুষের ঢল নামে। এরপর দৌলতপুর উপজেলা
কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।   বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন
এতে অংশ নেন।
এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি নাঈমুর রহমান  দূর্জয়,
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগ
সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, জেলা প্রশাসক রেহেনা
আক্তার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম রাজা, শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান  রেজাউর রহমান
খান, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিকুর রহমান চৌধুরী, শিবালয়
সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা নাজনীন, দৌলতপুর থানার ওসি
শফিকুল ইসলাম, ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান প্রমুখ।
ট্যাগস :
আপডেট : ০৮:৪৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
৬৯ বার পড়া হয়েছে

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিহত পুলিশ সদস্যর দাফন সম্পন্ন মাহবুব আলম রাসেল মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা :

আপডেট : ০৮:৪৫:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীর দৈনিক বাংলার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা জানাজার নামাজ শেষে তার লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার(২৯ অক্টোবর) মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার সরকারি প্রমেদা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ মাগরিব তার জানাজার নামাজ শেষ হয়। পরে উপজেলা সদর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
রবিবার বিকেলে তার মরদেহ বাংলাদেশ ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের লাশবাহী গাড়িতে দৌলতপুর উপজেলা সদরের প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনা হয়।
 সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।   উপস্থিত প্রায় সবার চোখ ছিল অশ্রুসিক্ত। পারভেজের একমাত্র  শিশু মেয়ে তানহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন বাবার কফিনে।  তার বিশ্বাস তার বাবা ফিরে আসবে।   তার জন্য চকোলেট কিনে দিবে।  নিহত পারভেঝের পিতা তার ছেলের নিথর মুখটি দেখার সাথে সাথে
বুকে ধরে কান্নায় ভেঙে পরেন।   মাটিতে গড়াগড়ি খেতে খেতে তার মা প্রলাপ
বলছে আমার বুকের ধন আইনা দাও।২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে রাজধানীর ফকিরাপুল
চার রাস্তার মোড়ে হামলার শিকার হয়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ
(৩৩) নিহত হয়েছেন। ১৯৯০ সালে ১০ মে চরকাটারী গ্রামে জন্ম নেওয়া আমিরুল
স্থানীয় চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ২০১১ সালের
১৫ আগস্ট পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। পারভেজ ডিএমপির কাউন্টার
টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে কনস্টেবল পদে
কর্মরত ছিলেন।  চলতি বছরের ৩ আগস্ট থেকে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের
(ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন (সিটিআই–৩) ইউনিটে কর্মরত ছিলেন।
বাড়িতে শোকের মাতম, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।  রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনকালে বিএনপির কর্মীদের হামলায়
একমাত্র উপার্জনকারী নিহত হওয়ায় তার পরিবারের দিকে প্রধানমন্ত্রীর দৃস্টি কামনা করেছেন নিহতের পরিবার স্থানীয়রা। সেই সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তাঁরা।
মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মোল্লার বড় ছেলে নিহত পুলিশ সদস্য পারভেজের
বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের বোটঘর গ্রামে। ৮ মাস
আগে নদী ভাঙনের কবলে পরে তারা পাশ্ববর্তী নাগরপুর উপজেলার ফয়েজপুর গ্রামে
ভাড়া বাসায় থাকছেন। তারা সপরিবারে এখনো মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার
বাসিন্দা এবং ভোটার।  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম রাজা।
সরজমিন দেখা যায়, সংঘর্ষে নিহতের খবর পেয়ে আদি বাড়ি দৌলতপুরে ও ভাড়া বাসা
ফয়েজপুর গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহত পারভেজের বৃদ্ধ বাবা বীর
মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী মোল্লা কান্নায় ভে‌ঙ্গে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।  বৃদ্ধা মা রহিমা খাতুনের চোখের অশ্রু যেন বাঁধ মানছে না।
পরিবার ও, স্বজন ও এলাকাবাসীর কান্নার রোলে আকাশ বাতাস ভারী হ‌য়ে আস‌ছিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী মোল্লার দুই ছেলে পারভেজ ও বিপ্লব এবং বড় মেয়ে শেফালি বেগম। দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়ে ওঠেন পারভেজ। ২০১২ সালে পারিবারিকভাবে মানিকগঞ্জের সিংগাইর এলাকার রুমা আক্তারের সঙ্গে পারভেজের বিয়ে হয়। ঘর আলো করে একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। নাম রাখা হয় তানহা ইসলাম। বর্তমানে তার বয়স ছয় বছর। পারভেজের বড় বোনের বিয়ে হয় অনেক আগেই, তবে ছোট ভাই বিপ্লব বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তেমন কোনো কাজকর্ম করতে
পারেন না। ফলে পুরো সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন পারভেজ।
পারভেজের মৃত্যুর সংবাদটি শোনার পর থেকেই বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা
সেকেন্দার আলী বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন।
পারভেজের বড় বোন শেফালি বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা।  আমার ভাই
পারভেজ দেশের পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। পুরো
পরিবারটি পারভেজের ওপর নির্ভর ছিল। এখন কীভাবে চলবে আমাদের এই পরিবার।
আমার ছোট্ট ভাতিজি তানহা অল্প বয়সে এতিম হয়ে গেলো। আমার ভাইয়ের খুনিদের
ফাঁসি চাই।
প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, পারভেজ  সব সময় সম্মান দিয়ে কথা বলেছেন।
ছুটিতে বাড়িতে এলে সবার খোঁজ-খবর নিতেন তিনি।
চরকাটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী বলেন, নিহত পারভেজ এলাকার
একজন শান্তশিষ্ট ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। পারভেজ নিহত হওয়ার খবরে
খুব মর্মাহত হয়েছি।
দায়িত্ব পালনকা‌লে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজের মৃত্যু মানতে পারছেন না ছোট ভাই আজিজুল হক বিপ্লব।
তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার ও শাস্তি দাবী করেন।
মানিকগঞ্জ -১ আসনের এমপি নাঈমুর রহমান দূর্জয় বলেন, আন্দোলনের নামে মানুষকে পিটিয়ে মারতে হবে, এ কেমন আন্দোলন। ধিক্কার জানাই এই জঘণ্য ঘটনার। এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান
তিনি।   নিহতের পরিবারকে যথাসাধ্য সহায়তা করা হবে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, পুলিশ সদস্য
পারভেজের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় জানাজা হয়।
এরপর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মরদেহ তার জন্মস্থান দৌলতপুরে জানাযা নামাজের পর উপজেলার কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।  পারভেজ ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।   তাই তার পরিবারের প্রতি পুলিশ পাশে থাকবে।
রোববার বিকেলে তার মরদেহ দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনা হয়।   এসময় সেখানে বিভিন্ন শ্রেনী পেশা ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করেন।   এরপর তার মরদেহে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার প্রদান করেন
একদল পুলিশ।
মাগরিবের নামাজের পর তার জানাযায় মানুষের ঢল নামে। এরপর দৌলতপুর উপজেলা
কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।   বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন
এতে অংশ নেন।
এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের এমপি নাঈমুর রহমান  দূর্জয়,
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগ
সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, জেলা প্রশাসক রেহেনা
আক্তার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ
চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম রাজা, শিবালয় উপজেলা চেয়ারম্যান  রেজাউর রহমান
খান, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিকুর রহমান চৌধুরী, শিবালয়
সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা নাজনীন, দৌলতপুর থানার ওসি
শফিকুল ইসলাম, ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান প্রমুখ।